জুল-হিজ্জা মাসের ফজীলত ও তার ইতিহাস
ইলামিক মাসের মধ্যে দেখতে গেলে এই জুল-হিজ্জা হচ্ছে ইসলামের সর্ব শেস মাস, এই মাসে আল্লাহ তাআলা তার প্রিয় বন্ধু হযরত ইব্রাহীম আলাইহি ওয়াসাল্লামকে একটি পরীক্ষার মাধ্যমে যাচাই করেন, কারণ হচ্ছে যে তিনি প্রভু কে কতটা ভালোবাসেন। বিশেষ করে এই মাসে সকল আলিম ব্যাক্তি কুরবানীর ফজীলত নিয়ে আলোচনা করেন। এই পবিত্র মাসের ৯ তারিখে সকল মুসলমান হজ আদায় করে, আর আল্লাহ তাআলার কাছে প্রার্থনা করে। এই মাসের ১০ তারিখে সকল মুসলমান ব্যাক্তি আল্লাহ তাআলার পথে গোরু, উঠ, ছাগল, দুমবা, জবাই করে নিজের অন্তর থেকে আল্লাহ তাআলার জন্য ভালোবাসা প্রকাশ করে ,কারণ হচ্ছে যে এই জুল হিজ্জা মাসে হযরত ইব্রাহীম আলাইহি ওয়াসাল্লামকে স্বপ্ন দেখানো হয় যে তাঁর প্রিয় জিনিসকে আল্লাহর উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করে। তার পর তিনি তাঁর প্রিয় সন্তান হযরত ইসমাইল আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিয়ে আল্লাহ তাআলার পথে কুরবানী করার জন্য মিনা পাহাড়ের দিকে যান। সে সময় হযরত ইব্রাহিম আলাইহী ওয়াসাল্লম প্রিয় সন্তান হযরত ইসমাইল আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলেন যে: হে আমার প্রিয় সন্তান আমি তোমাকে আল্লাহ তাআলার পথে কোরবানি করার জন্য নিয়ে যাচ্ছি। তখন ইসমাইল আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: আল্লাহ তাআলা যা আদেশ দিয়েছেন আপনি পূরণ করেন আর আমাকে আপনি ধোর্যকারীদের মধ্যে পাবেন।
তার পর যখন হযরত ইব্রাহীম আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ সন্তানকে আল্লাহ তাআলার পথে কোরবানি করতে শুরু করেন সে সময় হযরত জিব্রাইল আলাইহি ওয়াসাল্লাম জান্নাত থেকে একটা দুম্ববা নিয়ে এসে হযরত ইসমাইল আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জায়গায় রেখে দেন, আর হযরত ইব্রাহীম আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেই দুম্বাটিকে জবাই করে ফেলেন। সেই সময় থেকে কুরবানী করা হচ্ছে হযরত ইসমাইল আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আল্লাহ তাআলার প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ মুস্তাফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত। আর এই সুন্নাতকে বেশির ভাগ মুসলমান ব্যাক্তি আদায় করে থাকেন।
জুল-হিজ্জা মাসে রোজা রাখার ফজীলত:
আলেমগণ বলেন যে মানুষ জুল-হিজ্জা মাসের প্রথম ৯ দিন রোজা রাখলো তার জন্য আল্লাহ তাআলা ১০ টি পুরুস্কার রেখেছেন তা হল:
১) রোজাকারীর বয়সে বরকত
২) রোজাকারীর সম্পদে বৃদ্ধি
৩) রোজাকারীর পরিবারকে প্রত্যেকটি মুসিবত থেকে রক্ষা
৪) রোজাকারীকে মাগফিরাত প্রদান
৫) তাঁর নেকী বাড়িয়ে দেওয়া
৬) তাঁর মৃত্যু সহজ করে দেয়
৭) তাঁর কবরকে উজ্জলিত করে দেয়
৮) তাঁর নেকীর পাল্লাকে ভারী করে দেয়
৯) জাহান্নাম থেকে রক্ষা করে
১০) উচ্চ মর্যাদা প্রদান করে।
হাদীস:
হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস থেকে বর্ণিত যে আল্লাহ তাআলার প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ মুস্তাফা সাল্লালাহু আলাইহি ও়াসাল্লাম বলেছেন: যে মানুষ জুল-হিজ্জা মাসের প্রথম ১০ দিনে নেক আমল করল তার এই দশ দিনের নেক আমল প্রত্যেকটি মাসে আমল করার থেকে উত্তম হবে।
হযরত সুফিয়ান সুরি আলাইহি ওয়া রহমাতুল্লাহ থেকে বর্ণিত রয়েচে যে তিনি জুল-হিজ্জার রাতে বাস্রা শহরের মুসলমানের কবরস্তান ধরে যাওয়ার পথে একটি কবরে নূর দেখতে পান। সে সময় তিনি ভাবলেন যে এই কবরে নূর কোথায় থেকে আসছে? তার পর সেই কবর থেকে একটি আওয়াজ শুনতে পান যে হে সুফয়ান সুরি তুমি যদি জুল-হিজ্জা মাসের প্রথম ১০টি রোজা রাখো তাহলে তোমার কবরেও নুর হবে।