দোযখের পরিচয়
ইহকালিন জীবনে যে সকল লোক ও তার রাসুলের নিরদেশ পথে পরিচালিত হয় না, এর বিপরীত ভাবে নিজের মন মতো এবং নিজেদের খুশি মতো প্রচালিত হয়। এবং গুনার দিকে এগিয়ে যায়। আল্লাহর ও তার রসুলের কথা কে অমান্য করে। এসব অন্য়ায়ের এবং গুনার ফলে মহান আল্লাহ তাআলার তাদের জন্য নিজের নিকটে শাস্তির বিধান করে যে স্থানটি নির্ধারিত করে রাখা হয়েছে তাকেই বলে দোযখ। এবং ইসলামী শরীয়তে তাকে বলা হয় জাহান্নাম।
আমরা জানি যে আমেদের সমাজে অনেক মানুষ বসবাস করে এবং তারা হযরত মুহাম্মাদ [সঃ] এর পথে চলে কিন্তু জান্নাত ও জাহান্নামের উপর তাদের ধারণা, জান্নাত ও জাহান্নাম কখনো হতে পারেনা বা ভয়ংকর অবস্থা সেগুলি হতে পারে না। তারা এই ধারণা রেখে জীবন-যাপণ করে, কিন্তু সেটা না, মুসলমানের এই ধারণাটা একেবারেই ভুল। কারণ কুরআন শরিফে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-
إن جهنم كانت مرصادا
অর্থাৎ- নিশ্চয় জাহান্নাম ওঁত পেতে রয়েছে। তাহলে এই আয়াত থেকে বোঝা গেল যে, আমাদের উপর জাহান্নামের ব্যাপারে বিশ্বাস রাখা দরকার। কারণ আমরা দিনে রাতে অনেক বড় বড় গুনাহ করে ফেলি। আমাদের কেও জাহান্নামের শাস্তি পেতে হবে।
এই দোযখের শাস্তির অন্যতম উপকরণ হল আগুন। অতএব দোজখীদের সবকিছুই আগুনের দ্বারা তৈরি করা হবে যা কিছু দেখবে সব কিছুই সুধু আগুন। যেখানে নিজের কদম রাখবে সাখানেও আগুন। কেননা বর্তমান এখন কার দুনিয়ার আগুনের সাথে জাহান্নামের আগুন উনসত্তর গুন বেশি তেজস্বী এবং খুব কঠিন আগুন। এবং সেই আগুনের রং হয় অনেক কালো ও একেবারে অন্ধকারময়। এই আগুনের ব্যাপারে হযরত মুহাম্মাদ [সঃ] বলেছে যে– জাহান্নামের আগুন একহাজার বছর তাপ দেয়ার পর সেটি লাল ধারণ করে। এভাবে একহাজার বছর তাপ দেয়ার পর কিছুটা সাদা ধারণ করেছে, আবার একহাজার বছর তাপ দেয়ার পর সেটি কালো ধারণ করেছে। আর এখনও সে কালো ধারণ আছে।
দোযখীদের জন্য পোশাক আগুনের তৈরি হবে, এবং সেই পোশাক গুলো তাদেরকে পরিধান করা হবে। আর তাদেরকে আগুনের তৈরি বিছানাপত্র দেয়া হবে। এবং তাদের খাদ্য হবে জাককুম নামক একটি কাঁটাযুক্ত গাছ, দুনিয়ার জমিনে যার কোন উপমা চলেনা। এবং তাদেরকে পানীয় হিশাবে দেয়া হবে পঁচা এবং দু্রগন্ধযুক্ত পুঁজ ও রক্ত। রাসূলে কারীম [সঃ] ইরশাদ করেছেন – জাহান্নামের সর্ব নিস্ম শাস্তি দানকারি দেরকে একজোড়া আগুনের তৈ্রি জুত পরিধান করতে দেয়া হবে। আর সেই জুতর ফিতা আগুনের তৈরি হবে। এবং সে জুত পরিধান করার পরে সে ব্য়াক্তির মাথার মগজ গলতে আর টগবগ করতে থাকবে। এসব দেখে সে ব্য়াক্তি মনে করবে যে সবথেকে বেশি আমাকে শাস্তি দেয়া হচ্ছে। অথচ পূর্বেই বলা হয়েছিল, এটা সর্ব নিস্মমানের শাস্তি।
কষ্টদান করার নিমিত্তে দোযখিদের জন্য দোযখের সংখ্যা ৭টি। যথা- [১], জাহান্নাম [২], হাবিয়াহ [৩], সাকার [৪], হুতামাহ [৫], সায়ীর [৬], জাহীম ও [৭], লাজা।
এসব শাস্তি ছাড়াও জাহান্নামীদের জন্য আরো অনেক শাস্তি আছে যেমন অনেক বড়ো ও বিশাল আকারের বিষযুক্ত সাপ-বিচ্ছু রয়েছে। যে সকল সাপ-বিচ্ছুর বর্ণনা দিতে গিয়ে হযরত মুহাম্মাদ [সঃ] বলেছেন- যদি ওই সাপগুল দুনিয়ার বুকে সামান্য একটু মাত্র নিঃস্বাস ফেলত, তাহলে কিয়ামত পর্যন্ত সেই বিষের তাড়নাই দুনিয়ার বুকে কোন কিছু উৎপান্ন হতো না গাছ-পালা কন কিছুই শীর্ষটি হতো না। সে সাপগুলো জাহান্নামীদেরকে দংশন করতে থাকবে। এবং সেই সাপের বিষ চল্লিশ-বছর পর্যন্ত থাকবে। দংশনের তোড়ে সে ব্যক্তি সত্তর গজ নীচে পরে যাবে। কিন্তু এত সব শাস্তি কষ্টের মধ্যেও জাহান্নামীদের কখনও প্রান বের হবেনা অর্থাৎ মিরতু বরণ করবে না। বরং জীবন্ত অবস্থায় জাহান্নামীরা এসব কষ্ট ও যন্ত্রণা অনুভব করতে থাকবে। এবং তাদের উপরে এইরকম শাস্তি চলতে থাকবে। কতই না কষ্টদায়ক জাহান্নামের শাস্তি।