রোযা এবং খাবার তালিকা
রমযানের আগমনে অনেক কিছু পরিবর্তনের মধ্যে অন্যতম হলো মুসলমানের খাবার তালিকা পরিবর্তন। এই বাস্তবিকতাটি অবশ্যই বাজারের খাদ্য আবহাওয়া পরিবর্তন করে দেই। সরবরাহ হতে শুরু করে বিভিন্ন শুকনো এবং সরস ফল যেমন খেজুর ও তরমুজ। দোকানের দ্রব্য ধারক পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে নানা রকম ফল ফুলে।
রমযানের বিশেষত হচ্ছে রোযা রাখা। আর রোযা মানে সবার জানা যথা মহান স্রষ্টা বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের নিয়ন্ত্রক আল্লাহ তাআ'লার সান্নিধ্য ও সন্তুষ্টি উদ্দেশ্য করে সূর্য উদয়ের পূর্ব (ফজর) থেকে সূর্যাস্ত (মাগরিব) পর্যন্ত সকল প্রকারের পানাহার থেকে বিরত থাকা।
এই বিরতির মধ্যে অবশ্যই অন্তর্ভুক্ত সমস্ত ধরনের অশ্লীলতা। রোযা অবস্থার দুই প্রান্ত অর্থাৎ সূর্য উদয়ের পূর্ব (ফজর) ও সূর্যাস্ত (মাগরিব) যথাক্রমে সেহরি ও ইফতার নামে পরিভাষায় পরিচিত। সেহরির শেষ খাবার খেয়ে রোযা আরম্ভ হয় এবং ইফতারের প্রথম লোকমার পর রোজা সমাপ্ত হয়। অবশ্যই রোযার এই দুই প্রান্ত পান্য ও খাদ্যের সঙ্গে অত্যন্ত ভাবে সম্পর্কিত।
সেহরি এবং ইফতার সম্বন্ধে আরো সংবলিত কিছু তথ্য জানা যাক। আনাস বিন মালিক রাঃ থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু সালাম এরশাদ করেছেন: তোমরা সেহরি গ্রহণ করো, কেননা সেহরিতে বরকত আছে। (বুখারী শরীফ)। আসলে আরবীতে সাহুর, কিন্তু পরিচিত ভাষায় সবাই সেহরি বলে। এক রোজাদারের পুরোটা দিন অবশ্যই সেহরির খাবারের উপরই নির্ভর করে থাকে।
ইফতার সম্পর্কেও সংক্ষিপ্ত এক বর্ণনা থাকলো। ইফতারের অভিধানিক অর্থ হচ্ছে ভঙ্গন করা যেহেতু এটি সারাদিনের উপবাস সম্পূর্ণ করে। আনাস রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কয়েকটি ভেজা খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। ভেজা খেজুর না থাকলে শুকনো খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। ভেজা কিংবা শুকনো খেজুর কোনোটাই না পেলে পানিই হত তাঁর ইফতার। (তিরমিজি)
সেহরি এবং ইফতার রোযার এই দুই প্রান্ত সময়ের অনেক বৈজ্ঞানিক গুরুত্ব ও দ্বীনি ফজিলত আছে। এই লেখায় তা অউল্লেখিত থাকলো যেহেতু খাদ্য ও পান্য হচ্ছে এখানকার প্রযোজ্য আলোচনা।
যেরকম বাজার ঘাট রমজানে বিভিন্ন পান্য ও খাদ্যের নানান রঙে রঞ্জিত হয়ে ওঠে অনুরূপ এক রোযাদারের খাবার থালা। খেজুর সার্বিক; সরস ফল যেরকম তরমুজ, শসা অঞ্চল হিসেবে জনপ্রিয়; তৃষ্ণা নিবারণের বিভেদ ধরনের মিষ্টি শরবত আহার তালিকায় অবিচ্ছেদ্যভাবে সংযুক্ত। কোনো জায়গায় হালিম তো কোথাও কাবাব। একদিকে কলা, আপেল অন্যদিকে আলু চপ ও সিঙ্গাড়া তো আছেই। বিশ্বের আলাদা আলাদা দেশে রমযানে আহার তালিকা বৈচিত্র্যপূর্ণ। রমজান মাসে খাওয়া দাওয়া থেকে বিরত হলেও বিরতি সময়ে দস্তরখান একেবারে ভরে থাকে।