মোল্লা আহমাদ জিওন ( রাহমাতুল্লাহ )

ভূমিকাঃ

            মোল্লা আহমাদ জিওন ( রাহমাতুল্লাহ ) তিনি ১১ শতাব্দীর একজন বড় ফাকিহ আর মুফাসসির ছিলেন। তিনি একজন বিখ্যাত গোত্র থেকে ছিলেন । তিনার গোত্র হল ( আহমেদ বিন শেখ আবু সাইদ বিন আব্দুল্লাহ বিন শেখ আব্দুর রাজ্জাক বিন শাহ মাখদুম ) তিনার গোত্র শেষ পযন্ত হাযরত আবু বাক্কার সিদ্দিক রাদি আল্লাহ আনহু থেকে পৌঁছাই। তিনি মুল্লা যিওান নামে পরিচিত, তিনার আসল নাম আহমেদ আর তিনার বাবার নাম আবু সাইদ।

  বাসস্থান জন্ম গ্রহনঃ

           তিনার দাদা আব্দুল্লাহ এবং তার দাদা আমজাদ মাখদুম তিনি শেখ সালাহুদ্দিন দেহলাবির ছেলেদের মধ্যে একজন ছিলেন, তিনার দাদা দিল্লী থেকে আমিটি জেলাতে এসে বাস স্থান করেছিলেন এবং সেখানে মোল্লা জিওন রাহমাতুল্লাহ তিনি জান্ম গ্রহন করেন ১০৪৮ হিজরিতে।

শিক্ষাঅর্জনঃ

            প্রথমত তিনার পিতা ও মাতা তিনাকে খুব সৎ ব্যবহার ও সদ-আচারণ করে লালান পালন করেছিলেন, শিক্ষাঅর্জনের উপলক্ষে তিনার পিতা ও মাতা তিনাকে চার বছর বয়সেই তিনাকে কুরআন মাজিদ  হিফয করানো জন্য শুরু করে দেন এবং তিনার সাত বছর বয়সে তিনি পুরো কুরআন মাজিদ মুকস্ত করেনে তার পর আরো শিক্ষাঅর্জন করার জন্য সেখ মুহাম্মাদ সাদিক রামাহুল্লাহর কাছে জান সেখানে অনেক শিক্ষাঅর্জন করার পরে তিনি অতি বেশি শিক্ষাঅর্জন করার জন্য মোল্লা লাতিফুল্লাহর কাছে শিক্ষাঅর্জন করেন। এর পরে তিনি বাইশ বছর বয়সে তিনি সেখান থেকে বিদায়ী নেয়ে নেয়। অবশেষে শিক্ষাঅর্জন করার পরে তিনি নিজের আমিটি জেলাই ফিরে আসেন এবং সেখানে তিনি পড়াতে শুরু করেন।তিনার যখন ১৬ বছর বয়স তখন তিনি তাফসীরাতুল আহমাদিয়া তিনার নিজের জেলাই লিখেছিলেন। এই তাফসীরটিতে কুরআনের আয়াত গুলির মধ্যে শুধুমাত্র ৫০০ আয়াতকে উল্লেখ করেছেন যে আয়াত দ্বারা ফিকহের মাসআলা বার করা হই এবং তার পরে তিনি চারটি মাযহাবের মাসআলাকে উল্লেখ করেছেন , তার মধ্যে  হানাফি মাসআলাকে গুরুত্বপর্ণ ভাবে উল্লেখ বা ব্যাখ্যা করেছেন ।

            শুধু তাই নই তার পরে তিনি সেই মাসআলার হুকুম এবং শারিয়াতের হিসেবে মাসআলাকে দলীলের সঙ্গে ব্যাখ্যা করেন। আর এই তাফসীরটি  লিখার পরে তিনি বড়ো এবং উচ্চস্থান লাভ করেন । আর এই ফানের মতন আর দুটি ফানের তাফসীর আছে সেগুলি হলঃ  ১ – “আহকামুল কুরআন “ এই নামে পরিচিত লিখেছেন শেখ আবু হায়য়ান আল উন্দুলুসি । ২ - আহকামুল কুরআন  লিখেছেন “ শেখ আবু বাক্কার আজ জাসসাসি ।

তিনার যাত্রা           

            আর তিনের যখন ৪০ বছর বয়স ছিল তখন তিনি দিল্লি গিয়ে ছিলেন এবং তিনি ইসলামের প্রোচার করতে লাগলেন এবং তার সাথে সাথে তিনি অনেক বিখ্যাত হয়েছিলেন। এবং সেই যুগে মুগল রাজা অরঙ্গজেব রাজত্ব চলছিল সেখানে মোল্লা জিওন রাহমাতুল্লাহ আসেছিল এবং তিনের সাথে সাক্ষাতও করেছিল এবং তিনের সৎ ব্যাবহার করেছিলেন এ দেখে তিনার পত্রকে শিক্ষাঅর্জন করার জন্য তিনার কাছে পাঠাতেন । এবং তিনিও তার কাছে শিক্ষাঅর্জন  করেছিলেন ।তিনার যখন ৫৮ বয়স হয়ে যায় তখন তিনি মক্কা ও মদিনা যাত্রা করার জন্য় আশা রেখেছিল, এবং তিনার আশা আল্লাহ তাআলা কবুল করেন। তিনি ওখানে যান এবং ওখানে ৫ বছর থেকে ছিলেন এবং তিনি এক বার তিনার পিতার পরিবর্তে হজ্জ করেছিলেন, আর তিনার মাতার পরিবর্তে হজ্জ করেছিলেন, তিনি ওখানে থেকে আল মিনার বইটিকে ব্য়াক্ষা করেছিলেন ও বইটির নাম নুরুল আনওয়ার নামে পরিচিত। সেই বইটি আমাদের যুগে এই নামেই পরিচিত রয়েছে, ওখানে তিনি অনেক অনেক বড়ো বড়ো আলিমে দিনদের সাথে সাক্ষাত করেন এবং তাদের সাথে শিক্ষাঅর্জনও করেছিল।

তিনার বাইআত :

            মোল্লা জিত্তান রাহমাহল্লাহ তিনি শেষ ইয়াশিন বিন আব্দুর রাজ্জাক ক্বাদেরীকে বাইআত করেছিলেন।

মদিনা শরীফে জিয়ারত

            তিনার বিখ্য়াত বই সেগুলি নিজে লিখে ছিলেন তার মধ্য়ে আত-তাফসীরাতুল আহমাদি, নুরুল আনওয়ার,  মনাকিবুল আওলিয়া ও আদাবে আহমাদি।তিনি নিজে বলেছেন যে –আল্লাহ তাআলা আমাকে মদিনা যাওয়ার জন্য় আমাকে একটি কারণ বানিয়ে দিয়েছিলেন যখন আমি ওখানে পোঁছাই তখন আমি ওখানকার মানুষকে আল-মিনার বইটির ব্য়াপারে বলি তখন ওখানকার বড়ো বড়ো ইমাম ও বক্তারা আমাকে এই বইটির ব্য়াক্ষা লিখতে বলে, আমি আল্লাহর তওফিকে এই বইটির ব্য়াক্ষা করে তার নাম নুরুল আনওয়ার দিয়েছিলাম। এই নুরুল আনওয়ার বইটি আমি রাবিউল আউওয়াল মাসে ১১০৫ হিজরিতে শুরু করি এবং সেই সালে ৭ জামাদুল উলাতে আমি বইটির লেখা শেষ করি। তখন আমার বয়স ৫৮ বছর।

            মোল্লা জিত্তান রাহমাহল্লাহ তিনি খুব ভালো ভাবে আল-মিনার এর ব্য়াক্ষা করেছেন, কারণ, মাতিন তিনি কোনো জায়গায় আগে মাতান নিয়ে এনেছেন, এবং কোরআন ও হাদিস কে নিয়ে ব্য়াক্ষা বা দলীল দিয়েছেন, বা বড়ো বড়ো আলেমদের কথা কেঁটে অন্য় কোনো দলীল দিয়েছেন আরো অন্য় জায়গায় অনান্য় ভাবে বলেছেন। তাই মোল্লা জিত্তান রাহমাহল্লাহ তিনি প্রথমে  মাতান কে ব্য়াক্ষা করেছে। তার পরে বড়ো বড়ো আলেমদের মাজহাব কে  ব্য়াক্ষা করেছেন । আর ভালোভাবে সমস্ত কিছু ব্য়াক্ষা করেছেন।

 

তিনার শিক্ষক এবং শেখঃ

          তিনার বিখ্যাত ৪ টি শিক্ষক ছিলেন তার মধ্য তিনার প্রথম শিক্ষক তিনার পিতা মোল্লা আবু সাইদ আল আমিটি , এবং তিনি খুব ভালো , সৎ , মুত্তাকি এবং বিখ্যাত মরশিদ ছিলেন ।

 ২ - শেখ লাতিফুল্লাহ ,

 ৩ - শেখ  মুহাম্মাদ সদিক এবং

৪ - আল্লামা মুফতি মুহাম্মাদ সাইদ হুসাইনি লাখনায়ি।

 

তিনার কিতাবঃ

         তিনি মোট বারোটি কিতাব  তার মধ্যে আদাব , তাসাওুফ , উসুলে ফিকহা , তাফসীরে এবং কবিতাতে  লিখেছেন । তার মধ্যে কিছুটা কিতাব আমি উল্লেখ করব ।

 ১ -  নস্খাতু আদাবু আহ্মাদি ( এই কিতাবটি তিনি তিন বছরে লিখেছেন ১০৬০ থেকে ১০৬৩ পযন্ত )।

২  -  খুতবাতে যুম্মা ও ঈদাএন ( এই কিতাবটি তিনি তিন বছরে লিখেছেন ১০৬০ থেকে ১০৬৩ পযন্ত )।

৩ –রিসালাহু মুনতাখাবাতে শাতিবি।

৪ –আল-তাফসীরাতুল আহমাদীয়া ( এই কিতাবটি ১০৬৮ এত সালে লিখেছিলেন)।

৫ –নুরুল আনওয়ার ।

৬ –সাওয়াইমে বার্রে মুজাযাতে লাওয়াইহি ( এই কিতাবটি তিনি দুই বছরে লিখেছেন ১১১২ থেকে ১১১৪ পযন্ত )।

৭ –মানাকিবে আওলিয়া ( এই কিতাবটি তিনি চার বছরে লিখেছেন ১১২০ থেকে ১১২৪ পযন্ত )।   ৮ - খুদ নাওয়াশিত সাওয়ানিহে শিমলা।

৯ –মাসনায়ি ।

১০ –নাআতিহে কাসাইদ।

১১ –দিওয়ান ।

১২ -আল-কাসাদুল আরাবিয়া।

ইন্তেকাল :

       তিনার ইন্তেকাল ৮ জিলকাআদা সোমবারে ১১৩০ সালে দিল্লিতে হয়েছিল। কিন্তু তিনার দৃহ্য কে তিনার জেলা আমেঠিতে  যোহরের নামাযের পরে দাফন করা হয়।

Related Posts

Leave A Comment

Voting Poll

Get Newsletter