সময় নষ্ট নয়, সময় গড়ুক ভবিষ্যৎ: ইসলামি দৃষ্টিভঙ্গিতে জীবন ব্যবস্থাপনা
ভূমিকা
আমাদের জীবনে প্রতিনিয়ত নানা দায়িত্ব ও কাজ এসে পড়ে। কিন্তু একে একে তা স্থগিত করা, বিভিন্ন অজুহাতে দেরি করা শুধু নিজের ক্ষতি নয়, বরং সময়ের অপচয় এবং সৃষ্টিশীলতা নষ্ট করে। এই অভ্যাস ধীরে ধীরে মনোবল ভেঙে দেয় এবং আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দেয়।
আমরা অনেকেই এমন, যারা পরিকল্পনা করি কিন্তু কাজে নামতে দেরি করি। “আজ নয়, কাল”—এই চিন্তাধারা থেকেই জন্ম নেয় এক অভ্যাস: প্রোক্রাস্টিনেশন, অর্থাৎ কাজ ফেলে রাখা। এটি কেবল এক দুঃসংবাদ নয়, বরং একজন মানুষের আত্মিক ও জাগতিক উন্নতির পথে বড় অন্তরায়। ইসলাম, যে জীবনব্যবস্থার প্রতিটি দিকই পরিপূর্ণ, সময়ের সদ্ব্যবহারে খুব জোর দেয়। এই প্রবন্ধে আমরা কুরআন, হাদীস ও আধুনিক মনোবিজ্ঞানকে আলো করে দেখব—কাজ ফেলে রাখার আসল কারণ কী এবং কীভাবে আমরা তা থেকে মুক্তি পেতে পারি।
কুরআনের আরও একটি আয়াতে বলা হয়েছে: “আমি মানুষের প্রতিটি কাজ তার কপালে ঝুলিয়ে দিয়েছি” (সূরা বনী ইসরাঈল: ১৩)। এর মানে মানুষ নিজের কাজের জন্য নিজেই দায়ী। সৎকর্মে দেরি মানে তা হারিয়ে ফেলার আশঙ্কা। ইসলামে সময় এমন এক নিয়ামত, যার হিসাব কঠোরভাবে দিতে হবে।
কুরআনের নির্দেশ: দেরি নয়, অগ্রসর হও
নবী করীম ﷺ উম্মতকে সতর্ক করেছেন যে, সময় একটি ধোঁকার মত; মানুষ যখন উপলব্ধি করে, তখন অনেক দেরি হয়ে যায়। তিনি বলেছেন, 'দুইটি নিয়ামতের ব্যাপারে অনেক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত—স্বাস্থ্য ও অবসর' (বুখারী)। এতে বোঝা যায়, অবহেলা করা সময় একপ্রকার আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা ইরশাদ করেন:
“আর তোমরা প্রতিযোগিতা কর তোমাদের রবের পক্ষ থেকে ক্ষমা লাভের জন্য এবং জান্নাতের জন্য, যার প্রশস্ততা আসমান ও যমীনের মতো।” (সূরা আলে ইমরান: ১৩৩)
এই আয়াতের “সাবিকু” শব্দটি প্রতিযোগিতা ও দ্রুততা বোঝায়—সৎ কাজের জন্য দেরি না করে তৎপর হতে হবে। অন্যত্র বলা হয়েছে, মৃত্যুর পর মানুষের একমাত্র অনুশোচনা হবে—আরেকটু সময় যদি পেতাম! (সূরা মু’মিনূন: ৯৯–১০০)
এ থেকেই বোঝা যায়, সময় নষ্ট করা শুধু আলস্য নয়, বরং আখিরাতের জন্য ভয়ানক ক্ষতির কারণ।
গবেষণায় দেখা যায়, প্রোক্রাস্টিনেশন আত্মবিশ্বাসহীনতা, ভয়, পারফেকশনিজম এবং একঘেয়েমি থেকেও জন্ম নেয়। অনেকেই মনে করেন, তাঁরা একদম নিখুঁতভাবে কাজ শেষ না করলে তা মূল্যহীন হবে—এই মানসিকতা কাজ শুরু করতেই বাধা হয়ে দাঁড়ায়। ফলে মস্তিষ্ক সেই চাপ এড়াতে সহজ পথ খোঁজে।
নবী ﷺ-র দোয়া ও শিক্ষা
অন্যদিকে ইমাম গাযযালী (রহ.) বলেন, “যে সময় অতিবাহিত হয়ে গেলো, তা আর ফিরে আসবে না; তোমার সময়ই তোমার জীবন”। এ শিক্ষা থেকে বোঝা যায়, সময় ব্যবহারে সচেতনতা একজন মানুষের আধ্যাত্মিক উন্নতির মূল।
প্রিয় নবী মুহাম্মদ ﷺ বারবার সময়ের গুরুত্ব বুঝিয়েছেন। তিনি একটি বিখ্যাত দোয়ায় বলেন:
“হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে পানাহ চাই অক্ষমতা ও অলসতা থেকে।” (সহীহ মুসলিম)
তিনি আরও বলেন: “পাঁচটি জিনিসকে পাঁচটি আসার আগে কাজে লাগাও—যার একটি হলো অবসরকে ব্যস্ততার আগে কাজে লাগাও।”
নবীর এই বক্তব্যে অলসতা যেন এক নীরব রোগ, যা মানুষকে ধীরে ধীরে ধ্বংস করে দেয়।
- প্রতিদিন একটি 'to-do list' তৈরি করুন এবং গুরুত্বপূর্ণ কাজ আগে সম্পন্ন করুন।
- 'Accountability partner' তৈরি করুন—কেউ একজন যাকে আপনি আপনার কাজের অগ্রগতি জানাবেন।
- কাজে দেরি করলে নিজেকে একটি ক্ষুদ্র জরিমানা দিন বা সময় সীমাবদ্ধ করুন।
মনোবিজ্ঞানের বিশ্লেষণ
আমরা যদি বুঝে উঠি যে, সময় একটি আল্লাহ প্রদত্ত নিয়ামত, তবে তার অপব্যবহার হবে এক ধরনের অকৃতজ্ঞতা। অলসতা কেবল কর্মক্ষেত্রে নয়, বরং আধ্যাত্মিক ও নৈতিক বিকাশেও বাধা। তাই আমাদের উচিত প্রতিদিন নিজেকে সময়ের প্রশ্নে জবাবদিহিতার জায়গায় দাঁড় করানো।
আধুনিক গবেষণা অনুযায়ী, প্রোক্রাস্টিনেশন সময় ব্যবস্থাপনার সমস্যা নয়—এটি আবেগ নিয়ন্ত্রণের সমস্যা। যখন কোনো কাজ কঠিন, জটিল বা বিরক্তিকর মনে হয়, তখন মস্তিষ্ক আনন্দদায়ক বা সহজ কাজের দিকে আকৃষ্ট হয়।
ড. টিম পিকল বলেন: “Procrastination is an emotion regulation problem, not a time management problem.”
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সমীক্ষায় দেখা যায়, প্রায় ৮০–৯০% শিক্ষার্থীই এই সমস্যায় ভোগে। স্মার্টফোন, সোশ্যাল মিডিয়া, গেইম—এসব এখন প্রোক্রাস্টিনেশনের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ইতিহাস থেকে উদাহরণ
লিওনার্দো দা ভিঞ্চি ‘মোনালিসা’ চিত্রকর্মে ১৬ বছর সময় নিয়েছিলেন। যদিও তা শিল্পে অমর, কিন্তু এর পেছনে ছিলো বারবার কাজ ফেলে রাখার প্রবণতা। তেমনি, বড় বড় বিজ্ঞানী, লেখক ও নেতা—যারা সফল হয়েছেন, তারা জানতেন সময়ের মূল্য। তারা অলসতাকে জয় করে নিয়মিত চর্চার মাধ্যমে ইতিহাস গড়েছেন।
আলস্য ও কাজ পেছানোর অভ্যাস কাটানোর কার্যকর কৌশল
কাজ পেছানো বা আলস্য আজকের সময়ের এক প্রচলিত সমস্যা। প্রায়ই দেখা যায়—গুরুত্বপূর্ণ কোনো কাজ সামনে থাকলেও আমরা তা শুরু করতেই বারবার দেরি করি। এর পেছনে নানা মানসিক ও পরিবেশগত কারণ কাজ করে। কখনও আমরা ভয় পাই—যদি ব্যর্থ হই, যদি কাজটি যথেষ্ট ভালো না হয়? অনেক সময় নিখুঁত হওয়ার চাপও আমাদের শুরু করতেই বাধা দেয়। আবার অনেকেই মানসিক ক্লান্তি বা অস্থিরতার কারণে কাজ এড়িয়ে চলেন। এ সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য প্রথমেই আমাদের জানতে হবে—আমি কেন কাজটি পেছাচ্ছি? সমস্যার মূলে পৌঁছাতে পারলে তার জন্য কার্যকর কৌশলও গ্রহণ করা সম্ভব হয়।
এই সমস্যা সমাধানে প্রথম ধাপ হলো লক্ষ্য নির্ধারণ। বড় কোনো লক্ষ্যকে একসাথে অর্জন করার কথা ভাবলে কাজটি কঠিন ও চাপের মনে হয়। তাই কাজটিকে ছোট ছোট ধাপে ভাগ করে নিন। প্রতিদিনের জন্য একটি ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন, যা সহজে সম্পন্ন করা সম্ভব। এভাবে ধাপে ধাপে এগোলেই বড় কাজও সহজ হয়ে যাবে। এরপর সময় ব্যবস্থাপনায় আনুন শৃঙ্খলা। “Pomodoro Technique” নামক কার্যকর একটি পদ্ধতিতে ২৫ মিনিট মনোযোগ দিয়ে কাজ করা হয় এবং এরপর ৫ মিনিট বিশ্রাম নেওয়া হয়। চারটি এমন সেশন শেষ হলে দীর্ঘ একটি বিরতি নেওয়া হয়। এই পদ্ধতি মনোযোগ ধরে রাখতে সাহায্য করে এবং কাজকে একঘেয়ে করে না।
তৃতীয়ত, আমাদের মনোযোগের বড় বাধা হলো ডিজিটাল ব্যাঘাত। মোবাইল ফোন, সোশ্যাল মিডিয়া ও বিভিন্ন অ্যাপের নোটিফিকেশন কাজের মধ্যে বারবার বিঘ্ন সৃষ্টি করে। তাই কাজের সময় নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ফোনটি “Do Not Disturb” মোডে রাখুন বা প্রয়োজন হলে ওয়েবসাইট ব্লকার ব্যবহার করুন। নিরিবিলি ও মনোযোগবর্ধক পরিবেশ তৈরির জন্য এসব পদক্ষেপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সবশেষে, কাজ শেষ হলে নিজেকে ছোট্ট একটি পুরস্কার দিন। এটি হতে পারে প্রিয় কিছু খাওয়া, প্রিয় গান শোনা বা কয়েক মিনিট আরাম করা। এই ছোট ছোট পুরস্কার আপনার মস্তিষ্ককে ইতিবাচক বার্তা দেবে যে—কাজ শেষ মানে আনন্দের উপলক্ষ। এতে পরবর্তীবার আপনি আরও উৎসাহ নিয়ে কাজে মনোযোগ দিতে পারবেন।
সর্বোপরি, কাজ পেছানোর এই প্রবণতা আমাদের সবার মধ্যেই কমবেশি আছে। কিন্তু সচেতন পরিকল্পনা, ধাপে ধাপে অগ্রগতি এবং নিজেকে সময়মতো উৎসাহিত করার মাধ্যমেই আমরা এই অভ্যাস বদলাতে পারি। মনে রাখতে হবে—শুরু করাটাই সবচেয়ে কঠিন, একবার শুরু করলে পথ আপনাআপনিই সহজ হয়ে যায়।
কাজ পেছানোর প্রবণতা ও ইসলামি সমাধান
কাজ পেছানো বা অলসতা শুধু আধুনিক সময়ের সমস্যা নয়; এটি যুগ যুগ ধরে মানুষের আত্মউন্নয়নের পথে অন্যতম বড় অন্তরায়। আজকের তরুণদের মধ্যে দেখা যায়, অনেকেই গুরুত্বপূর্ণ কাজ, পড়াশোনা বা দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে দেরি করে, গড়িমসি করে অথবা বারবার কাজের সময়সীমা পিছিয়ে দেয়। এই প্রবণতা আমাদের সময়, শক্তি ও সম্ভাবনার অপচয় ঘটায়। প্রশ্ন হচ্ছে—এই সমস্যার মূলে কী এবং এর সমাধান কীভাবে খুঁজে পাওয়া যায়?
ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে অলসতা ও কাজ পেছানোর মানসিকতা একটি নিন্দনীয় প্রবণতা। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে আল্লাহর কাছে এ থেকে আশ্রয় চাইতেন। একটি বিখ্যাত দোয়ায় তিনি বলতেন:
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحَزَنِ، وَالْعَجْزِ وَالْكَسَلِ...
“হে আল্লাহ! আমি আপনার আশ্রয় চাই দুশ্চিন্তা ও বিষণ্নতা থেকে, অক্ষমতা ও অলসতা থেকে...”
(বুখারী, হাদীস: ২৮৯৩)
এই দোয়া থেকেই স্পষ্ট—অলসতা এক ধরনের মানসিক অক্ষমতা, যার থেকে মুক্তির জন্য আন্তরিক দোয়া ও চেষ্টা জরুরি।
কাজ পেছানোর কারণ এবং ইসলামি সমাধান:
১. ভয় ও আত্মবিশ্বাসের অভাব:
অনেকেই মনে করেন—‘আমি পারব না’, ‘কাজটা যদি ভুল হয়?’ এই আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি মানুষকে কাজ থেকে দূরে রাখে। ইসলাম আত্মবিশ্বাসকে উৎসাহ দেয়, তবে তা অহংকার নয়, বরং আল্লাহর উপর ভরসার ভিত্তিতে।
→ সমাধান: আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল রাখুন (আল্লাহর উপর নির্ভরতা)। কুরআনে বলা হয়েছে:
وَمَن يَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ فَهُوَ حَسْبُهُ
“যে আল্লাহর উপর ভরসা করে, তাঁর জন্য আল্লাহই যথেষ্ট।” (সূরা তলাaq, আয়াত ৩)
২. নিখুঁত হওয়ার চাপ (Perfectionism):
ইসলামে কাজকে নিখুঁতভাবে করার উৎসাহ দেওয়া হয়েছে, তবে সেটি কখনোই কাজ না শুরু করার অজুহাত হতে পারে না।
→ সমাধান: রাসূল (সা.) বলেছেন:
إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ إِذَا عَمِلَ أَحَدُكُمْ عَمَلًا أَنْ يُتْقِنَهُ
“তোমাদের কেউ যখন কোনো কাজ করে, আল্লাহ চান সে যেন তা সুন্দরভাবে সম্পাদন করে।” (বায়হাকী)
অর্থাৎ, কাজ শুরু করুন, মনোযোগ দিন, ধাপে ধাপে উন্নত করুন।
৩. মানসিক ক্লান্তি ও অস্থিরতা:
আজকের প্রযুক্তিনির্ভর জীবনে মানুষ মানসিকভাবে ক্লান্ত থাকে, যার প্রভাব পড়ে কাজের উপর।
→ সমাধান: ইসলাম কর্ম ও বিশ্রামের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখাকে উৎসাহিত করেছে। যেমন নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে তাহাজ্জুদের জন্য ঘুম ভেঙে ইবাদত করতেন, আবার সাহাবীদের বিশ্রাম নিতে বলতেন। মুসলিম মনীষীরা সময় ভাগ করে পড়াশোনা, কাজ, ইবাদত ও বিশ্রামের পরিকল্পনা করতেন।
তাদের অনুকরণে আমরা Pomodoro বা সময়ভিত্তিক কাজের কৌশল গ্রহণ করতে পারি।
৪. সময়ের অবমূল্যায়ন:
সময় হচ্ছে সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। আল্লাহ তা'আলা কসম করে বলেছেন:
وَالْعَصْرِ، إِنَّ الْإِنسَانَ لَفِي خُسْرٍ
“সময়ের শপথ! নিশ্চয় মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত।” (সূরা আল-আসর)
→ সমাধান: দিনের শুরুতেই ফজরের পর সময়কে কাজে লাগানো। মুসলিম পণ্ডিতগণ বলেন, "যে ব্যক্তি দিনের শুরুতে আলসেমি করে, তার দিনটাই ব্যর্থ হয়ে যায়।" তাই কাজ করার অভ্যাস গড়ে তুলুন দিনের শুরুর দিকেই।
৫. মনোযোগে বিঘ্ন ঘটানো ডিজিটাল আসক্তি:
স্মার্টফোন, সোশ্যাল মিডিয়া ইত্যাদি সময় নষ্ট করার অন্যতম মাধ্যম। ইসলাম সময় ও একাগ্রতার মূল্য দিয়েছে।
→ সমাধান: নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ফোন বন্ধ রাখা, কিংবা প্রযুক্তি থেকে বিরতি নেওয়া। তাসবিহ, দোয়া, ইস্তেগফার ইত্যাদি দ্বারা মনোযোগ ফিরিয়ে আনা।
৬. কাজের পরিশ্রমে অনুপ্রেরণা না পাওয়া:
শুধু দায়িত্ব মনে করে কাজ করলে অনেক সময় উৎসাহ আসে না।
→ সমাধান: ইসলাম বলে, হালাল জীবিকা উপার্জনও ইবাদত। এক হাদীসে নবীজি এক সাহাবীর খসখসে হাত দেখে বলেছিলেন:
“এই হাত আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ভালোবাসেন।”
এর দ্বারা বোঝা যায়, পরিশ্রমও আল্লাহর সন্তুষ্টির উপায়।
উপসংহার
কাজ ফেলে রাখার প্রবণতা শুধু সময় নয়, বিশ্বাসেরও ক্ষতি করে। কুরআন ও হাদীস আমাদের সতর্ক করেছে এ নিয়ে। একজন মুমিন যদি বুঝে ফেলে—আসল সময় এখন, কাজ এখনই—তবে প্রোক্রাস্টিনেশন নামক শত্রুর কাছে তার পরাজয় নেই।
আসুন, আল্লাহর কাছে দোয়া করি যেন আমরা অলসতা ও দেরি করার বদভ্যাস থেকে বাঁচি। সময়কে কাজে লাগাই, যেন এই দুনিয়া ও আখিরাত—দু’টোতেই সফল হতে পারি।