আখিরাতের জন্য চিন্তা ও ভাবনা
আখিরাত:
 আখিরাত একটি ইসলামী শব্দ যেটির দ্বারা মৃত্যুর পরবর্তীর জীবনকে বোঝানো হয়, অর্থাৎ“পরকাল”। আখিরাতের অপর নাম হল হিসাবের দিন। পবিত্র কুরআন শরীফে  সূরা আল-আ’লা, ১৭ নং আয়াতে ঘোষণা করা হয়েছে যে “আখিরাত হচ্ছে উত্তম ও চিরস্থায়ী”। জীবনের মধ্যে প্রকৃত সফলতা হলো আখিরাতে সফলতা এবং সেই দিনের একমাত্র বিচারক হবেন শুধুমাত্র আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা। এই আখিরাতের দিন মানুষ দুনিয়াতে যত কাজ-কর্ম করেছে সব কাজ-কর্মর হিসাব নেওয়া হবে এবং হিসাব নেওয়ার পরে যে ব্যক্তি ভাল আমল করেছে তার ভালো আমলের জন্য সে ব্যক্তি আগুন থেকে বাঁচবে অর্থাৎ জাহান্নাম থেকে বাঁচবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করবে। এবং যে ব্যক্তি মন্দ কাজ করেছে তার মন্দ কাজের জন্য সে ব্যক্তি জান্নাত থেকে বাঁচবে এবং জাহান্নামে প্রবেশ করবে । ইসলামী আকীদা অনুসারে, হযরত ইসরাফীল (আ:) যখন তিনার শিঙ্গায় ফুৎকার দিবে তখন কিয়ামত হবে, অর্থাৎ বিশ্বজগৎ ধ্বংস হয়ে যাবে। প্রথম ফুৎকার দেওয়ার সাথে সাথেই সকল সৃষ্ট জীব মারা যাবে। দ্বিতীয় ফুৎকার দেওয়ার সাথে সাথেই পৃথিবী সৃষ্টি থেকে কিয়ামত পর্যন্ত যত জীবের সৃষ্ট হয়েছিল, সেই সব জীব গুলো পুন:রায় জীবিত হয়ে উঠে দাঁড়াবে। এবং তাদেরকে হাশরেরে ময়দানে একত্রিত করা হবে ও তাদের হিসাব-নিকাশ করা হবে। 
আখিরাতের জন্য প্রস্তুতিঃ
 আমদেরকে আখিরাতের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে, আখিরাতের চিন্তা রাখতে হবে। এই দুনিয়াতে কেউ বাঁচতে আসেনি এই দুনিয়া থেকে সবাইকে বিদায় নিতে হবে। এই জন্ন্য বলা হয় যে জীবন হচ্ছে একটি প্রদীপ। এই প্রদীপ নিভিয়ে যাওয়ার কনো সময় নাই সে যখন-তখন নিভিয়ে যেতে পারে। সেই রকমি আমাদের জীবন তার কন নির্দিষ্ট সময় নাই কখনো আমদের মৃত্য়ু হতে পারে। তাই আমাদের উপর উচিত যে আমরা জাতে ভালো আমল করতে পারি এবং ভাল আমল করে মৃত্য়ু বহন করতে পারি। এবং আরও বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি দুনিয়ার বুকে ভালো ফযিলাত অর্জন করবে এবং সে মৃত্য়ুর ভাবনা করবে না ও মনের ভিতরে সে ভিত্তি করবে যে আমি আমার মঞ্জিল পর্যন্ত পৌহচিতে পারব অর্থাৎ আখিরাতের দিনে আমার সফলতা হবে সে ব্যক্তি অবশ্য তার মঞ্জিল পয়ন্ত পৌহচে যাবে অর্থাৎ আখিরাতের দিনে তিনার সফলতা হবে। তাই সেই আখিরাতের সফলতা পেতে হলে এই দুনিয়ার বুকে ভাল আমল অর্জন করতে হবে, দুনিয়ার মন্দ কুকর্ম গুলো থেকে নিজেকে বিরত থাকতে হবে। ভালো নেকি অর্জন করতে হবে। আল্লাহর হুকুম মেনে চলতে হবে। আল্লাহর ইবাদাত করতে হবে। খারপ কাম থেকে নিজেকে বাঁচতে হবে, এবং নেক কামের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
বাদশাহ ও মিসকিন এবং আখিরাতঃ
আখিরাতের দিনে সব ধর্ম একত্রিত থাকবে, কেই আলদা আলাদা হয়ে থাকবে না যেমন হিন্দু, মুসলিম, ঈসাই, ইত্যাদি অর্থাৎ দুনিয়াতে যতো সব ধর্ম আছে সব ধর্ম ইসলাম ধর্ম হয়ে থাকবে। এবং সেই আখিরাতের দিনে কনো রাজা-বাদশাহ, কন আমির-ফকির থাকবে না সব মানুষ একই থাকবে। এবং সেই আখিরাতের দিনে কোন বাদশাহর কোন হুকুম বা রাজত্ব চলবে না। চলবে সুধু আল্লাহ তাআলার হুকুম আল্লাহ তাআলার রাজত্ব। সেই দিনে দুনিয়ার কোন বাদশাহকে কোন মানুষ কোন প্রশ্ন করবেনা। এবং সেই দিনের জন্য কাউকে নির্দিষ্ট করা হবে না যে, কে আমির, কে বাদশাহ, কে রাজা। এমন-কি বলা হয়েছে যে, অনেক এরকম বাদশাহ থাকবে যে তাদেরকে জালিল করা হবে অর্থাৎ তারা নিচু অবস্থাই থাকবে। এবং অনেক এরকম নেক ব্যাক্তি আছে যে তাদেরকে সাআতাদের হার পরানো হবে। তাদের উপর আল্লাহ তাআলার নিয়ামত নাযিল হবে এবং তাদের জন্য উঁচু উঁচু জাগাই অবস্থান করা হবে। এবং এই দুনিয়ার যে বাদশাহ তারা নিচু অবস্থানও পাবে না  অর্থাৎ মাটিতেও তাদের জায়গা হবে না। তাদের উপর আল্লাহ তাআলার কোন নিয়ামত নাজিল হবে না। তারা নেক ব্যক্তিদেরকে দেখতে থাকবে যে তাদের উপর আল্লাহ তাআলার নিয়ামত নাজিল হচ্ছে আর আমাদের শুধুমাত্র শাস্তি নাজিল হচ্ছে। তাই এই দুনিয়ার যতো বাদশাহ কিংবা রাজা সবাই আল্লাহ তাআলার যতো নেক আমল বা কাম আছে সব নেক আমল বা কামগুল  আমল  করতে হবে। এবং আল্লাহ তাআলা যতো হুকুম দিয়েছেন সব হুকুম অনুযায়ী চলতে হবে সেরাতুল-মুস্তাকিম রাস্তায় চলতে হবে এবং আখিরাতের দিনে আল্লাহ তাআলার নিয়ামত অর্জন করতে হবে।
শাফায়াত :
সেই আখিরাতের দিন মানুষ আল্লাহ তাআলার ভয়াবহ বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যে আল্লাহ সুবহান-তাআলা নিকট বর্তি তাদের সুপারিশ পেশ করার অনেক চেষ্টা করবে কিন্তু সেই সুপারিশ আল্লাহ তাআলা কক্ষনো গ্রহন করেবে না। সেই সময় তারা সকলে মিলে আমাদের প্রিয় নবী  হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর কাছে যাবেন তখন আমাদের প্রিয় নবী  হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) আমদের ভয়াবহ বিপদ থেকে আমাদেরকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আল্লাহ তাআলার নিমিত্তে সেজদায় পরে যাবেন এবং আল্লাহর প্রশংসা ও আল্লাহ তাআলার মর্যাদা বর্ণনা করবেন। ততক্ষণ পর্যন্ত তিনার সেজদাহ উঠাবেন না যতক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সেই ভয়াবহ বিপদ থেকে মুক্তি দেবে না শাফায়াত দেবন না। তারপর হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) আল্লাহ তাআলার নিকট সুপারিশ করার অনুমতি চাইবেন। এবং আল্লাহ তাআলা হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) কে অনুমতি দিবেন। এরপর রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদের জন্য সুপারিশ করবেন ও আল্লাহর কাছে দুয়া করবেন। এবং সেই সুপারিশ সবার জন্য হবে না হবে শুধু হবে যে ব্যক্তিদের প্রতি মহান করুণা-ময় আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্ট রয়েছেন, ও আল্লাহ তাআলা যাদের উপর সন্তুষ্ট আছেন সেই ব্যক্তিদের ছাড়া অন্য কারওর জন্য কেউ সুপারিশ করবে না। তাই আমাদেরকে উচিত যে আমরা ভাল নেকি অর্জন করতে পারি। আল্লাহর হুকুম মেনে চলতে পারি। আল্লাহর ইবাদাত করতে পারি। খারপ কাম থেকে নিজেকে বাঁচাতে পারি, এবং নেক কামের দিকে এগিয়ে যেতে পারি ।

Related Posts

Leave A Comment

Voting Poll

Get Newsletter