হাসান আল-বাসরী (রহিমাহুল্লাহ): ইসলামের সূচনালগ্নের তাকওয়া ও নিষ্ঠার প্রোজ্জ্বল কণ্ঠস্বর
ভূমিকা
إِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِندَ اللَّهِ أَتْقَاكُمْ
“নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে আল্লাহর সমীপে সর্বাধিক সম্মানিত সে-ই, যে তোমাদের মধ্যে সর্বাধিক আল্লাহভীরু (তাকওয়াশীল)।” — (সূরা আল-হুজুরাত, ৪৯:১৩)
ইসলামের সেই পুণ্যময় সূচনালগ্নে এমন বহু প্রাতঃস্মরণীয় মনীষীর অভ্যুদয় ঘটেছিল, যাঁদের পবিত্র হৃদয় আল্লাহর ভয়ে প্রকম্পিত হতো এবং যাঁদের সমগ্র জীবন ছিল নিষ্ঠা (إخلاص – ইখলাস) ও আল্লাহ-সচেতনতা (تقوى – তাকওয়া)-এর এক জীবন্ত প্রতিচ্ছবি। সেই স্বর্ণযুগের নক্ষত্রদের মধ্যে অন্যতম উজ্জ্বলতম জ্যোতিষ্ক হলেন হাসান আল-বাসরী (রহিমাহুল্লাহ)। নবী করিম ﷺ-এর সাহাবিদের পুণ্যময় সান্নিধ্যে বেড়ে ওঠা এই মহান তাবেঈ এমন এক প্রজন্মের প্রতিনিধি, যাঁরা কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে আত্মশুদ্ধির পথে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।
এই নিবন্ধটি তাঁর জীবন, চারিত্রিক দৃঢ়তা, ও সেই প্রজ্ঞাময় শিক্ষার এক প্রতিচ্ছবি, যা আজও মুমিনের অন্তরে নৈতিক ও আত্মিক জাগরণের দিশারী হয়ে রয়েছে।
প্রারম্ভিক জীবন ও শিক্ষাগত পটভূমি
হাসান আল-বাসরী (রহ.) জন্মগ্রহণ করেন ২১ হিজরি (৬৪২ খ্রিষ্টাব্দ) সনে, মদীনা মুনাওয়ারায়, খিলাফতের স্বর্ণযুগে হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)-এর শাসনামলে। তাঁর পিতা-পিতামহ নবী ﷺ-এর পরিবারের মুক্তদাস ছিলেন। তাঁর শৈশবের পবিত্র পরিমণ্ডলটি গড়ে উঠেছিল নবী ﷺ-এর সহধর্মিণী, উম্মুল মু'মিনীন হযরত উম্মে সালামা (রা.)-এর স্নেহছায়ায়, যা তাঁর চারিত্রিক বুনিয়াদকে শুরু থেকেই পরিশুদ্ধ করেছিল।
শৈশব থেকেই তিনি সরাসরি সাহাবিদের জ্ঞানের প্রস্রবণ থেকে পান করেছেন। তিনি হযরত আলী ইবনু আবি তালিব (রা.), আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রা.), এবং আনাস ইবনু মালিক (রা.)-এর মতো মহান সাহাবিদের নিকট শিক্ষা গ্রহণ করেন। পরবর্তীকালে তিনি বসরায় গমন করেন, যা সেই যুগে জ্ঞান-বিজ্ঞানের এক আলোকবর্তিকা ছিল। সেখানেই তাঁর প্রজ্ঞা ও আধ্যাত্মিকতার পূর্ণ বিকাশ ঘটে এবং তিনি হয়ে ওঠেন তাঁর যুগের সর্বজনশ্রদ্ধেয় আলেম, মুহাদ্দিস, প্রাজ্ঞ উপদেশক ও এক মহান সুফি মনীষী।
তাকওয়া ও আল্লাহভীতি
হাসান আল-বাসরীর জীবন ছিল তাকওয়ার এক মূর্ত প্রতীক—প্রতিটি শ্বাসে আল্লাহর উপস্থিতি অনুভব করার এক বিরল অনুশীলন। তাঁর সমসাময়িকগণ বর্ণনা করেন, যখনই তিনি আখিরাত বা কিয়ামতের বিভীষিকা নিয়ে আলোচনা করতেন, তাঁর নয়ন অশ্রুসিক্ত হতো এবং তাঁর পারিপার্শ্বে উপস্থিত শ্রোতাদের হৃদয়ও বিগলিত হয়ে ক্রন্দন করত।
তাঁর সেই বিখ্যাত উক্তি মুমিনের হৃদয়কে নাড়িয়ে দেয়:
“একজন মুমিন সর্বদা নিজের আমল প্রসঙ্গে চিন্তিত থাকে এবং আশঙ্কা করে যে, তাঁর কর্ম আল্লাহর দরবারে কবুল হলো কি না।”
তাঁর তাকওয়া কেবল নিষ্ক্রিয় ভীতি ছিল না, বরং তা ছিল এক সক্রিয় চালিকাশক্তি। তিনি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নিজের প্রতিটি কর্মকে পরিশুদ্ধ করতেন। তাঁর জীবনযাত্রা ছিল অনাড়ম্বর, ভাষা ছিল বিনয়াবনত, এবং চরিত্র ছিল সরলতায় সমুজ্জ্বল। তাঁর জীবন ছিল পবিত্র কোরআনের এই বাণীর প্রতিচ্ছবি:
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَلْتَنظُرْ نَفْسٌ مَّا قَدَّمَتْ لِغَدٍ
“হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং প্রত্যেক ব্যক্তি যেন চিন্তা করে যে, সে আগামীকালের জন্য কী প্রেরণ করেছে।” — (সূরা আল-হাশর, ৫৯:১৮)
নিষ্ঠা (ইখলাস) ও আত্মশুদ্ধি
তাঁর প্রজ্ঞার কেন্দ্রবিন্দু ছিল ইখলাস বা নিখাঁদ নিষ্ঠা। তিনি প্রায়শই বলতেন:
“যে ব্যক্তি নিজের ভেতরের ত্রুটি অবলোকন করতে পারে না, সে নিঃসন্দেহে পথভ্রষ্ট হয়ে গেছে।”²
তিনি নিভৃত রজনীতে ‘মুহাসাবাতুন নাফস’ (আত্মসমালোচনা)-এ রত হতেন। রাতের সালাতে দণ্ডায়মান হয়ে তিনি আল্লাহর দরবারে ক্রন্দন করতেন—এই ভয়ে, পাছে সামান্যতম অহংকার বা লোকদেখানো মনোবৃত্তি তাঁর সমস্ত আমলকে ধ্বংস করে দেয়।
নবী করিম ﷺ বলেছেন:
إِنَّمَا الْأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ، وَإِنَّمَا لِكُلِّ امْرِئٍ مَا نَوَى
“সমস্ত কাজই নিয়তের উপর নির্ভরশীল, আর প্রত্যেক মানুষ তার নিয়ত অনুসারেই ফল লাভ করবে।” — (সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম)
হাসান আল-বাসরীর জীবন ছিল এই হাদীসের এক জীবন্ত ব্যাখ্যা। তাঁর কাছে, যে কর্ম কেবলই আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে নিবেদিত নয়, তা ছিল সম্পূর্ণরূপে অর্থহীন ও ধূলিকণাতুল্য।
জ্ঞান, প্রভাব ও অকুতোভয় সাহসিকতা
হাসান আল-বাসরী কেবল জ্ঞানের সাগর ছিলেন না; তিনি ছিলেন সেই জ্ঞানের এক জীবন্ত প্রতিমূর্তি। কোরআন, হাদীস, ফিকহ এবং আরবি ভাষার অলঙ্কারিক প্রয়োগে তাঁর দক্ষতা ছিল তুলনাহীন। তিনি জানতেন কিভাবে অর্জিত জ্ঞানকে প্রজ্ঞার সাথে ব্যবহার করে মানুষের অন্তরে নৈতিক ও আত্মিক বিপ্লব ঘটাতে হয়।
তাঁর কণ্ঠস্বর ছিল সত্যের পক্ষে এক অকুতোভয় তলোয়ার। তিনি অন্যায়, অবিচার এবং শাসকের সীমালঙ্ঘনের বিরুদ্ধে কখনো নীরব থাকতেন না। তৎকালীন শাসকের বিলাসবহুল প্রাসাদ নির্মাণের ঔদ্ধত্যকে তিনি কঠোর ভাষায় ভর্ৎসনা করেছিলেন। তিনি নির্ভীকচিত্তে তাকে স্মরণ করিয়ে দেন যে, পার্থিব সকল শান-শওকত মাটির সাথেই মিশে যাবে এবং প্রকৃত ঠিকানা হলো কবর।
তাঁর এই সাহসিকতা প্রমাণ করে যে, তিনি কেবল একজন সুফি বা আলেমই ছিলেন না, বরং তিনি ছিলেন সামাজিক ন্যায়ের (আদল) এক আপোষহীন ঘোষক। তিনি শাসকগোষ্ঠীর অনৈতিকতাকে জনসমক্ষে তুলে ধরতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেননি, যা তাঁর ঈমানী দৃঢ়তা ও প্রজ্বলিত সাহসের পরিচায়ক।
তাঁর খুতবা ও উপদেশে মানুষের পাষাণ হৃদয় কোমল হতো। তাঁর শিক্ষার প্রভাবেই রাবেয়া আল-আদাবিয়্যাহ (রহ.)-এর মতো ব্যক্তিত্ব আল্লাহর প্রেমে জীবন উৎসর্গ করতে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। তাঁর প্রজ্ঞার ছায়াই পরবর্তীকালে ইসলামী আধ্যাত্মিকতা ও তাসাওউফের পথকে সুগম করেছে।
জুহদ ও দুনিয়ার প্রতি নির্মোহ দৃষ্টিভঙ্গি
দুনিয়ার প্রতি তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি ছিল নির্মোহ। তিনি এই ক্ষণস্থায়ী জীবনকে দেখতেন একটি সেতুর মতো—যা অতিক্রম করতে হবে, কিন্তু যার ওপর স্থায়ী বসতি গড়া নির্বুদ্ধিতা। তাঁর সেই কালজয়ী উক্তি:
“দুনিয়া একটি সেতু মাত্র—এটি অতিক্রম করো, কিন্তু এর উপর প্রাসাদ নির্মাণে মত্ত হয়ো না।”⁴
তিনি সংযমের জীবন যাপন করতেন। বজ্রপাতের শব্দ শুনলেও তাঁর চোখ অশ্রুসিক্ত হতো, কেননা তিনি কোরআনের এই আয়াত স্মরণ করতেন:
وَيُسَبِّحُ الرَّعْدُ بِحَمْدِهِ وَالْمَلَائِكَةُ مِنْ خِيفَتِهِ
“বজ্র তাঁর সপ্রশংস তাসবীহ পাঠ করে এবং ফেরেশতাগণও পাঠ করে তাঁর ভয়ে।” — (সূরা আর-রা‘দ, ১৩:১৩)
তাঁর কাছে সৃষ্টিজগতের প্রতিটি উপাদান ছিল আল্লাহর মহিমার এক জীবন্ত নিদর্শন (আয়াহ)। তিনি বলতেন, “দুনিয়া তাকেই ধোঁকা দেয় যে তার প্রেমে মত্ত হয়, কিন্তু সে-ই প্রকৃত উপকৃত হয় যে এটিকে আল্লাহর পথের পাথেয় হিসেবে ব্যবহার করে।”
নৈতিকতা ও সমাজচেতনা
হাসান আল-বাসরীর মতে, প্রকৃত তাকওয়া কেবল ইবাদতের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং তা অবিচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া এবং সৃষ্টির প্রতি অনুকম্পা প্রদর্শনের মাধ্যমে পূর্ণতা পায়।
তিনি মুনাফিকির ব্যাপারে মুমিনদের সতর্ক করে বলতেন:
“মুনাফিকির ভয় কেবল মুমিনই করে, আর যে ব্যক্তি নিজেকে (মুনাফিকি থেকে) নিরাপদ মনে করে, সে-ই প্রকৃত মুনাফিক।”⁵
তিনি অন্যকে বিচার করার প্রবণতা থেকে কঠোরভাবে নিষেধ করতেন এবং বলতেন:
“হতে পারে আল্লাহ তোমার সমালোচিত সেই ব্যক্তিকে ক্ষমা করে দিয়েছেন, অথচ তোমার নিজের হিসাব এখনো বাকি।”
তাঁর মতে, জ্ঞানের সার্থকতা কেবল মুখস্থ বিদ্যায় নয়, বরং সেই জ্ঞান যখন ব্যক্তির চরিত্র ও কর্মকে পরিশুদ্ধ করে, তখনই তা অর্থবহ হয়।
উত্তরাধিকার ও প্রভাব
ইসলামী জ্ঞান ও আধ্যাত্মিকতার ইতিহাসে হাসান আল-বাসরীর প্রভাব সুগভীর। ইমাম আল-গাজ্জালী (রহ.) থেকে শুরু করে শায়খ আবদুল কাদির জিলানী (রহ.)-এর মতো পরবর্তী যুগের মনীষীগণ তাঁকে ইসলামী আধ্যাত্মিকতার অন্যতম প্রধান স্তম্ভ হিসেবে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেছেন। তাঁর বাণীসমূহ পরবর্তী শতাব্দীগুলোতে আত্মশুদ্ধি (তাজকিয়াহ) ও নৈতিক পুনর্গঠনের পথে চিরন্তন পাথেয় হয়ে ওঠে। আল্লামা যাহাবী (রহ.) তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ ‘সিয়ার আ‘লাম আন-নুবালা’-এ তাঁর সম্পর্কে লিখেছেন:
“তিনি ছিলেন তাঁর যুগের সবচেয়ে বাগ্মী এবং সাহাবিদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যে সর্বাধিক বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত ব্যক্তি।”⁶
বর্তমান যুগের জন্য শিক্ষা
আজকের ভোগবাদী ও আত্মকেন্দ্রিক সমাজে হাসান আল-বাসরীর জীবন ও শিক্ষা আমাদের জন্য কয়েকটি চিরন্তন বার্তা বহন করে:
- ঈমানের গভীরতা: ঈমান কেবল বাহ্যিক আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং তা হৃদয়ের আমূল রূপান্তর এবং আল্লাহ-সচেতনতার এক নিরন্তর অনুশীলন।
- নিষ্ঠার অপরিহার্যতা: ইখলাস (নিষ্ঠা)-ই সকল কর্মের প্রাণশক্তি। ইখলাস ব্যতীত ইবাদত একটি প্রাণহীন কাঠামো মাত্র।
- আত্মসমালোচনা: সমাজ সংস্কারের পূর্বে 'মুহাসাবা' বা আত্মসমালোচনার মাধ্যমে আত্মশুদ্ধি অর্জন অপরিহার্য।
- সত্যের পক্ষে দণ্ডায়মান: অন্যায়ের তমসায় সত্যের প্রদীপ প্রজ্জ্বলিত রাখা এবং ন্যায়ের পক্ষে কথা বলাই মুমিনের চারিত্রিক দৃঢ়তার পরিচায়ক।
- দুনিয়ার নির্মোহতা: আখিরাতের অনন্ত জীবনের বিপরীতে দুনিয়ার মোহ ত্যাগ করে আল্লাহর পথে অগ্রগামী হওয়াই প্রকৃত সফলতা।
হাসান আল-বাসরী (রহিমাহুল্লাহ) ছিলেন ইসলামের সেই প্রারম্ভিক যুগের এক প্রোজ্জ্বল বাতিঘর, যিনি তাকওয়া, ইখলাস, জ্ঞান এবং সাহসিকতার এক বিরল সমন্বয় সাধন করেছিলেন। তিনি ছিলেন একাধারে গভীর আধ্যাত্মিক সাধক এবং অন্যদিকে সামাজিক অবিচারের বিরুদ্ধে এক আপোষহীন কণ্ঠস্বর।
তাঁর জীবন আমাদের এই শিক্ষাই দেয় যে, প্রকৃত ইসলাম একাধারে হৃদয়ের গভীরতম প্রদেশে আল্লাহর প্রতি বিনয় এবং বহির্জগতে ন্যায়ের (আদল) পক্ষে অটল অবস্থান। তাঁর রেখে যাওয়া প্রজ্ঞার আলো আজও প্রতিটি মুসলিমের হৃদয়কে পরিশুদ্ধ করতে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির পথে পরিচালিত করতে সক্ষম এক চিরন্তন প্রেরণার উৎস।
তথ্যসূত্র
১. আল-যাহাবী, সিয়ার আ‘লাম আন-নুবালা, খণ্ড ৪, পৃ. ৫৬৩।
২. ইবনুল জাওযী, সিফাতুস সাফওয়া, খণ্ড ২, পৃ. ১৩০।
৩. আল-গাজ্জালী, ইহইয়াউ উলুমিদ্দীন, খণ্ড ৫, “কিতাবু জম্মিদ দুনিয়া।”
৪. একই সূত্র।
৫. আল-বাইহাকী, শু‘আবুল ঈমান, হাদীস নং ১০৩৭।
৬. আল-যাহাবী, সিয়ার আ‘লাম আন-নুবালা, খণ্ড ৪, পৃ. ৫৬৬।
রাসিদুল ইসলাম — দারুল হুদা ইসলামিক ইউনিভার্সিটি, বেঙ্গল ক্যাম্পাসের পঞ্চম বর্ষের ছাত্র। তাঁর আগ্রহের ক্ষেত্র ইসলামী নৈতিকতা, আধ্যাত্মিকতা এবং প্রারম্ভিক মুসলিম মনীষীদের জীবন ও শিক্ষা।