রাগ সংবরণ হল মুমিনের বিশেষ বৈশিষ্ট্য
আল্লাহ তায়ালা মানুষের মধ্যে নানা রকম স্বভাবের বিবরণ দিয়েছেন । যেমন- অভিমান , ক্রোধ, দুঃখ, ভালোবাসা, ভয়, ইত্যাদি। তারই মধ্যে রয়েছে এক ভয়ঙ্কর স্বভাব তা হল রাগ। যা সবসময় শয়তানের কাছ থেকে আসা এক যড়যন্ত্র না চক্রান্ত যা মানুষকে এক অন্য পথের দিকে ধাবিত করে। তাই তা থেকে দূরে থাকা অত্যান্ত প্রয়োজনীয়। মুসলমান হওয়া কোন বড় ব্যাপার না। কিন্তু মুসলমান হয়ে এক সত্যিকারের মুমিন হওয়া সেটাই সর্বউত্তম ও উঁচু মর্জাদার জায়গা।কিন্তু এটা প্রশ্ন হতে পারে যে মুমিন কিভাবে হওয়া যায়?তা অবশ্য হওয়া উচিত। তার উত্তর এটা বলা যেতে পারে যে মুমিন হওয়ার জন্য অনেক কিছু গুনাবলীকে নিজের মধ্যে আনতে বা অর্জন করতে হয়। তারই মধ্যে এক উত্তম গুণাবলী হল রাগ সংবরণ। এবং তার বিপক্ষে কিছু মন্দ স্বভাব গুলিকে ত্যাগ করতে হয়। আবু হুরাইরা রাঃ থেকে বর্ণিত রাসুল সাঃ ইরশাদ করেছেন যে- “প্রকৃত বলবান সে নই, যে কুস্তিতে কাউকে ধরাশায়ী করে। আসল বীর পুরুষ তো সেই ব্যাক্তি যে ক্রোধের সময় নিজেকে সংবরণ করতে পারে।” (সহিহ বুখারি)
ক্রোধের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রন করা কোন সহজ ব্যাপার না।কারণ মানুষ রাগের সময় জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়ে। ক্রোধ মানুষের মানবীয় মূলবোধকে ধ্বংস করে দেয়। এমনকি মানুষের ইমানকে নষ্ট করে দেয়। যেমন হাদিশ শরিফে এসেছে “ক্রোধ মানুষের ইমানকে এমন ভাবে নষ্ট করে দেয় , যেমন ভাবে পিপুল গাছের রস মধুকে নষ্ট করে দেয়। ” মানুষ রাগকে নিয়ন্ত্রণ করে অক্ষম হওয়ার কারনে বড় বড় অন্যায় করে বসে।এমনকি কখন হত্যা করতেও দ্বিধাবোধ করে না। এই জন্য রাসুল সাঃ রাগ করতে নিষেধ করেছেন। আবু হুরাইরা রাঃ থেকে বর্ণিত- একদা জৈনিক ব্যাক্তি নবী সাঃ এর কাছে আরজ করলেন। হে আল্লাহর রাসুল সাঃ আমাকে কিছু উপদেশ দিন। বললেন, তুমি রাগ করবে না। লোকটি কয়েকবার একই কথা জিজ্ঞেস করলেন, তিনি সাঃ প্রতে্যকবার একই উত্তর দিলেন, তুমি রাগ করবে না।“ (সহিহ বুখারি)
এই মর্মে পবিত্র কুরানে ইরশাদ হয়েছে- “যারা তাদের রাগ দমন করে, মানুষকে ক্ষমা করে , আল্লাহ তায়ালা এই ধরনের সৎকর্মশীলদের অত্যান্ত ভালোবাসেন।”(সুরা আল- ইমরান, আয়াত-১৩৪)।
রাগ দমন কিভাবে করা যায় যে ব্যাপারে হাদিসে আছে, হুজুর সাঃ ইরশাদ করেছেন – “ কেউ দাড়ানো অবস্থায় রেগে গেলে সে যেন বসে যায়। তারপরও যদি রাগ না যায় তাহলে সে যেন শুয়ে পড়ে।“ (সুনানে আবু দাউদ) রাসুল সাঃ আরো বলেছেন- “ রেগে গেলে চুপ হয়ে যাও”। (মুসনাদে আহমাদ) এছাড়াও রাগ দমনে ওজুও একটি উত্তম কাজ। পরিপূর্ণ মুমিনের গুণাবলি অর্জন করতে হলে রাগের মত মন্দ স্বভাব পরিহার করতে হবে। আর এটা অত্যান্ত প্রয়োজনীয়।