ইসলাম ধর্মে শিক্ষার গুরুত্ব ( তৃতীয় ভাগ)
নারী শিক্ষার ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি
বর্তমান বিশ্বে ধর্ম নামে যত ধর্ম পাওয়া যায় সে সকল ধর্মের মধ্যে একমাত্র ইসলাম ধর্মই যে শিক্ষাকে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে,আর সঠিক গুরুত্ব দিয়েছে তা পূর্বের আলোচনা থেকেই পরিষ্কার বোঝা যায়। আর এও বোঝা যায় যে ইসলাম ধর্ম নারী পুরুষ নির্বিশেষে সকলকে ই শিক্ষা নিতে, জ্ঞান অর্জন করতে প্রেরণা জুগিয়েছে, উৎসাহ দিয়েছে। শুধু মাত্র উৎসাহ ই নয় বরং জ্ঞান অর্জন করা সকলের জন্য অপরিহার্য ও করেছে।
কিন্তু মনে রাখতে হবে শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হলো ব্যক্তি জীবন ও পারিবারিক জীবন সুখী হোক এবং সামাজিক পরিবেশ আনন্দময় হোক। সমাজ থেকে অন্যায় অবিচার দূর হোক, নির্লজ্জতা,অসভ্যতা, তথা নোংরামির সমস্ত দরজা বন্ধ হোক এবং ধোঁকা ও প্রতারণার অবসান ঘটুক। মানব সমাজ শান্তি- শৃঙ্খলার পীঠস্থান হোক এবং পরিবেশ কলঙ্ক মুক্ত হোক।
সুতরাং যে সব শাস্ত্র ও বিদ্যায় এই সকল মহৎ উদ্দেশ্য পূরণ হয়না ইসলাম ধর্মে সে সবের কোন স্থান নেই। অনুরূপ যে ধরনের পঠনপাঠন প্রণালী ভালোর জায়গায় মন্দের জন্ম দেয়, মঙ্গলের পরিবর্তে অমঙ্গল ডেকে আনে, কল্যাণের পরিবর্তে অকল্যাণ, পাপাচার, অশ্লীলতা,ও অনৈতিকতার বীজ বপন করে এমন শিক্ষা ব্যবস্থারও অনুমতি দেওয়া যেতে পারে না। একারণেই শরীয়ত প্রেমী খোদাভীরু ওলামাগণ শিক্ষা দীক্ষার ক্ষেত্রে বেশ কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছেন। যেমন ---
১ শিক্ষনীয় সকল বিদ্যা ও শাস্ত্র ধর্মীয় হতে হবে। অথবা কমপক্ষে ধর্মীয় বিদ্যার সহায়ক হতে হবে। চরিত্র হনন কারী সমস্ত বিদ্যা ও বিষয়াদি বর্জন করতে হবে।
২ ছেলেমেয়েদের মিশ্র শিক্ষা ব্যবস্থা অবশ্যই পরিহার করতে হবে।
৩ মহিলা মাদ্রাসায়/শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পুরুষদের সাধারণ প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে।
৪ মহিলা মাদ্রাসার/ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অভ্যন্তরীন বিষয়াদি শুধু মাত্র মহিলাদের দিয়েই সম্পাদন করতে হবে।
৫ মহিলা মাদ্রাসায়/ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা প্রদান কারী সকলেরই মহিলা হওয়া বাঞ্ছনীয়।
৬ আর যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে মহিলা শিক্ষিকা না পাওয়া যায় তাহলে অগত্যা কোন বয়স্ক পরহেজগার ভরসাযোগ্য পুরুষ শিক্ষকও নিয়োগ করা যেতে পারে। তবে এই নিয়োগ অবশ্যই সাময়িক হবে।
৭ মহিলা মাদ্রাসায়/ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোন শিক্ষক পুরুষ থাকলে পর্দা ও হেজাবের এমন বন্দোবস্ত থাকা উচিত যেন কোন ফেৎনার আশঙ্কা না থাকে।
এ প্রসঙ্গে এটাও মনে রাখা দরকার যে, ইসলাম ধর্ম সাধারণত অন্যদের ভরণপোষণের দায়িত্ব নারীদের ওপর অর্পন করে না। এছাড়াও ইসলাম ধর্ম অপ্রাপ্ত বয়সী ও অবিবাহিত মেয়েদের ওপর রোজগারের দায়িত্ব চাপায়নি। বস্তুত জন্ম থেকে বিবাহ পর্যন্ত তার যাবতীয় প্রয়োজন সহ জীবিকা নির্বাহের দায়িত্ব বাবা বা অন্যান্য অভিভাবকদের ওপর ন্যস্ত। বিয়ের পর এই সবই স্বামীর কাঁধে। বৃদ্ধ বয়সে স্বামী বা সন্তানরা দায়িত্ব পালন করে।