ইসলামে চুল রং করার গুরুত্ব ও তাৎপর্য

বর্তমানে মানুষ নিজেদের রুপ পরিবর্তন করতে মগ্ন হতে চলেছে। তারা নিজেদেরকে আধুনিক যুগের সঙ্গে মিলিত করছে। কিন্তু ইসলাম একটি বিধান ও নিয়ম দ্বারা গঠিত। ইসলামের নিয়মনীতিকে শরিয়ত বলে।

চুল রং করা সৌন্দর্য হওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে অন্যতম। নানারকম রং যেমন লাল, হলুদ, সবুজ ইত্যাদি ব্যবহার করে, মাথার চুলের প্রকৃতি পরিবর্তন করা হয়।

বর্তমানে এই প্রক্রিয়ার ব্যবহার

বর্তমান সময়ে দেখা যাচ্ছে প্রায় সকল শ্রেণীর মানুষ এই খারাপ বাঁধনে বাঁধা পড়ছে। বিভিন্ন রংয়ের মাধ্যমে তারা নিজেকে বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করছে।

ইসলাম  সবসময়  সুবিধার সাপেক্ষ যেমন  হাদীসে বর্ণিত:

 عن أَبِي هرير النَّبيّ ﷺ قَالَ: إِنَّ الدِّينَ يُسْرٌ، ولنْ يشادَّ الدِّينُ (روا البخاري)

ইসলাম সদা শান্তি ও সুবিধার সাপেক্ষ।  তাই এই হাদিশটির অনুযায়ি ইসলাম চুল রং করতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে অনুমতি দিয়েছে:  1.বৃদ্ধ বয়সে চুল রং করা (যদি চুল  সম্পূর্ণ সাদা হতে পরিবর্তন হয়ে যায়)।

তবু তার মধ্যে আবার তিনটি শর্ত রয়েছে

  1. চুল রং করার সময় কালো রং, কালো পালিশ অর্থাৎ এমন জিনিস যার দ্বারা সাদা চুল একেবারেই লুকিয়ে যায়, সেগুলো ব্যবহার করা যাবেনা।
  2. রংয়ের মধ্যে কোনো ক্ষতকারক কেমিক্যাল ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
  3. চুল রং করার সময় যেন কোন কাফের বা ইহুদি ও খ্রিস্টানদের মতো না হয়।

প্রথমত: চুলে কালো রং দেওয়া

ইসলাম কালো রং দ্বারা চুল রং করা থেকে বিরত থাকার আদেশ দিয়েছেন কারণ এর ফলে আল্লাহর দেওয়া সাদা চুল সম্পূর্ণ লুপ্ত হয়ে যায়। প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সাঃ) কালো রং থেকে বিরত থাকার জন্য কঠিন আদেশ দিয়েছেন। হাদীসে বর্ণিত আছে রাসুল (সাঃ) বলেন: শেষ যুগে এমন এক শ্রেণির লোক হবে, যারা পায়রার ছাতির মতো কালো কলপ ব্যবহার করবে, তারা জান্নাতের সুগন্ধও পাবে না। (আবু দাউদ: ৪২১২)

দ্বিতীয়: রংয়ের মধ্যে কোন রকমের রাসায়নিক পদার্থ থাকা

বর্তমান যুগ রাসায়নিক যুগও বলা যেতে পারে। কারণ অধিকাংশ জিনিসেই কেমিক্যাল ব্যবহার করা হচ্ছে, তাই ইসলাম এই সব রং হইতে বিরত থাকার উপদেশ দিয়েছে যেগুলো আমাদের স্বাস্থ্যের প্রতি ক্ষতিকারক।

তৃতীয়: চুল রং করার সময় কোন কাফের বা ইহুদি খ্রিস্টানদের মতো স্টাইল করা

ইসলাম হল একটি শান্তিপূর্ণ ধর্ম এবং এক  নিয়ম ও বিধান দ্বারা গঠিত। অতএব ইসলাম কাফের বা ইহুদি ও খ্রিস্টানদের মতো হইতে বিরত থাকার উপদেশ দিয়েছে যেমন হাদীসে বর্ণিত আছে যে তোমরা কাফেরদের সাদৃশ্যতা করোনা।

অতএব আমরা বুঝতে পারি যে ইসলাম চুল রং করার প্রতি কি রুপ অনুমতি দিয়েছে। যেহেতু বর্তমানে মানুষ চুল রং করে নিজেকে যুবক হিসেবে প্রকাশ করছে, এবং আল্লাহর সৃষ্টিকে গোপন করা হচ্ছে। কিন্তু ইসলাম অন্য রং দ্বারা চুল রং করার ক্ষেত্রে কোন দাবি করে নাই।

ইসলাম পুরুষ ও মহিলাদের প্রতি সমান অধিকার নিশ্চিত করে। যেমন হাদীসে বর্ণিত আছে যে, চুলে রং করার হুকুম রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর একটি হাদীস অনুসারে, "যার চুল আছে সে যেন চুলকে সম্মান করে।" আবু দাউদ বর্ণনা করেছেন। অন্যান্য হাদীস এটিকে নিশ্চিত করেছে এবং তাদের মধ্যে কেউ কেউ এটিকে সত্য বলেছে।

চুলকে সম্মান করার অনেক উপায় আছে। যেমন চিরুনি দেওয়া, তেল লাগানো, সাদা চুল আড়াল করার জন্য এটি রঙ করা।

চুল কালো রং করার বিষয়ে আলেমগণ কথা রেখেছেন এবং তাদের অনেকেই এটাকে নিষেধ করেছেন, তবে তাদের প্রমাণ শুধুমাত্র পুরুষদের সাথে সম্পর্কিত বা এমন একজন বৃদ্ধ মহিলার সাথে প্রতারণার ক্ষেত্রে যিনি যুবতী দেখাতে চান যাতে তিনি আকর্ষণীয় দেখাতে পারেন। বিয়ের জন্য যে বিবাহিত মহিলা তার স্বামীকে জানতে দেয়, তাহলে তার এবং তার স্বামীকে খুশি করার জন্য চুলে রং করাতে তাদের কোন ক্ষতি নেই। আসলে ইবনে আল জাওযী পুরুষদের জন্য এটিকে অনুমতি দিয়েছেন। নিষেধ সম্পর্কে যা বলা হয়েছে তা ছিল প্রলোভনের উপর ভিত্তি করে। 

Related Posts

Leave A Comment

Voting Poll

Get Newsletter