ইফতারের সময় মোমিনের অবস্থা কেমন হওয়া চাই
পুরা রমযান মাস দু'আ কবুলের সময়। এই জন্য আমাদের কর্তব্য যত প্রয়োজন আছে সেগুলো বেশি করে আল্লাহ্ পাকের নিকট চাওয়া। আল্লাহ্ পাক চান তো আমরা সেই জিনিস গুলো পেয়ে যাব যেগুলো আমাদের দরকার। আর যদি নাও পাই, তাহলে সেই চাওয়াটা আমাদের আখেরাতের জন্য থেকে যাবে। আখেরাতে আমরা সেটা পেয়েই যাব, ইনশাআল্লাহ্।
হাদিসে পাকে এসেছে, বান্দা যদি দু'আ করে, হয়তো সে নগদ সেটা পেয়ে যায়, যা সে চাইলো। হতে পারে সেটা কিছুটা বিলম্বে হবে। আর দুনিয়াতে সেই জিনিসটা নাও যদি পায় যে জিনিসটা সে চেয়েছিল। তাহলে সে আখেরাতে এর বিনিময়ে পাবে। পরকালে বান্দা এ জন্য তখন আফসোস করতে থাকবে যে, আমার দুনিয়াতে যদি কোনো দু'আই কবুল না হত। কবুল না হলে বেশি সুন্দর হত। আখেরাতে ব্যাপক প্রতিদান দেখে, বান্দা এটা কামনা করবে। যাইহোক আমাদের বেশি করে দু'আ করা উচিত।
ইফতারের আগে মুহূর্ত দু'আ কবুল হওয়ার আরো বেশি সূর্বণ সুযোগ। কিন্তু আফসোসের বিষয় আমরা অধিকাংশ মুসলমান ইফতারের আগে মুহূর্তে ইফতারী তৈরিতে খুব বেশি মগ্ন হয়ে যাই। অনেক বেশি আইটেম তৈরি করা হয়।
মুমিনের আসল জীবন তো আখেরাতের জীবন। এজন্য যে কামেল মোমিনের শান হচ্ছে সে কি দিয়ে ইফতার করবে? ভাল ভাল আইটেম থাকতে হবে, এগুলো যাতে তার ধ্যান থাকে না।
ইফতারের সময় যখন ঘনিয়ে আসে তখন সে বেশি বেশি তওবা ইস্তেগফার করতে থাকে। সে চিন্তা করে, সারাটা দিন যেভাবে রোজা রাখা উচিত ছিল, সেভাবে তো আমি পারিনি। আল্লাহ্ তা'আলার নিকট তখন সে মনে মনে মাফ চাইতে থাকে, অব্যাহতভাবে মাফ চাওয়া চলতেই থাকে।
তখন সে বেশি বেশি করে আল্লাহ্ পাকের নিকট চাইতে থাকে, দুআ করে থাকে। যেহেতু এটা দু'আ কবুলের সময়। কোনো আল্লাহ ওয়ালার সামনে ইফতার যখন পেশ করা হয়, সে তখন অত্যন্ত আনন্দিত হয়। সে ভাবে, আল্লাহ্ পাকের পক্ষ থেকে আমার নিকট এগুলো পাঠানো হয়েছে। এজন্য সে খুব খুশি মনে সাদামাটা যা পায় তাই সে খাওয়া শুরু করে। আল্লাহ্ পাক পাঠিয়েছেন কত বড় বিষয়।
যখন সে খাবার খাইতেছে, ইফতার করতেছে, সারাদিন অনাহারে থাকার পর তখনও সে আল্লাহ্ পাকের ধ্যান খেয়ালে মগ্ন থাকে এবং খাওয়ার ফাঁকে ফাঁকে আল্লাহ্ পাকের নিকট বিভিন্ন বিষয় চাইতে থাকে। যত প্রয়োজন আছে, হতে পারে নিজস্ব কোন বিষয় চাইছে অথবা উম্মতের জন্য যে সকল বিষয় কল্যাণকর সেগুলো সে চাইতেছে। উম্মতের মধ্যে যে সকল সমস্যা চলছে, সেগুলো থেকে আল্লাহ পাকের নিকট আশ্রয় চায়। মোটকথা সে ইফতারও করে, দু'আও করে।
আল্লাহ্ পাক জাল্লা জালালুহু বান্দার এই আমল খুব বেশি পছন্দ করেন। আল্লাহ্ পাক দেখেন, সব মানুষ যখন ইফতার খাওয়ায় মগ্ন আছে।
মানুষ ইফতারের বিভিন্ন ধরনের স্বাদ উপভোগ করছে, এই সময় আমার এই বান্দা আমাকে ভুলেনি। এই মজার খাবার পেয়েও সে আমাকে ভুলেনি। এখনো সে আমাকে স্মরণ করছে, আমার নিকট সে বিভিন্ন বিষয় চায়ছে। আল্লাহ্ পাকের নিকট বান্দার এ আমল খুব বেশি প্রিয়।
যাহোক ইফতারের আগে মূহুর্তে দু'আ করতে থাকা, এস্তেগফার করতে থাকা উচিত। ইফতার যখন করতে থাকবে তখনও আল্লাহ্ পাকের নিকট দু'আ করতে থাকা, নিজের প্রয়োজন, উম্মতের বিভিন্ন প্রয়োজন, এগুলো নিয়ে দু'আ করতে থাকা। এর দ্বারা আল্লাহ্ পাকের সঙ্গে সম্পর্ক গাঢ় হবে, আমল নামায় অনেক বেশি নেকি জমা হবে এবং আল্লাহ্ পাকের নৈকট্য আরো অনেক বেশি অর্জন হবে, ইনশাআল্লাহ্।
আল্লাহ্ পাক আমাদের প্রত্যেককে ভালো আমল করার জন্য তাওফিক দান করেন। গুনাহমুক্ত জীবন আল্লাহ্ পাক আমাদের সকলকে প্রদান করেন। আমীন..!