মুসলিমের সম্পর্ক
      মহান আল্লাহ তা'আলা তিনার সমস্ত মাখলুকাতের সর্ব উত্তম মাখলুক হয়ে ইনসান ( মানুষ ) জাতীকে বানিয়েছেন। এই সমস্ত সৃষ্টির সর্ব উত্তম সৃষ্টি হল– আল্লাহ তাআলাহর সর্ব প্রিয় অতি কাছের বান্দা, সারা বিশ্বের নাবী  হজরত মুহাম্মাদ মুসতাফা নাবী কারিম ﷺ । এর অর্থ হল–আমাদের শেষ নাবী হজরত মুহাম্মাদ ﷺ কে মহান রাব্বুল আ-লামিনের সৃষ্টির সর্ব শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হিসেবে বানিয়েছেন। মহান রাব্বুল আ-লামিন কুরআন মাজিদে ইরশাদ করেন –হে রাসুল আমি তোমাকে দুনিয়াতে প্রেরণ করেছি দুই জগতের রপমত হয়ে নচেত শুধু মাত্র তোমার উম্মাতের জন্যে রহমত হয়ে। হে আমার বন্ধু –আমি তোমাকে সমগ্র বিশ্বের জন্য রহমত ও করুণা করে পাঠিয়েছি।
সত্য সনাতন ধর্মগ্রন্থ কোরআন মাজিদ হতে একখানি সুস্পষ্ট আয়াত পাক উজ্জ্বল হয়ে উঠে চলেছে মহান মাবুদ নিজের পবিত্রতম রাসুলের সম্বোধন করে বলেন –তুমি অবশ্যই মহান চরিত্রের অধিকারী। নাবী ﷺ হলেন সর্ব উত্তম চরিত্র আখলাকের উত্তরআধিকারী। কুরআন শরীফে উল্লেখিত হয়েছে যে, নাবী ﷺ যা বলতেন তা তিনি আগে নিজে করতেন।
মহান খোদাঅন্দ কুদ্দুস তিনার হাবিবের মর্যদা প্রকাশ করার জন্যে  কোরআন মাজিদে ঘোষনা করেন  –হে রাসুল আপনি বলেদিন যে তোমরা যদি মহান আল্লাহ তা'আলাকে ভালোবাসতে চাও, আল্লাহ তা'আলাহর প্রিয় বান্দা হতে চাও তাহলে –আমাকে অনুস্বরন করো, আমাকে ভালোবাসো আল্লাহ তা'আলা তোমাদের ভালোবাসবেন।
আত্মীয়তার সম্পর্কের নির্দিষ্ট কোন সংজ্ঞা নেই। তার স্বভাব, ধরন, কাল, অঞ্চল ও পাত্র ভেদে প্রচলিত রীতি অনুযায়ী নির্ধারিত হয়। নির্দিষ্ট কোন অঞ্চলের সমাজ –সংস্কৃতির  সঠিক রীতি যাকে সম্পর্ক রক্ষা-ক্ষুণ্ন  করা বলে, বিবেচনা করে, সেই সমাজে সম্পর্ককে বিচার সেই রীতি অনুসারেই হবে।
               একটি সমাজ কতটা সুখী ও সুস্থতা নির্ধাণের একটি উপায় সেই সমাজের সম্পর্কগুলো বিচার করে।  সেই সমাজ ও সংস্কৃতি কীভাবে তার সম্পর্কগুলো সাজাচ্ছে, সামাজিক সম্পর্কগুলোকে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে, সম্পর্কের ক্ষেত্রে তার মূল্যবোধগুলো কি ? সম্পর্ক একটা খুবই নৃতাত্ত্বিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ব্যাপার। সমাজ ও সংস্কৃতির অনিবার্য উর্যপাদান। সামাজিক সম্পর্কগুলো যত উন্নত হবে তার সাপেক্ষেই গড়ে উঠবে সে সমাজের উন্নতি-সফলতা-সুখ। তাই পৃথিবীর  সম্পর্কের বিষয়টিকে একটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ইস্যু বলে বিচার করে। এবং এই বিবেচনা থেকেই তাকে পাঠ করে অভ্যস্ত।
                মুমিন একটি আরবি শব্দ, যা মূলত আরবি ঈমান শব্দটি থেকে এসেছে । এর শাব্দিক অর্থ "বিশ্বাসী" এবং এরদ্বারা একজন কঠোরভাবে অনুগত মুসলিমকে বুঝায়, যে অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে ইসলামকে নিজের অভ্যন্তরের এবং বাহিরের সকল কর্মকান্ডে ধারণ করে এবং আল্লাহ তাআলার ইচ্ছার কাছে নিজেকে পূর্ণরূপে সমর্পণ করে । নারী মুমিনদের ক্ষেত্রে মুমিনা শব্দটি ব্যবহৃত হয়।
                ইসলামের সমাজ ও সামাজিক-সম্পর্ক ভাবনা। আত্মীয়তার বন্ধন নিছক কোন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিষয় নয়। বরং ইসলামের ভাবনায় তা ধর্মদর্শনের মৌলিক বিষয়সমূহের অন্যতম একিট। নামাজ , রোজা , হজ্ব ও যাকাতের মতো প্রধান এবাদতগুলোর ন্যায় গুরুত্ব দিয়ে ইসলাম বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছে। তার ধরন-স্বভাব মাত্রা নির্ধারণ করে দিয়েছে। তা রক্ষা ও ক্ষুন্ন করার সাপেক্ষে শাস্তি ও প্রতিদানের ঘোষণা দিয়েছে। 
                ইসলাম মনে করে, যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে সম্পর্ক রক্ষা করতে চায় তাকে অবশ্যই আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করতে হবে। কারণ যে ব্যক্তি আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করে আল্লাহ তার সাথে সম্পর্ক রক্ষা করেন। যে আত্মীয়তা ছিন্ন করে আল্লাহ তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেন। যে ব্যক্তি জান্নাতে যেতে চায়, ইসলাম মনে করে, নামাজ-রোজা আদায় করার পাশাপাশি তাকে এইসব সামাজিক সম্পর্কগুর্ক লো রক্ষা করতে হবে। 
             কারণ, এক সাহাবী  রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এই প্রশ্ন করে যে –কি আমল করলে জান্নাতে যাওয়া যাবে  বলেছিলেন- ‘আল্লাহর ইবাদত কর, তার সাথে শরীক করো না, নামাজ ভালো ভাবে আদায় কর এবং যাকাত দাও। আর আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা কর। আল্লাহ তায়ালা আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন: এবং আল্লাহ যে সম্পর্ক বজায় রাখতে আদেশ করেছেন তারা তা বজায় রাখে।
               মুসলমান বা মুসলিম আরবি অর্থ:- স্বইচ্ছায় আত্মসমর্পণকারী, অনুগত হলো সেই লোক যে নিজের ইচ্ছাকে আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণর্প করে ৷  তবে বর্তমানে মুসলিম বলতে একেশ্বরবাদী ইব্রাহিমীয় ধর্ম ইসলামের অনুসারিদের বা ইসলাম পালনকারীদের বুঝানো হয় বা যারা ইসলামের অনুসরণ করে তাদের মুসলমান বা মুসলিম বলা হয়। মুসলমানেরা তাদের পবিত্র গ্রন্থ কুরআনকে আল্লাহর বাণী বলে মনে করে যা ইসলামের নবী ও রাসূল মুহাম্মদ উপর অবতীর্ণ হয়েছে। সকল মুসলমানরা ঐতিহ্যবাহী বিবরণীতে বর্ণিতর্ণি মুহাম্মদের শিক্ষা (সুন্নাহ) ও হাদিস অনুসরণ করে। মুসলিম আরবি শব্দ যার বাংলা অর্থ আত্মসমর্পণর্পকারী এবং এর বাংলা পরিভাষা হিসেবে মুসলিম ও মুসলমান দুটি শব্দই সমান ভাবে ব্যবহার হয়।
                 ইসলাম একটি আরবি পরিভাষা। এর আভিধানিক অর্থ –আনুগত্য  করা, আত্মসমর্পণ করা, অনুগত হওয়া, কোনো কিছুমাথা পেতে নেয়া। এটি সালম, সিলম বা সিলমুন মূল ধাতুথেকে এসেছে। যার এক অর্থ- শান্তিসন্ধি, সমর্পণ ও নিরাপত্তা। যেহেতু আত্মসমর্পণের মাধ্যমে শান্তি ও নিরাপত্তা লাভ হয়, তাই একে ইসলাম বলা হয়। অন্য কথায়, ইসলামের অর্থ আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করে তার নির্দেশ মেনে নেয়ার মাধ্যমে ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে শান্তি এবং নিরাপত্তা অর্জন করা। ‘ইসলাম’ শব্দটিতে আল্লাহ তাআলার ধর্মের মূলতত্ত্ব নিহীত রয়েছে। আরবি ভাষায় ইসলাম বলতে বোঝায় আনুগত্য, বাধ্যতা ও আত্মসমর্পণ। ইসলাম গ্রহণ করার মাধ্যমেই আল্লাহর কাছে সমর্পণ করতে হয়। অতএব ইসলামের মূল মর্মবাণী হলো মানুষের সর্বস্ব আল্লাহ তাআলার কাছে সোপ্রদ করে দেওয়া। তার সব শক্তি, যাবতীয় কামনা –বাসনা , আশা, ভাব-আবেগ, তার সব প্রিয় বস্তু; এক কথায় মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত যা কিছুআছে সব কিছুআল্লাহ তাআলার কাছে অর্পণ করার নামই হলো ইসলাম। 
       ভালো সম্পর্ক গঠনের একটি মনোরনজন পদ্ধতিটি হলো –নিজেদের মধ্যে সালাম প্রোচলন করা। একে ওপরে উপর সালাম প্রদান করা, যে কোনো সময়ে যে কোনো ব্য়াক্তির উপর সালাম দেওয়া। যদি কোনো অপরিচিত  ব্যক্তিকে দেখা হয় তবেও তিনাকে সালাম দেওয়া আমাদের অপরিহার্য। মূলত আমাদের উপর একদম  বিশেষ কর্তব্যটি হলো যে আমাদের  পরিচিত ব্যক্তি ও  নিজেদের আত্বীয়দের প্রতি সালাম দেওয়া থেকে না বঞ্চিত থাকা কিন্তু আফসোস যে আজ বর্তমান আমরা এই কর্তব্যটিকে দেখেও এড়িয়ে যাচ্ছি। এর জন্য বর্তমান আমাদের মধ্যে অশান্তির ছায়া নেমে এসেছে। আমাদের সম্পর্কটিকে ভালো রাখার জন্যে আমাদের প্রতি একান্তই জরুরি যে আমরা আমাদের মধ্যে সালাম প্রোচলন করি।

Related Posts

Leave A Comment

Voting Poll

Get Newsletter