অঙ্গ দান সম্পর্কে মালয়েশিয়ার ফতোয়া
জীবন রক্ষার প্রেক্ষাপটে অঙ্গ দান একটি জটিল বিষয়, বিশেষ করে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে
দেখতে গেলে। ইসলামেধর্মে জীবন সংরক্ষণ মাকাসিদু শারিয়াতে একটি অত্যন্ত মূল্যবান নিতি, যা
ইসলামিক আইনের উদ্দেশ্য যা জীবন, ধর্ম, বুদ্ধি, সন্তান এবং সম্পত্তির সুরক্ষাকে
অন্তর্ভুক্ত করে। সাস্টেনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলস (SDG) বা টেকসয় উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার
সাথে সঙ্গতি রেখে, অঙ্গ দান একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অঙ্গদানে SDG –এর
উপাদানগুলির মধ্যে রয়েছে SDG 3, সুস্বাস্থ্য এবং মঙ্গল। অঙ্গ দান সহজ সুলভ স্বাস্থ্যসেবা
পরিষেবার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেয়, যার মধ্যে অঙ্গ দান প্রাপকদের স্বাস্থ্য এবং
তাদের জীবনের মানকে উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত করে। এই প্রেক্ষাপটে, অঙ্গ দানকে মাকাসিদু
শারিয়ার একটি সুনির্দিষ্ট বাস্তবায়ন এবং এসডিজি অর্জনে একটি অবদান হিসেবে দেখা যেতে
পারে। এই নিবন্ধটি ইসলামে অঙ্গ দান সম্পর্কিত ফতোয়া এবং ধর্মীয় বিধানগুলি অন্বেষণ করবে
এবং কীভাবে এই পদক্ষেপটিকে মাকাসিদু শারিয়া পূরণ করার উপায় হিসেবে দেখা যেতে পারে এবং
SDG লক্ষ্য 3 –এর অর্জনকে সমর্থন করে।
দেখতে গেলে। ইসলামেধর্মে জীবন সংরক্ষণ মাকাসিদু শারিয়াতে একটি অত্যন্ত মূল্যবান নিতি, যা
ইসলামিক আইনের উদ্দেশ্য যা জীবন, ধর্ম, বুদ্ধি, সন্তান এবং সম্পত্তির সুরক্ষাকে
অন্তর্ভুক্ত করে। সাস্টেনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলস (SDG) বা টেকসয় উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার
সাথে সঙ্গতি রেখে, অঙ্গ দান একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অঙ্গদানে SDG –এর
উপাদানগুলির মধ্যে রয়েছে SDG 3, সুস্বাস্থ্য এবং মঙ্গল। অঙ্গ দান সহজ সুলভ স্বাস্থ্যসেবা
পরিষেবার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেয়, যার মধ্যে অঙ্গ দান প্রাপকদের স্বাস্থ্য এবং
তাদের জীবনের মানকে উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত করে। এই প্রেক্ষাপটে, অঙ্গ দানকে মাকাসিদু
শারিয়ার একটি সুনির্দিষ্ট বাস্তবায়ন এবং এসডিজি অর্জনে একটি অবদান হিসেবে দেখা যেতে
পারে। এই নিবন্ধটি ইসলামে অঙ্গ দান সম্পর্কিত ফতোয়া এবং ধর্মীয় বিধানগুলি অন্বেষণ করবে
এবং কীভাবে এই পদক্ষেপটিকে মাকাসিদু শারিয়া পূরণ করার উপায় হিসেবে দেখা যেতে পারে এবং
SDG লক্ষ্য 3 –এর অর্জনকে সমর্থন করে।
অঙ্গ দানের সাধারণ ধারণা:
সাধারণত, অঙ্গ দান হল একটি অস্ত্রোপচার পদ্ধতি যার মধ্যে দাতা থেকে একটি অঙ্গ
প্রাপকের শরীরে স্থানান্তর করা হয়। সাধারণভাবে, যে অঙ্গগুলি দান করা যেতে পারে তা হল
কিডনি, হার্ট, লিভার, ফুস্ফুস এবং অগ্ন্যাশয়। যে টিস্যুগুলি দান করা যেতে পারে তা হল চোখ,
হাড়, ত্বক এবং হার্টের ভাল্ভ। অন্যান্য অঙ্গ যেমন হৃৎপিণ্ড, ফুস্ফুস, অগ্ন্যাশয় এবং
অন্ত্র, তবে দাতাকে মৃত ঘোষণা করার পরেই দান করা যেতে পারে যেহেতু এই গুরুত্বপূর্ণ
অঙ্গগুলি ছাড়া কেউ বেঁচে থাকতে পারে না।
একজন দাতার শরীর থেকে অঙ্গ এবং টিস্যু পাওয়ার প্রক্রিয়াটি তখনই সম্পন্ন করা হবে যখন
দুইজন চিকিৎসক দাতার মৃত্যু নিশ্চিত করেছেন। সাধারণভাবে, দুই ধরনের অঙ্গ দান হয়, যথা
মৃত্যুর পর অঙ্গ দান এবং জীবিত অবস্থায় অঙ্গ দান।
মাকাসিদু শারিয়া এবং অঙ্গ দান:
ইসলামে, “হিফজু নাফস” শব্দটি একজনের স্বাস্থ্য এবং জীবনের যত্ন নেওয়াকে বোঝায়। এই
বাক্যাংশটি আরবি শব্দ “হিফজ” এবং “আল-নাফস” এর সংমিশ্রণ, যার অর্থ “যত্ন করা” এবং
“আত্মা”। হিফজু নাফসের অধীনে ইসলামী আইনী পণ্ডিতরা মাকাসিদু শারিয়া এবং একটি জীবন
বাঁচানোর প্রয়োজনীয়তার ভিত্তিতে ইসলামে অঙ্গ দান এবং প্রতিস্থাপনের বৈধতা প্রতিষ্ঠা
করেছেন। এই প্রেক্ষাপটে, অঙ্গ দানকে এমন একটি পদক্ষেপ হিসাবে দেখা যেতে পারে যা
মাকাসিদু শারিয়াকে সমর্থন করে জীবন বাঁচানোর এবং অভাবগ্রস্ত ব্যাক্তিদের জীবনযাত্রার
মান উন্নত করার সুযোগ প্রদান করে। এছাড়াও, অঙ্গ দান তাআউন (একে অপরকে সাহায্য করা)
–এর নীতিগুলিকেও প্রতিফলিত করে যা কুরআনের নিম্নলিখিত আয়াতের মধ্যে নির্দেশিত করা
হয়েছে।
“তোমরা কল্যান ও ন্যায়ের কাজে একে অপরের সহযোগিতা কর এবং পাপ ও সীমালঙ্ঘনে
সহযোগিতা করো না।“ (সুরা মায়িদাহ, ২৭)।
অঙ্গ দান সংক্রান্ত ফতোয়া ও ধর্মীয় বিধান:
অঙ্গ দান ইসলামের চিন্তাধারার মধ্যে একটি বিতর্কিত বিষয়, যার ফলে এর ক্ষমতা এবং
সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে মতের পার্থক্য রয়েছে। তবে কোরান ও হাদিসে অঙ্গ দান এবং টিস্যু
প্রতিস্থাপনের বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট বিধান নেই, তবে ইজতিহাদের ভিত্তিতে জারি করা সাধারণ
বিধান ও নিয়ম রয়েছে। কিছু মাযহাবের মত, যেমন ইমাম নববী এবং হাম্বালী মাযহাবের পন্ডিত
যেমন ইবনে কুদামার মত শাফি মাযহাবের অল্প সংখ্যক পন্ডিত দ্বারা প্রচলিত, তারা সকলেই
নিশ্চিত করেছেন যে মৃতের অঙ্গ প্রতঙ্গ জীবিতদের মধ্যে স্থানান্তরিত করা প্রাপককে বেঁচে
থাকতে সাহায্য করার লক্ষ্যে এটি অনুমোদিত। তবে এটি মৃত্যুর আগে দাতার সম্পূর্ণ সম্মতি সহ
অতিরিক্ত কঠোর শর্ত স্থাপন করে। মতামতের এই পার্থক্যটি বিভিন্ন মাযহাবের মধ্যে আইন
এবং নৈতিক নীতির ব্যাখ্যার সাথে সম্পর্কিত। এছাড়াও, মালয়েশিয়ার ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর ইসলামিক রিলিজিয়াস অ্যাফেয়ার্স অফ মালয়েশিয়ার ফতোয়া কমিটি অঙ্গদানের বিষয়ে ফতোয়া জারি করেছে। এই ফতোয়ায় তারা বলেছে, কিছু শর্তে ইসলামে অঙ্গ দান করা জায়েজ। ফতোয়াটি মৃত্যুর আগে দাতা বা তাঁর পরিবারের পূর্ণ সম্মতির গুরুত্বের পাশাপাশি দাতার শরীরের অখণ্ডতা এবং অঙ্গ বরাদ্দের ক্ষেত্রে ন্যায্যাতা
বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেয়। এই মালয়েশিয়ান ফতোয়াটি জীবন বাঁচাতে এবং
জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে অঙ্গদানের গুরুত্বকে স্বীকার করে, সেইসাথে মালয়েশিয়ার
মুসলমানদের অঙ্গদানের সমস্যার সাথে মোকাবিলার নির্দেশনা প্রদান করে।
উপসংহার:
জীবন সংরক্ষণের প্রেক্ষাপটে অঙ্গ দান ইসলামে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং ফতোয়া ও
ধর্মীয় মূল্যায়নের মাধ্যামে এটিকে অনেক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। মালয়েশিয়ার ফতোয়ায় বলা
হয়েছে, কিছু শর্তে ইসলামে অঙ্গ দান করা জায়েজ। এই ফতোয়াগুলি অঙ্গদানের সাথে সম্পর্কিত
গ্রহণযোগ্যতা এবং সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে মুসলমানদের নির্দেশিকা প্রদান করে, তবে এর
ক্ষমতা এবং প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত শর্তগুলির বিষয়ে চিন্তাধারার মধ্যে মতভেদ রয়েছে। তা
সত্ত্বেও, অঙ্গ দান হল একটি জনহিতকর কাজ যা জীবনের মান উন্নত করতে পারে এবং অঙ্গ
প্রাপকদের দ্বিতীয় সুযোগ দিতে পারে। SDG –এর নীতিগুলি অনুসরণ করে, অঙ্গ দান একটি
উন্নত, স্বাস্থ্যকর এবং আরও টেকসয় বিশ্ব তৈরিতে অবদান রাখতে পারে। ইসলামের দৃষ্টিতে,
অঙ্গ দান ধর্মের মূল লক্ষ্য অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।