পবিত্র মাহে রমযান
স্বগতম মাহে রমযান স্বগতম! তোমার প্রতি সালাম ও কল্যাণ হোক।আমরা তোমার অপেক্ষায় রয়েছি।
সবে মাত্র মুদে এসেছে শবে বারাতের আলো। বাড়ি বাড়ি ছিল কোরআনের কন্ঠস্বুর। প্রত্যেকে ছিল রুটি ও মাংসে ব্যস্ততা ও মুখরতা। মুখে মুখে কথা ফুটেছে মাহে রমযানের, নানারকম মুখমন্ডলে নানারকম কথা। কিন্তু কথা ফুটেছে সকলের মুখে। অনেক আগে থেকেই মুঅ’মিন বান্দারা প্রত্যেক নামযের শেষে দু’আ করে আসছে যে, ‘আল্লাহুম্মা বাল্লিগনা রামযান’ হে প্রভু আমাদেরকে রমযানের রোযা পৌছে দিও।
রমযান মাসের প্রথম দশ দিন রহমতের নিমিত্তে, দ্বিতীয় দশ দিন গুনাহ মোচনের নিমিত্তে এবং বাকি দিনগুলি জাহান্নাম থেকে রক্ষার নিমিত্তে। এই মাস আসার সাথে সাথে বেহেস্তের দরজা খুলে দেওয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়, শইতানকে তার দলবলসহ বন্দী করে দেওয়া হ্য়।
আল্লাহর নিকটে সকল মাস থেকে উত্তম মাস হচ্ছে মাহে রমযান। যেমন ইয়াকুবের(আঃ) নিকটবর্তি স মস্ত ছেলের মধ্যে উত্তম ছেলে ছিল য়ুসুফ(আঃ) ঠিক তেমনি রমযান মাস হচ্ছে আল্লাহর নিকটে উত্তম মাস।
এই রমযান মাসে একটি এমন রাত রয়েছে যেই রাত হাজার রাতের অপেক্ষা বেশি ভালো। সেই রাতটির নাম হচ্ছে ‘লাইলাতুল কাদর’। এই রাতে আল্লাহ তাআ’লা কোরআন-ইসলাম ধর্মের গ্রন্থি-কে অবতীর্ণ করেন। এই গ্রন্থিটি(অর্থ্যাৎঃ আলকোরআন) সকল গ্রন্থি থেকে উত্তম।
রোযা কার প্রতি ফরযঃ
* মুকীম (অভ্রমনকারী)
* শরীরস্বাসথক।
* পাক মহিলা।
রোযা ভঙ্গকারী বিষয়বস্তুঃ
* যেনে বুঝে কিছু খাওয়া বা পান করা।
* স্ত্রীর সঙ্গে মিলন করা।
* যদি বৃষ্টির জল মুখে যায় সেটাকে খেয়ে নেওয়া।
* শর্শার দানা খেয়ে নেওয়া।
* একটু লবণ খেয়ে নেওয়া।
* যদি এরকম মাটি খেয়ে থাকে, যেটা সকলের অভ্যাস।
রোযা ভঙ্গ না হওয়ার বিষয়বস্তুঃ
*ভুল করে খাওয়া।
*ভুল করে পানি পান করা।
*ভুল করে সহবাস করা।
*হিজামা করা।
* ইফতারের নিয়ত করে, কিছু না খাওয়া।
*অকারনে গলায় ধুলো চলে যাওয়া।
* অকারনে গলায় ধুঁয়ো চলে যাওয়া, ইত্যাদি।
রোযার ফযিলতঃ
হাদিসে কুদসিতে মুহাম্মাদ (সাঃ) বর্নণা করেছেন যে, আল্লাহ তাআ’লা বলেছেনঃ প্রত্যেক কার্যের ফলে দশ থেকে সাত শতগুণ পর্যন্ত নেকী প্রদান করে থাকি। কিন্তু রোযা আমারই উদ্দেশ্যে রাখা হয় তার জন্য আমি এর প্রতিদান স্বয়ং নিজেই দিবো। বলা হয়েছে যে, যদি কোনো বান্দা রমযানের রোযা রাখে তখন আমাদের প্রভু আল্লাহ তা’আলার আরশের নিম্ন অবস্থান থেকে কমল বাতাস বইতে আরম্ভ করে। এসমস্ত ঘটনা দেখে জান্নাতি হুরেরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করবে এবং বলবেঃ হে প্রভু! আমাদেরকে তুমি এই বান্দাদের সঙ্গে দিও।
আমাদের প্রিয়তম নবী হযরত মুহাম্মাদ(সাঃ) ইরশাদ করেন যে, ধৈর্য হচ্ছে ঈমানের অর্ধেক এবং ধৈর্যের অর্ধেক হচ্ছে রোযা।
হাদিসে কুদসীতে আল্লাহ তাআ’লা ঘোষনা করেন যে, রোযাদারের মুখের দুর্গন্ধ আমার কাছে মৃগনাভীর সুগন্ধ অপেক্ষা বেশি প্রিয়।
মুহাম্মাদ(সাঃ) তার উম্মতের প্রতি ইরশাদ করেনঃ রোযা হচ্ছে অন্যান্য সকল ইবাদতের দ্বার।
হুযুর(সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লাম) আরও ঘষণা করেন যে, রোযা তোমাদের জন্য ঢাল। অর্থ্যাৎ, রোযা তোমাদেরকে গুনাহ থেকে রক্ষা করে।
হযরত আবু হুরাইরা(রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, আহমাদে মুজতাবা মুহাম্মাদ মুস্তাফা(সাঃ) বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি রমযান মাসে ইমান ও পূর্ণ্য দু’আ নিয়ে রোযা আদায় করল তাহলে তার সমস্ত পূর্ব গুনাহ কে মোচন করে দেওয়া।
নবী মুহাম্মাদ(সাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রোযাদারের নিদ্রা ইবাদত, আর তাদের নিশব্দ থাকা তসবীহ পড়া সমতুল্য এবং তাদের দু’আ গ্রহনযোগ্য আর তাদের কার্য্য কলাপে পূর্ণ্য সাধারণ মানুষদের চেয়েও বেশি।