হজরত ফারিদ উদ্দিন গাঞ্জে শাকার (রাঃ)
হজরত ফারিদ উদ্দিন গাঞ্জে শাকার (রাঃ) (১১৭৩- ১২৬৬) সালের ইসলাম ধর্মের এক জন বিখ্যাত অলি ছিলেন।তিনার পুরো নাম হজরত ফারিদ উদ্দিন মাসুদ গাঞ্জে শাকার (রাঃ)। তিনাকে গাঞ্জে শাকার বলেহয় কেননা আল্লাহ তায়ালা তিনাকে মিষ্টি দিয়ে পুরুস্কিত করেছিলেন তায় তিনাকে গাঞ্জে সাকার বলে হয়। তিনি দক্ষিণ এশিয়ার পাঞ্জাব শহরের এক জন ইসলাম ধর্ম প্রচারক ছিলেন , তিনাকে পাঞ্জাবি সাহিত্যের অন্যতম প্রধান পুরোধা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অনেক শিখ তিনাকে শ্রদ্ধার সাথে বাবা ফারিদ বা ফারিদ বা ফারিদউদ্দিন গাঞ্জে শাকার বলে চেনে থাকেন।
জীবনী ১১৭৯ খ্রিষ্টাব্দে মুলতান হতে ১০ কি.মি দূরে পাঞ্জাবের, যেটা বর্তমানে পাকিস্তান, কোথেওয়াল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি চিশতি সুফি তরিকার প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে অন্যতম একজন ছিলেন । তিনার বংশ ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত উমার ইবনে খাত্তাব (রঃ) এর বংশের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত । তিনার পিতার নাম হজরত ইব্রাহিম বিন আদম।
খুব ছোট বয়স থেকে নামজ রোজার প্রতি পাবন্দি ছিলেন হজরত ফারিদ উদ্দিন গাঞ্জে শাকার (রাঃ)। তিনি খুব ছোট বয়সে পিতা কে হারান, এবং তিনার আম্মা জানের কাছে লালিত হন, আম্মা জান খুব পরহেজগার ছিলেন । এবং ছেলেকে আল্লাহর রাস্তায় কুরবান করে দিতে চেয়েছিলেন। হজরত ফারিদ উদ্দিন গাঞ্জে শাকার যখন খুব ছোট্ট ছিলেন তখন আম্মা জান নামজ পড়ার কথা বলেন , ফারিদ উদ্দিন গাঙ্গে শাকার (রাঃ) প্রস্ন করেন যে আম্মা আমি যদি নামজ পড়ি তাহলে আল্লাহ তায়ালা আমাকে কি দিবেন ? তখন হজরত ফারিদ উদ্দিন গাঞ্জে শাকার (রাঃ) এর আম্মা জান বললেন যে যদি তুমি নামায পড় তাহলে আল্লাহ তায়ালা তোমাকে মিষ্টি দিবেন। আসলে হজরত ফারিদ উদ্দিন গাঞ্জে শাকার (রাঃ) মিষ্টি খেতে খুব ভাল বাসতেন।
সেই থেকে তিনি নামজ পড়তে শুরু করলেন যখন নামাজের সময় হত তিনার প্রতিদিন আম্মা জান আগে সেই নামাজের পাটির নিচে মিষ্টি ভরে রাখতেন, এমন ভাবে চলতে থাকে অনেক দিন হটাৎ হজরত ফারিদ উদ্দিন গাঞ্জে শাকার (রাঃ) মাগরিবের নিজে নামজের পাটি বিছিয়ে নামজ পড়তে শরু করে দিয়েছেন, আম্মা জান আল্লাহর দরবারে দোআ করে । হে আল্লাহ আমার কাজ ছিল তাকে তোমার পথে নিয়ে যাওয়া হে আল্লাহ তাকে তুমি হেদায়েত দান করো সে যদি মিষ্টি না পায় তাহলে সে নাময ছেড়ে দেবে বোধয়, হে আল্লাহ তুমি তাকে হিদায়েত দান করো । এই দোআ করতে করতে আম্মা জানের কাছে হজরত ফারিদ উদ্দিন গাঞ্জে শাকার (রাঃ) খুব খুশি মনে আসিল।হজরত ফারিদ উদ্দিন গাঞ্জে শাকার (রাঃ) বলেন মা আগে যে মিষ্টি পেয়েছিলাম এটা তার থেকে বেশি বড় এবং বেশি সুস্বাদু। আম্মা জান হজরত ফারিদ উদ্দিন গাঞ্জে শাকার (রাঃ) বুকে জড়িয়ে ধরে বলেন বেটারে আগে যা মিষ্টি পেতিস সেটা দুনিয়াবি মিষ্টি ছিল কিন্তু আজ কার মিষ্টিটা হল জান্নাতি মিষ্টি ।হজরত ফারিদ উদ্দিন গাঞ্জে শাকার (রাঃ) এর ব্যাপারটা জানতে দেরি হল না, তিনি সেই থেকে এক এক খোদা ভিরু এবং পরহেসগার হয়ে উঠল।
শিক্ষা
তিনি প্রথমিক শিক্ষা লাভ করেন মুলতান থেকে মাদ্রাসার এক বারান্দাতে তিনি এক আকিদার বই নিয়ে পড়তে ছিলেন তখন সেই পথ দিয়ে কুতুবউদ্দিন বখতিয়ার কাকী (রাঃ) যাছিলেন, যিনি ভারতীয় উপমহাদেশের সুপরিচিত এক জন বিখ্যাত আলি। তিনার সঙ্গে দেখা হয় হজরত ফারিদ উদ্দিন গাঞ্জে শাকার (রাঃ) এর, তিনি মুলতান হযে বাগদাদ হতে দিল্লিতে যাচ্ছিলেন। তিনাকে দেখে বললেন এই ছেলে তুমি কি বই পড়িতেছ তখন তিনি বললেন এই বই। বখতিয়ার কাকী (রাঃ) বললেন আমার সঙ্গে যেতে চাও যদি যাও তাহলে আমি তোমাকে মারিফাতি শিক্ষা প্রদান করব তখন তিনি বলেন আমি মায়ের কাছে ইজাজাত নিয়ে আসি আম্মা জান ইজাজাত দিল এবং বখতিয়ার কাকী (রাঃ) এর পথপ্রদর্শকের কারনে একটি বিখ্যাত আল্লাহর আলি হয়ে গেল।তিনি বার বসর এক জঞ্জলে এক কুয়াতে জুলন্ত আবস্তাতে আল্লাহ তায়ালার ইবাদাতে কাটিয়ে ছিলেন।
কারামত।
কারামাত বলতে বোঝাই কোন অলোয়কিক ঘটনা নাবীদের যে অলোয়কিক ঘটনা থেকে থাকে তাকে মুজেজা বলাহয় আর আল্লাহর আলি দের দারা যে অলোয়কিক ঘটনা ঘটে থাকে তাকে কারামাত বলাহয়। হজরত হজরত ফারিদ উদ্দিন গাঞ্জে শাকার (রাঃ) একদা নদী পার করবার জন্য যখন কোন নৌকা পাছিলেননা তখন তিনি এক কাগজের নৌকা বানিয়ে তার উপর চড়ে পারাপার হয়েছিলেন ।এছাড়া তিনার আরও অনেক কারামাত আছে ।
মৃত্যু
আল্লহ তায়ালা কোরান মাজিদ এ বলেছেন যে আল্লাহর আলি গন মরে না বরং তারা কাল কিয়ামত পর্যন্ত জীবিত। তিনারা কেবল এই দুনিয়া থেকে পর্দা নেন। হজরত ফারিদ উদ্দিন গাঞ্জে শাকার (রাঃ) পরলোক গমন করেন ৭ই মে ১৭৬৬ সাল যেটা ১৩ সেন্তুরির আগে।