ইহুদী জাতির শত্রুতার মূল কারণ

অতীত দিনে অতিবাহিত সকল নবী রাসুলের উপর এবং শেষ নবী ও শ্রেষ্ঠ নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর ঈমান পোষণ করা ইসলামি আকিদার একটি মৌলিক শর্ত। আগের নবী ও রাসুলের পর পরবর্তী নবী ও রাসুল আগমন করলে এ পরবর্তী নবীর উপর ঈমান আনাও তার শরিয়াত অনুযায়ী আমল করা ফরয হয়ে যায়। অথচ আগের নবী ও রাসুল বরহক ছিলেন, সত্য ছিলেন, একথার উপর দৃঢ়ভাবে ঈমান পোষণ করতে হবে। কিন্তু আগের নবীর শরিয়াতের উপর আমল করা বাতিল হয়ে যায়। 

এ ধারায় এভাবেই দুনিয়ায় নবী রাসুল আগমনের সিলসিলা জারী থাকে। কিন্তু অভিশপ্ত ইহুদী ও খ্রিস্টান জাতি সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে রাসুল হিসেবে মানতে অস্বীকার করলো। তার শরিয়াত অনুযায়ী আমল করতে রাজি হল না। অথচ তারা আসমানি কিতাব তাওরাত ও ইঞ্জিলের বাহক জাতি। এ জাতিকেই আহ্লে কিতাব বলে ঘোষণা করা হয়েছে পবিত্র কুরআনে। তাদের কিতাবে এ নবীর নাম ধরে তার আগমনের আগাম সংবাদ দেয়া হয়েছে। তারা এটাকে বিশ্বাসও করতো। 

কিন্তু শেষ নবী আশরাফুল আম্বিয়া মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহের আগমনের পর তার সত্যতা সম্পর্কে দুই আহ্লে কিতাব দিবালোকের মত নিঃসন্দেহে থাকার পরও তাকে অস্বীকার করে বসলো। তার অনুসারীদের সাথে শত্রুতা পোষণ করতে লাগলো। অথচ তারা এ নবীকে এভাবে পরিস্কার জানতো, যেভাবে তারা তাদের সন্তান সন্তনিকে সঠিকভাবে জানতো। কুরআনে বলা হয়েছে “ইয়া’রিফুনাহু কামা ইয়া’রিফুনা আবনাআহুম।“ তারা মনে করেছিলো শেষ নবী তাদের গোত্র থেকে আগমন করবেন। তারা এ নবীকে নিয়ে আবার ইহুদী জাতিকে দুনিয়ায় প্রতিষ্ঠিত করবে, দুনিয়া জয় করবে।

এ নবী যেহেতু ইহুদী বংশে জন্মগ্রহণ করেননি। তাই তাদের অতীত স্বভাব চরিত্র, একগুঁয়েমি ও জেদ অনুযায়ী বনী ইসরায়েলরা অনেক নবীকে অমান্য ও হত্যা করার মত এ নবীকেও অমান্য করা শুরু করলো। এমনকি এ নবীকেও হত্যা করার অনেক পরিকল্পনা করলো কিন্তু আল্লাহর রহমতে তারা তা পেরে ওঠেনি। 

কুরআন পাকে বনী ইসরাইল গোত্রীয় নবীদের সাথে ইহুদী জাতির বেইমানির ইতিহাসের বর্ণনা বার বার এসেছে। সাথে সাথে শেষ নবীর সাথেও তাদের চরম বেইমানির কথাও বলা হয়েছে। মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করে যাবার পর মদিনার ইহুদী বর্বর জাতি মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে গ্রহণ করতে পারেনি। সে সময় তারা বেশীর ভাগই মদিনায় বসবাস করত। তারা রাসুলের বিরুদ্ধে নানা কুট কৌশল রচনা করেছে। তাদের নারীরাই এ চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রের পুরো ভাগে ছিল। ইয়াহুদি নারীরা বিশ্বজগতের সর্বশেষ নবী মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে হত্যা করার জন্য কতই না ষড়যন্ত্র করেছে। 

মদিনায় এক ইহুদী কুটিল রমণী রসুলকে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে খাবারে বিষ মিশিয়ে দিয়ে তাকে হত্যা করতে পরিকল্পনা এঁটেছিল। জাতিগত বিদ্বেষ, গোষ্ঠীগত আক্রোশ থেকেই এ অভিশপ্ত ইহুদী জাতি শেষ নবীকে হত্যা করার চেষ্টায় সব সময় মগ্ন ছিল। তাদের সব ষড়যন্ত্রই বার বার ব্যর্থ হয়েছে, নস্যাৎ হয়েছে। 

ইহুদীরা নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে তার গোটা নবুয়াতের জীবনের সকল কল্যাণকর কাজে বাধা দিয়েছে। যুদ্ধে পরাজিত করে তার আদর্শকে ধ্বংস করতে চেয়েছে। যাদু মন্ত্র করে, বিষ প্রয়োগ করে তাকে মেরে ফেলতে চেয়েছে। মদিনার মুনাফিকদের সাথে চক্রান্তের জালে জড়িত হয়ে নবীর ক্ষতি সাধন করতে চেয়েছে। মুসলিম কাফিলার অগ্রযাত্রাকে চেয়েছে বাধাগ্রস্ত করতে। কিন্তু তারা কিছুতেই তাদের কোন ষড়যন্ত্রে সফল হতে পারেনি। সর্বশেষে তারা রাসুলের নির্দেশে বেইমানির চরম পুরস্কার হিসেবে মদিনা থেকে বহিষ্কৃত হয়েছে। তাদের বংশ পরম্পরা আদি ইতিহাসের মতো ভিটাবাড়ি ছাড়া হয়ে দ্বারে দ্বারে ভিক্ষুক ও অভিশপ্তের মত ফিরেছে। আর মুসলমানদের বিরুদ্ধে শত শত বছল ধরে চক্রান্তের জাল বিস্তার করে চলেছে।

যদিও খ্রিষ্টানদের সাথে ইহুদীদের ধর্মীয় বিদ্বেষ ও টানাপড়েন ছিল। তার পরও মুসলিম মিল্লাতকে খতম করার জন্য তারা উভয়ে এক সাথে কাজ করতে একমত হয়েছে। ইহুদীবাদের প্রধান ও প্রথম শত্রুই হল প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তার উম্মতগণ। মুসলমানদেরকে বিভ্রান্ত করতে, বাধা দিতে, রাসুলের জীবনকে বাধাগ্রস্ত করতে এ দুই ভ্রষ্ট জাতি ইহুদী ও খ্রিষ্টানরা আদিকাল থেকেই তাদের অর্থ সামর্থ্যের বিপুল ভান্ডার অকপটে খরচ করছে ও করে আসছে। অভিশপ্ত সালমান রুশদিকে তারা ব্যবহার করেছে। তার পিছনে লক্ষ লক্ষ ডলার খরচ করেছে।

কুখ্যাত ও গণধিকৃত এ সালমান রুশদি ভারতীয় বংশোদ্ভূত একজন ব্রিটিশ নাগরিক। বর্তমানে লন্ডনে নির্বাসিত জীবনযাপন করছে। তার লেখা ইসলাম বিরোধী ইংরেজি উপন্যাস ‘দি স্যাটানিক ভার্সেস’ ১৯৮৯ ইংরেজি সনে প্রকাশিত হবার পর গোটা বিশ্বের মুসলমানরা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। স্যাটানিক ভার্সেসে এ কুখ্যাত সাল্মান রুশদি ইসলাম, মুসলমান, কুরআন ও রাসুলের বিরুদ্ধে জঘন্য অবমাননাকর লেখা লিখে বিশ্বের মুসলমানদের হৃদয়ে ক্ষোভের আগুন জ্বালিয়ে দেয়। একে ইন্ধন যুগিয়েছে এ বেইমান ইহুদী গোষ্ঠী। এ হল ইহুদীদের আসল পরিচয়। তারা একটি অতি হিংসুটে প্রকৃতির জাতি।

Related Posts

Leave A Comment

Voting Poll

Get Newsletter