ইসলামে খুশির ধারণা এবং জাপানের ইকিগাই (IKIGAI) ধারণার মধ্যে সামঞ্জস্য
প্রতিটি মানুষই চায় অর্থপূর্ণ, দীর্ঘ এবং সুস্থ জীবন কাটাতে। অনেকেই এমন কিছু চেষ্টা করেছেন, যাতে তাদের জীবন সত্যিকারের আনন্দময় এবং সুখে ভরপুর হয়। জাপানের ‘ইকিগাই’ ধারণা এবং ইসলামী জীবনের সুখের দৃষ্টিভঙ্গি—এই দুইটিই এমন দুটি পদ্ধতি, যা আমাদের সুখী ও অর্থপূর্ণ জীবন সম্পর্কে ভাবতে সাহায্য করে। ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী, প্রকৃত সুখ এবং প্রশান্তি আসে আল্লাহকে স্মরণ করার মাধ্যমে। কোরআনে আল্লাহ তা’আলা বলেন—
الَّذِينَ آمَنُوا وَتَطْمَئِنُّ قُلُوبُهُم بِذِكْرِ اللَّهِ ۗ أَلَا بِذِكْرِ اللَّهِ تَطْمَئِنُّ الْقُلُوبُ
"যারা ঈমান আনে এবং যাদের অন্তর আল্লাহর স্মরণে শান্ত হয়, নিশ্চয়ই আল্লাহর স্মরণেই অন্তরসমূহ প্রশান্ত হয়" (সূরা রা’দ: ২৮)। অর্থাৎ, যারা আল্লাহর ওপর বিশ্বাস রাখে এবং তাঁকে স্মরণ করে, তারা অন্তরে প্রকৃত শান্তি পায়।
বিখ্যাত ইসলামী সুফি সাধক ইমাম আল-গাযালী (রহঃ) তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ "ইহইয়া উলুম উদ-দীন" (ধর্মীয় জ্ঞানের পুনর্জাগরণ)-এ ব্যাখ্যা করেছেন, প্রকৃত সুখ ও হৃদয়ের প্রশান্তি আসে হৃদয়ের পরিশুদ্ধতার মাধ্যমে—যা অর্জিত হয় জ্ঞান, আত্মনিয়ন্ত্রণ এবং ইবাদতের মাধ্যমে। এই পথ আমাদেরকে আল্লাহর সঙ্গে গভীর সম্পর্ক গড়ে তুলতে সাহায্য করে এবং আমাদের চারিত্রিক গুণাবলি উন্নত করে। যদিও ইকিগাই এবং ইসলামিক চিন্তাধারা দুটি ভিন্ন সংস্কৃতি ও সমাজব্যবস্থা থেকে এসেছে, তবুও উভয়েই আত্ম-সচেতনতার ভারসাম্য এবং পরিপূর্ণ জীবনের গুরুত্বকে গুরুত্ব দেয়। এই দুটি দার্শনিক চিন্তা আমাদের শেখায় কীভাবে দীর্ঘ, সুখী এবং অর্থবহ জীবন যাপন করা যায়—যা শুধু ব্যক্তিগত নয়, বরং সমাজের উপকারেও আসে।
ইকিগাইকে বোঝা: জীবনের উদ্দেশ্য
ইকিগাই একটি জাপানের ধারণা, যার অর্থ হলো "জীবনের একটি কারণ" বা "বেঁচে থাকার উদ্দেশ্য"। এটি চারটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ভারসাম্য খুঁজে পাওয়ার বিষয়ে বলে: তুমি কী ভালোবাসো, তুমি কোন কাজে দক্ষ, পৃথিবীর কী প্রয়োজন, এবং কোন কাজের জন্য তুমি পুরস্কৃত হতে পারো। এই ধারণা একজন মানুষকে নিজের জীবনের অনন্য উদ্দেশ্য খুঁজে পেতে সহায়তা করে, যা হলো আত্মতৃপ্তি এবং প্রতিদিনের জীবনে উৎসাহ প্রদান। ইকিগাই মূলত এমন একটি পথ দেখায়, যেখানে একটি মানুষ নিজের দক্ষতা ও ভালোবাসার কাজগুলো সমাজের প্রয়োজনের সঙ্গে মিলিয়ে জীবনে আনন্দ এবং সন্তুষ্টি খুঁজে পায়।
এই ধারণার শিকড় গভীরভাবে জাপানের সংস্কৃতির মধ্যে প্রোথিত, বিশেষ করে ওকিনাওয়া অঞ্চলে, যেটি দীর্ঘজীবী মানুষের জন্য বিশ্বব্যাপী পরিচিত। অনেক মানুষ এখানে ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সুস্থভাবে বেঁচে থাকেন। ইকিগাই শুধু ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য বা সুখের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এটি মানসিক, শারীরিক এবং আত্মিক দিকগুলোর একত্রিত সম্মিলন। এই ভাবনা জীবনকে ভারসাম্যপূর্ণ করার, মানসিক সচেতনতা বজায় রাখার এবং আত্ম-উন্নতির ওপর গুরুত্ব দেয়। এটি শেখায় যে, প্রকৃত সত্য আসে তখনই, যখন আমরা নিজের সর্বোচ্চ মূল্যবোধ অনুযায়ী জীবন যাপন করি এবং সমাজের মানুষের কল্যাণে কাজ করি।
ইসলামী দর্শনে সুখের আধ্যাত্মিক যাত্রা
ইসলামী দর্শন অনুযায়ী, প্রকৃত সুখ জড়িত কোরআনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণার সঙ্গে—তা হলো "কল্বে সালীম" অর্থাৎ বিশুদ্ধ হৃদয়। এমন একটি হৃদয়, যেখানে সব উদ্দেশ্য এবং কাজ শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হয়ে থাকে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন—
يَوْمَ لَا يَنفَعُ مَالٌ وَلَا بَنُونَ ,إِلَّا مَنْ أَتَى اللَّهَ بِقَلْبٍ سَلِيمٍ
"সেদিন ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি কোনো উপকারে আসবে না, উপকারে আসবে শুধুমাত্র সেই ব্যক্তি, যে আল্লাহর দরবারে বিশুদ্ধ হৃদয় নিয়ে হাজির হবে" (সূরা আশ-শু’আরা: ৮৮-৮৯)। কল্বে সালীম অর্জন করা হলো একটি দীর্ঘ আধ্যাত্মিক যাত্রা, যা নিয়মিত আত্ম-অনুশীলন ও আত্মপর্যালোচনার মাধ্যমে অর্জন করা সম্ভব। এটি এমন একটি অবস্থা, যেখানে একজন মানুষের হৃদয় সম্পূর্ণভাবে আল্লাহর ইচ্ছার সঙ্গে একীভূত হয়ে যায় এবং এর মাধ্যমে আখিরাতে পরিপূর্ণ সাফল্য লাভ করা যায়। এই পথ হলো আত্মার শুদ্ধি ও আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের পথ, যেখানে প্রকৃত সুখ ও শান্তি নিহিত।
ইসলামে আধ্যাত্মিকতার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো আত্মজ্ঞান। একজন বলেছেন, "من عرف نفسه فقد عرف ربه" — অর্থাৎ, "যে নিজের অন্তরকে (নফস) চেনে, সে তার প্রভুকেও (রব্ব) চেনে।" এই কথাটি বুঝিয়ে দেয়, যে ব্যক্তি নিজেকে ভালোভাবে চেনে—তার ভালো-মন্দ কাজগুলোকে বোঝে—সে তার স্রষ্টার সঙ্গেও সম্পর্ক বুঝতে পারে। তাই, যদি কেউ নিজের ভেতরের সত্যিকারের অবস্থা বোঝে, নিজের ভালো ও মন্দ দিক চিনে ফেলে, এবং জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্য উপলব্ধি করে, তাহলে সে নিজের জীবনকে আল্লাহর নির্দেশনার সঙ্গে মিলিয়ে নিতে পারে। আর এটিই দীর্ঘস্থায়ী ও প্রকৃত সুখ লাভের মূল চাবিকাঠি। ইমাম আল-গাযালী (রহঃ) আরো বলেন, প্রকৃত সুখ অর্জন হয় হৃদয়কে পরিশুদ্ধ করার মাধ্যমে, আত্মনিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে এবং সর্বদা সৎপথে চলার মাধ্যমে। ইসলামে জীবনের প্রধান উদ্দেশ্য হলো আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়া। এই পথই মানুষকে প্রকৃত সুখ এনে দেয়—একটি স্থায়ী ও গভীর শান্তি, যা জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে অনুভব করা যায়। ইসলাম সব বিষয়ে ভারসাম্য বজায় রাখার ওপরও জোর দেয়, যাকে বলা হয় "ওয়াসাতিয়্যাহ" (وسطية)—অর্থাৎ মধ্যপন্থা বা সংযম। জীবনযাপনের প্রতিটি দিকেই এই ভারসাম্য বজায় রাখাই ইসলামী জীবনের একটি মূলনীতি, যা সুখী ও পরিপূর্ণ জীবনযাত্রায় সহায়ক হয়।
ইকিগাইয়ের মনোবিজ্ঞান: শান্তি এবং মানসিক স্বাস্থ্য
মনোবিজ্ঞান মানে হলো জীবনে কোনো উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য থাকা। এটি একটি জাপানের ধারণা, যা মানুষের মানসিক এবং আবেগিক স্বস্তি ও সন্তুষ্টি অনুভব করতে সাহায্য করে। অনেক গবেষক এই বিষয়ে কাজ করেছেন যে, জীবনে একটি উদ্দেশ্য থাকলে মানুষ সুখী হয় এবং দীর্ঘজীবী হয়।
প্রধানত, ইকিগাই চারটি গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে গঠিত: আবেগ, লক্ষ্য, পেশা, এবং কর্মজীবন। যখন এই চারটি দিক একেবারে সঠিকভাবে মিলে যায়, তখন প্রতিটি ব্যক্তি একটি ভালো জীবন অর্জন করতে পারে, যেখানে তাদের কাজ এবং ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য একসঙ্গে চলে, যা তাদের স্বপ্ন এবং সুখ নিয়ে আসে, এবং জীবনকে কম চাপের সঙ্গে কাটাতে সাহায্য করে। এই ধরনের ভারসাম্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি সাহায্য করে যে কাজ শুধু অর্থ উপার্জনের জন্য না হয়ে, তা মানুষকে সুখী এবং দীর্ঘ ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে সহায়ক হয়।
উদ্দেশ্যসহ জীবনযাপন: ইকিগাই এবং ইসলামি চিন্তাধারা
ইকিগাই এবং ইসলামিক সুখের ধারণার সংমিশ্রণ একটি পরিপূর্ণ পথ দেখায়, যা মানুষকে অর্থপূর্ণ জীবন যাপনে সহায়তা করে এবং এটি সকল মানুষকে বৃহৎ সমাজ এবং আধ্যাত্মিক দিকগুলোতে পৌঁছানোর পথ দেখায়। এটি মানুষের কাজ, লক্ষ্য এবং বিশ্বাসের মধ্যে সঙ্গতি তৈরি করতে সহায়তা করে এবং তাদের নিজস্ব, অন্যদের সঙ্গে এবং আল্লাহর সাথে শান্তির অনুভূতি তৈরি করতে সাহায্য করে।
ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী, জীবনের প্রকৃত সুখ অর্জনের প্রথম পদক্ষেপ হলো খলিফাতুল আরদ (পৃথিবীর রক্ষক হওয়া)—এটি এমন একটি ধারণা, যা বলে যে, মানুষ পৃথিবীর রক্ষক। খলিফাতুল আরদ হওয়া শুধুমাত্র সম্পদ ব্যবহার করার বিষয়ে নয়, বরং এটি হলো সদাচরণ, ন্যায্যতা, সৎ কাজ এবং মানবিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে জীবন যাপন করা। ইসলাম আমাদের শেখায় যে, যদি কোনো কাজ ভালো চিন্তা এবং সঠিক ইচ্ছার সাথে করা হয়, তবে সেই কাজ ইবাদতের অংশ হতে পারে। তাহলে, জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্য খুঁজে বের করা এবং তা দৈনন্দিন জীবনে পালন করা, আধ্যাত্মিক দায়িত্বের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হতে পারে।
ইকিগাই এবং ইসলামি শিক্ষায় আত্মজ্ঞান এবং নিজের সম্পর্কে চিন্তা করার গুরুত্ব রয়েছে। যেমন কেউ বলেছেন, "من عرف نفسه فقد عرف ربه" — অর্থাৎ, "যে নিজেকে (নফস) চেনে, সে তার প্রভু (রব্ব) কে চেনেl।" এই ধারণা ইকিগাইয়ের সঙ্গে গভীরভাবে মিলে যায়; এটি বুঝিয়ে দেয় যে আত্মসচেতনতা একটি শান্তিপূর্ণ জীবনের মূল স্পষ্টভাবে বলা যায়, ইসলাম এবং ইকিগাই উভয়েই শেখায় যে আমাদের জীবনে কর্ম এবং বিশ্বাসের মধ্যে ভারসাম্য অর্জন করা উচিত, যে কাজগুলো আমরা এখানে করি এবং আমাদের আধ্যাত্মিক উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে। ইসলাম "ওয়াসাতিয়্যাহ" (মধ্যপন্থা) ধারণা শেখায়, যা জীবনের সকল দিকেই ভারসাম্য এবং সংযম বজায় রাখার কথা বলে। যেমন আল্লাহ কোরআনে বলেছেন—
وَكَذَٰلِكَ جَعَلْنَاكُمْ أُمَّةً وَسَطًا لِّتَكُونُوا شُهَدَاءَ عَلَى النَّاسِ وَيَكُونَ الرَّسُولُ عَلَيْكُمْ شَهِيدًا
"এভাবেই আমরা তোমাদের একটি মধ্যপন্থী জাতি বানিয়েছি, যাতে তোমরা মানুষের জন্য সাক্ষী হতে পারো এবং রাসুল তোমাদের জন্য সাক্ষী হতে পারেন" (সূরা বাকারাহ: ১৪৩)। এটি শেখায় যে, মুসলিমানদের উদ্দেশ্য হলো এমন একটি জীবন যাপন করা, যা শান্তি এবং ভারসাম্য বজায় রাখে, এবং আমাদের আধ্যাত্মিক ও পার্থিব জীবনের মধ্যে সঠিক সঙ্গতি তৈরি করে।
এই ধরনের ভারসাম্য আমাদেরকে দৈনন্দিন কাজকর্ম এবং দায়িত্ব পালন করতে সাহায্য করে, একই সঙ্গে আমাদের আধ্যাত্মিক লক্ষ্য এবং বিশ্বাস বজায় রাখার সুযোগ দেয়। এছাড়া, আল্লাহ কোরআনে বলেন—
فَإِذَا قُضِيَتِ الصَّلَاةُ فَانتَشِرُوا فِي الْأَرْضِ وَابْتَغُوا مِن فَضْلِ اللَّهِ وَاذْكُرُوا اللَّهَ كَثِيرًا لَّعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
"তবে যখন নামাজ শেষ হয়, তখন পৃথিবীজুড়ে ছড়িয়ে পড়ো এবং আল্লাহর অনুগ্রহ অনুসন্ধান করো, এবং আল্লাহকে অনেক মনে করো যাতে তোমরা সফল হতে পারো" (সূরা জুমুআহ: ১০)। ইকিগাইও বলে, আমাদের জীবনে একটি ভালো উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করা উচিত, শুধুমাত্র মজা বা টাকা উপার্জনের জন্য নয়। এটি শেখায় যে, জীবনে একটি সঠিক উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করার মাধ্যমে আমরা শুধু আমাদের নিজেদের জন্য নয়, বরং পুরো সমাজ এবং আধ্যাত্মিক জীবনের জন্য সফলতা অর্জন করতে পারি।
একটি অর্থপূর্ণ জীবন এইভাবে চিহ্নিত হয় যে, তোমাকে অন্যদের সাহায্য করতে হবে এবং সর্বদা কমিউনিটির অংশ হতে হবে। ইসলাম এবং ইকিগাই উভয়ই শেখায় যে, জীবনের প্রকৃত সুখ শুধুমাত্র আত্মকেন্দ্রিক হয়ে, নিজেকে সেবা করে পাওয়া যায় না; প্রকৃত সুখ আসে অন্যদের সাহায্য করে এবং সমাজকে সমর্থন দিয়ে। ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে, এটি "খিদমাহ" (সেবা) বলা হয়, যার মানে হলো সেবা প্রদান। সৎ পথে সদয় এবং সৎ কাজ করা তোমাকে আল্লাহর সাথে সম্পর্ক গভীর করতে সাহায্য করবে এবং আল্লাহর কাছ থেকে তুমি পুরস্কৃত হবে। এখন, ইকিগাই ধারণা অনুযায়ী, মানুষ তাদের উদ্দেশ্য অর্জন করতে অন্যদের সাহায্য করে এবং সমাজকে সহায়তা করে তাদের ভালো কাজ, সঠিকভাবে কার্যাবলি এবং দৈনন্দিন দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে করতে হবে। খিদমাহ, বা সেবা, তোমাকে এবং অন্যদের জন্য একটি উন্নত জীবন গঠনে সাহায্য করে। এভাবে, দুটোই (ইসলাম এবং ইকিগাই) আমাদের শেখায় যে, আত্মত্যাগ ও সেবা একটি সুন্দর এবং সুখী জীবন তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সমাপ্তি
অবশেষে, যখন আমরা ইকিগাই ধারণা এবং ইসলামের সুখের ধারণা নিয়ে ভাবি, তখন আমরা শিখতে পারি যে, জীবনের সব দিকেই একটি মাঝারি এবং অর্থপূর্ণ জীবন যাপন করা এবং শুধুমাত্র নিজের কথা না ভেবে, অন্যদের এবং সমাজকে সাহায্য করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি আমাদের আধ্যাত্মিক সম্পর্ক আল্লাহর সাথে, বিশ্বাস এবং অর্থ উপার্জনেও সাহায্য করবে। একই সঙ্গে, এটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আমাদের মূল্যবোধ বৃদ্ধি করতে এবং একটি উদ্দেশ্যপূর্ণ জীবন যাপন করতে সাহায্য করবে। কিন্তু ইকিগাইকে ইসলামিক নীতির সাথে তুলনা করার সময় একটি জিনিস মনে রাখতে হবে যে বার্ধক্য প্রতিরোধী পদ্ধতি এবং খাবারগুলি কেবল কারণ এবং আসল বয়স নির্ধারণকারী হলেন আল্লাহ। অবশেষে, প্রকৃত সুখ আসে সঠিকভাবে জীবন যাপন করার মাধ্যমে, যা আমাদের সত্যিকারের বিশ্বাসের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এবং অন্যদের সাহায্য করার মাধ্যমে অর্জিন হয়, শুধুমাত্র মজা বা আত্মকেন্দ্রিক হওয়া থেকে নয়। এভাবে, ইকিগাই এবং ইসলাম উভয়েই আমাদের একটি পরিপূর্ণ, শান্তিপূর্ণ এবং সুখী জীবনযাপনের পথ দেখায়।