পবিত্র কাবা ঘরে হজ্বের ফযীলত
আমরা নিশ্চয় অবগত আছি যে ইসলামের পাঁচটি আরকান, যার মধ্যে একটি হল হজ্জ্ব। কিন্তু হজ্জ্ব বাকি আরকান থেকে অল্প আলাদা, সেটা হল বাকি আরকান সবার উপরে ফরজ কিন্তু হজ্জ্ব সবার উপর ফরজ নয়, শুধু তাদের জন্য ফরজ, যাদের জন্য কাবা ঘরে পৌঁছানোর আর্থিক সামর্থ আছে।
হজ্জ্ব এমন একটি ইবাদাত যার সাহায্যে যে কোনো মানুষ তার গোনাহ ঝরাতে পারে, হজ্জ্ব করার ফলে তার সমস্ত গুনহা মাফ করে দেওয়া হবে; আমরা বায়তুল্লাহর দর্শন করতে পারব, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লামের রওযা শরীফের যিয়ারত করতে পারব।
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন:
ولله على الناس حج البيت من استطاع اليه سبيلا
মানুষের জন্য আল্লাহর আদেশ এই গৃহের হজ্জ্ব করা ফরজ, যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ আছে, আলোচ্য এই আয়াতে গৃহ বলতে কাবা শরীফকে বোঝানো হয়েছে।
একদা যখন হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হল, হে আল্লাহর নবী, আপনি আমাদের হজ্জ্ব ফযীলত সম্বন্ধে কিছু বলেদিন। তখন হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম বলেন কেউ একজন যদি হজ্জ্ব করার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয়, তাহলে তার প্রতিটি ধাপের পরিবর্তে তার দেহ থেকে গুনহা ঝরতে থাকবে, যেভাবে একটা গাছ থেকে পাতা ঝরতে থাকে। যদি সেই ব্যক্তি মদীনায় প্রবেশ করে আমাকে মুসাফাহ করে, সালাম দেয়, তাকে ফেরেস্তাগন সালাম দেবে, যদি সেই ব্যক্রি মিকাত পৌছে গোসল করে, পবিত্রতা অর্জন করে, তাহলে আল্লাহ তাআলা তার গুনহা সে দুনিয়াতে যতগুলো গুনহা করেছিল ও সে যতগুলো খারাপ কাজ করেছিল সেই খারাপ কাজের যতগুলো গুনহা ছিল, সমস্ত গুনহা আল্লাহ তাআলা সেই সময় ঝরিয়ে তাকে পবিত্র করবেন। যদি সে ব্যক্তি লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক বলে, আল্লাহ তাআলা তার জবাবে বলবেন লাব্বাইক সা'দাইক, আমি তোমাকে দেখছি।
যখন সেই বান্দা সাফা ও মারওয়ার ময়দানে অবস্থান করে আল্লাহর দরবারে কিছু চাইবে, তখন মহান আল্লাহ তাআলা তার ফেরেস্তাদের উদ্দেশ্য করে বলবেন, হে আমার ফেরেস্তাগন তোমরা কি আমার বান্দাকে দেখনা, আমার বান্দা যা কিছু চাইছে, তা দিয়ে দাও।
হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম ইরশাদ করেন,
من أتى هذا البيت لا ير إلا اياه فطاف به طواف خرج من ذنوبه كيوم ولدته امه
যদি কোনো ব্যক্তি শুধু মাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্য এই কাবা ঘরের পাশে এল ও তাওয়াফ করল, তাহলে তার শরীর থেকে এমন ভাবে পাপ মোচন করা হবে, যে তার মা তাকে সবে মাত্র জন্ম দিল ।প্রিয় ভায়েরা আমরা অনেক সময় পয়সা অপচয় করি, আমরা যদি এই ভাবে অপচয় না করে বাঁচিয়ে রাখি, জমা করে রাখি, তাহলে অবশ্যই আমরা হজ্জ্ব করার তৌফিক পাবো।
আমাদের প্রয়োজন যে আমরা দুনিয়াতে যতগুলো গুনহা করেছি এবং আখিরাতে যতগুলো গুনহা করবো সমস্ত গুনহা গুলকে মোচন করা, আমাদের প্রয়োজন হজ্জ্ব করার ও সমস্ত গুনহা গুলোকে মোচন করা, আমরা যদি হজ্জ্ব করি তাহলে আমরা হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লামের সাথে মুশাফাহ করতে পাবো। আমাদেরকে আল্লাহ তাআলা তৌফিক দান করুন দুনিয়াতে যতগুলো গুনহা করেছি সমস্ত গুনহা গুলোকে মোচন করার জন্য এবং হজ্জ্ব করার জন্য (আমিন)।