ঈদুল আযহা: এক ঐতিহাসিক স্মৃতি ও সর্ব সাম্যের উৎসব
ঈদুল আযহা: এক ঐতিহাসিক স্মৃতি ও সর্ব সাম্যের উৎসব
প্রেম ও উৎসর্গের সম্বনয় সংস্পরকে উৎপত্তি হল পরব কুরবানী। এক পরিবারিক গণ্ডি অতিক্রম করে ঐশ্বরিক আশীর্বাদে এখন এক সার্বজনীক সম্প্রতির প্রতীক। এই উৎসর্গ ঐশ্বরিক সান্নিধ্য ঘনিয়ে আনে এবং ধনী দারিদ্রের মধ্যবর্তী রেখা মুছে ফেলার কর্মাহ্বান জানায়; যথা মানব শ্রেয় সম্প্রদায় পুনঃপ্রতিষ্ঠা হওয়ার প্রকিয়া প্ররাম্ভ হয়।
ঈদুল আযহা: এক ঐতিহাসিক স্মৃতি-উৎসব
"আমি (আল্লহ) তার জন্যে এ বিষয়টি পরবর্তীদের মধ্যে রেখে দিয়েছি..." (কুরআন, সূরা আস-সাফফাত:108)
কুরবানীর আগমনে প্রায় সবাই একটি আধোয় স্মৃতির সঙ্গে জরিয়ে পরে, তা গত দু দিন বা দু মাস বা বছরের কথা নয়। সেই ইব্রাহীমীয় যুগের ইতিহাস। স্বীয় ইব্রাহীমপুত্র ইসমাঈল (অা:)- এর সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনা।
সেই ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষ্য: "অতঃপর সে যখন পিতার সাথে চলাফেরা করার বয়সে উপনীত হল, তখন ইব্রাহীম তাকে বললঃ বৎস! আমি স্বপ্নে দেখি যে, তোমাকে যবেহ করছি; এখন তোমার অভিমত কি দেখ। সে বললঃ পিতাঃ! আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে, তাই করুন। আল্লাহ চাইলে তো আপনি আমাকে ধর্যকারীদের অন্তর্ভুক্ত পাবেন।
যখন পিতা-পুত্র উভয়েই আনুগত্য প্রকাশ করল এবং ইব্রাহীম তাকে যবেহ করার জন্যে শায়িত করল। তখন আমি তাকে ডেকে বললামঃ হে ইব্রাহীম, তুমি তো স্বপ্নকে সত্যে পরিণত করে দেখালে! আমি এভাবেই সৎকর্মীদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি। নিশ্চয় এটা এক সুস্পষ্ট পরীক্ষা। আমি তার পরিবর্তে দিলাম যবেহ করার জন্যে এক মহান জন্তু।" (সূরা আস-সাফফাত:102 - 107)
ঈদুল আযহা: সর্ব সাম্যের বিরল দৃষ্টান্ত
ঈদুল আযহায় যে একটি বিধাতীয় শিক্ষা পায়, তা চরম মূল্যের। যে শিক্ষা সমাজসেবার পোশাকে অলংকৃত পৃথিবীর সমস্ত সংস্থাকে নেওয়া উচিত। ধনী দরিদ্র মধ্যবর্তী অঙ্কিত বৈষম্যের রেখা ধুলিমলিন করার জন্য বিশ্বজুড়ে কতইনা আন্দলোন, কতইবা ধ্বনি। কিন্তু ফলাফল সমান লোক দেখানো ও কিছুকে বাঁচিয়ে, বাকিদের মরতে দেওয়া।
কিন্তু, কোরবানির এই অবসরে সর্ব সাম্যের বিরল দৃষ্টান্ত পাওয়া যায়। গরিবেরও মুখগহ্বর থেকে পেটে যায় বড়লোকের খাবার; তাদের সুস্বাদু খাবার। আর পেট বাঁচাবার দৌরেই তো এই পৃথিবীর দৌর, এই জীবনের সংঘর্ষ।
উদ্দেশ্য আন্তরিকতা, বিলাসিতা নয়
"এগুলোর মাংস ও রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছে না, কিন্তু পৌঁছে তাঁর কাছে তোমাদের মনের তাকওয়া (খোদা ভীরুতা বা আন্তরিকতা)।" (সূরা হাজ্জ্ব:37)
সুতরাং, এই উৎসর্গ বাধ্যতা বা লোকদেখানো নয়; আন্তরিকতা ও এক নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য সম্পূর্ণ। এমন দ্বিমুখী উদ্দেশ্য যা মানবিক বা সমাজিক ও ঐশ্বরিক দুই মনরথকে দোলন দেয়।