ফাযায়েলে দরুদ ও সালাম এবং আলৌকিক ঘটনাবলী
পবিত্র দরুদ ও সালাম মহান আল্লাহ তায়ালার এক গুপ্ত খাজানার মধ্যে এমন এক খাজানা, যা মহান রব্বুল আলামিন তিনার বান্দাদেরকে দান করেছেন; তিনার মহবুব এর উপর পাঠ করার জন্য। এর দ্বারা সকল মুসলিম নেকি অর্জন করতে পারবে ।আল্লাহ তায়ালা হলেন প্রেমিক এবং তিনার প্রেমাস্পদ হলেন বিশ্ব নবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি অসাল্লাম। যেমন দেখা যায়, যে প্রত্যেক প্রেমিক সবসময় পর্থনা করে, যে সব মানুষ তার মাহবুবকে ভালবাসে এবং সকলে যেন তার সাহায্য করে ও সারাক্ষণ তার স্মরণ করে। আর যখন তার প্রেমাস্পদ কে অপরের মুখে শুনে তখন প্রেমিক খুশি হয়, ঠিক এরকম আল্লাহ্ তায়ালা চাই যে তার মাহবুবকে সর্বদা স্মরণ করে এবং দরুদ ও সালাম পাঠ করে। কেননা যে ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম এর উপর দরুদ শরীফ পাঠ করলো, সে ইহ-পরকালে সন্মানীয় হয়ে গেল ।
কেননা আল্লাহ তায়ালা এবং তিনার ফেরেশতাগণ মিলে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি অসাল্লাম এর উপর দরুদ পাঠ করে থাকেন ।দরুদ শারীফ পাঠ করা এমন এক উত্তম কাজ যা বান্দাকে আল্লাহর সাথে মিলিয়ে দেয় ।
দরুদ শরীফ ও সালাম পাঠ করলে কি হবে ?
দরুদ শারীফ ও সালাম দ্বারা মানুষের গুনাহ মাফ হয়, বালা মুসিবত দূর হয়, রূহানী পেরেশানি দূর করে দেয়, নিজের সম্মান বৃদ্ধি হয়, সব কিছুতে বরকত হয় যেমন টাকা পয়সা, জান্নাত এর রাস্তা সহজ করে দেয়, জাহান্নাম এর রাস্তা রোধ করে দেয়, মন কে ঠাণ্ডা করে দেয়, আল্লাহর কাছা কাছি হয়ে যায়, হ্দ্বয়ের কালিমা দূরিভূত করে, নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি অসাল্লাম কে স্বপনে দেখার সুযোগ হয় ।
হাদিস- নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি অসাল্লাম বলেন: যে ব্যক্তি আমার উপর এক বার দরুদ শরীফ পাঠ করবে, আল্লাহ তায়ালা তাঁর উপরে ১০ বার দরুদ পরবেন। ১০ টি নেকি লেখবেন এবং ১০ টি গুনাহ মাফ করে দেবেন ।
এবং নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি অসাল্লাম বলেন: যে ব্যক্তি আমার উপরে দরুদ শারীফ পাঠ করে সেই দরুদ সেই ব্যক্তির হ্দ্বয় কে নেফাক্ব থেকে এমন ভাবে পাক করে দেয় যেমন পানি কাপড়কে পাক করে দেয়।
আমাদের অনেক সময় কিছু কাজ থাকে না, সেই সময় যদি আমরা নবীর প্রতি দরুদ ও সালাম পাঠ করি তাহলে নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা আমাদের জান্নাতে প্রবেশ করে দেবেন। কিন্ত এই যুগের মানুষরা নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি অসাল্লামের নাম নিচ্ছে, মিছিলে নবী কা “দামান নেহি ছরেঙ্গে” বলে নারাহ লাগাচ্ছে কিন্তু একবার ও নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি অসাল্লাম এর উপর দরুদ পাঠ করে না ও সালাম পরে না। তার জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি অসাল্লাম এরশাদ করেছেন যে, সব থেকে বড় 'বাখিল' (কৃপণ)ব্যক্তি সেই যে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি অসাল্লাম এর নাম শুনলো, কিন্তু দরুদ ও সালাম পাঠ করল না । এবং আরও বলেন যে,যে ব্যক্তি নবী করীম (সাঃ) এর উপর দরুদ শরীফ পাঠ করতে ভুলে গেলো নিশ্চয়ই সে জান্নাতের রাস্তা ভুলে গেল ।শুধু তাই নয় নবী (সাঃ) বলেছেন...
انَّ أولى الناس بي يوم القيامة اكثرهم عليّ صلاةً
সেই দুরূদ কিয়ামতের দিনে ঐ ব্যক্তি আমার সঙ্গী হওয়ার সব থেকে বেশি অধিকারী হবে যে আমার প্রতি বেশি দরুদ ও সালাম পাঠ করবে ।
আলৌকিক ঘটনা
একটি হাদিসের গল্প থেকে বুঝতে পারি যে, একদা এক সময় নবী করীম (সাঃ)ও আলি (রাঃ) এক রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলেন রাস্তার পথে যাওয়ার সমায় আলী (রাঃ)এক দিক থেকে দরুদ শুনতে পায় তখন সে নবী (সাঃ) কে জিজ্ঞেস করে বলে, ইয়া নবী!এটি কিসের শব্দ? তখন নবী সাল্লালাহু আলাইহি ওসাল্লাম বলেন: এটি একটি পাথরের আওয়াজ সে আমার উপর দরুদ পাঠ করছে । তাহলে,যদি একটি পাথর নবী সাল্লালাহু আলাইহি ওসাল্লাম এর উপর দরুদ পরতে পারে তাহলে আমরা কেন পারব না । কেননা দরুদ পাথকারিদের জন্য শাফায়াত ওয়াজিব হয়ে যাবে,দরুদ পাঠকারী আল্লাহ পাকের গজব হতে সে হেফাজতে থাকবে ও তার বংশে বরকত প্রাপ্ত হবে । আমরা যদি দুনিয়ায় এবং আখেরাতে সফলতা অর্জন করতে চাই, তাহলে আমাদের কে শারিয়াত মানার সাথে নবীর প্রতি দরুদ ও সালাম পাঠ করা অপরিহার্য। আল্লাহ আমাদের তৌফিক দেন –আমিন ।