AIMIM মিম ও পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি
"রেখেছো ভোটার করে মানুষ করনি"
--মইনুল হাসান 
ভারতের রাজনীতিতে পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ভারতের অধিকাংশ রাজনৈতিক দলগুলির আবির্ভাব হয়েছে বাংলার মাটি থেকে তাই পশ্চিমবঙ্গের
রাজনৈতিক বাতাবরণ সারা দেশের জন্য এক আলোচ্য বিষয়।
এখন পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মহলে আসন্ন ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের ওপর বিভিন্ন জল্পনা সৃষ্টি হয়েছে ইতিমধ্যে নানা মন্ত্রী তৃণমূল দল ত্যাগ করে বিজেপি দলে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করছে।যার ফলে দলে কোন ক্ষতি হবে না, এমন আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।এই পর্যায়ে আসাদ উদ্দিন ওআইসির দল আসন্ন নির্বাচনে ভালো ভোটে বিজয়ী হওয়ার সুযোগ দেখছে দেখছে।
মুসলিম ভোটব্যাঙ্ক,মিমের আস্থা-
ভারতের রাজনীতিতে বিশেষ করে নির্বাচনী রাজনীতিতে মুসলমানরা কাকে ভোট দিচ্ছে বা দেবে সবসময় সেটা একটা গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয়। মুসলমান সংখ্যালঘুদের পক্ষ থেকেও বলা হয়, আমাদের ভোট ব্যাংক হিসেবে ব্যবহার করা হয় মাত্র। মুসলমানদের বড় অংশের ভোটে রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছেন এবং ক্রমবর্ধমান পেয়ে যাচ্ছে।
কিন্তু চাকরি প্রার্থীরা সম্মান সুযোগ ব্যাপারে কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের ৯  বছরের শাসনকালে। এখানে একটি বড় আলোচনার দিক হলো নিয়মিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা ও চাকরি মূলক পরীক্ষাগুলি সম্পূর্ণ কয়েক লক্ষ মুসলিম-অমুসলিম মানুষর ভবিষ্যৎ নষ্ট করে দিচ্ছে। অনেক মুসলমান জনসাধারণ ভাবছে যে মমতা ব্যানার্জির প্রদত্ত অনেক প্রতীক্ষা করা সুযোগ এখনও তারা পায়নি এবং বহু প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাদের চুপ করা হয়েছে। অন্যান্য দলের মতো মিমের পশ্চিমবঙ্গে অগ্রসরের আস্থা করে আসন্ন ২০২১ এর বিধানসভা কুড়িটি আসনের প্রার্থী দিয়ে লরার পরিকল্পনা নিয়েছে। কিন্তু বাংলার মুসলমানদের আকর্ষণ করার জন্য মিমের মূল শক্তি হলো তাদের মতাদর্শ ইসলামিক গণতন্ত্রের রক্ষণশীলতা ও মুসলিম -দলিতদের অধিকার রক্ষণ।
২০১৯ সালে ঝারখান্ড বিধানসভায় 
অংশগ্রহণ ও ২০২০-এর বিহার বিধানসভা নির্বাচনে পাঁচটি আসনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করার পর পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চলে 'সর্ব ভারত মজলিসে ইত্তেহাদুল মুসলিমিন' ভীষণ জটাপটার সাথে প্রবেশ করেছে।
এ দলের নৈতিক মূল্যবোধ দেখে পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম, বিশেষত যুবক সমাজের মধ্যে বিশেষ প্রভাব বিস্তার হয়েছে এবং গ্রামে-গঞ্জে দলীয় সংগঠন ও সভা কেন্দ্র গড়ে উঠেছে । ২০২০-এর জানুয়ারি মাস থেকে এন আর সি  এবং সি এ এ বিল এর বিপক্ষে এই দলের নেতারা বিভিন্ন জায়গায় পদযাত্রা করে এবং বিরোধী সভা আয়োজন করে উত্তর ভারতের মধ্যে নিজের ভাল প্রভাব জমাতে সফল হয়েছে। এতসব জিনিস বিশ্লেষণ করে বলা যেতে পারে যে, বাংলায় মিম দলের ভালো ভবিষ্যৎ আছে ।
বামে ধস বিজেপির আগ্রাসন
পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক ইতিহাসে বামপন্থী দলের ইতিহাস বর্ণনা করার ঊর্ধ্বে। ৩৪বছর শাসনকালে নানা রকমের চক্রান্ত দুর্নীতি
ও বিশৃঙ্খলা শিকার বঙ্গের সাধারণ জনগণ।
২০০৬- এর সাচার কমিটির রিপোর্ট সারা বাম আমল নিরাপত্তা, সম্প্রীতি, সামাজিক দাঙ্গা, ইত্যাদি বিষয়ে বর্তমান অবস্থার তুলনায়
ভালো ছিল।
কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে বামফ্রন্ট দল এর অবস্থা এক সাইন বোর্ডের
সদৃশ্য। ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এই দল আংশিকভাবে ধ্বংস হতে থাকে
এবং সেই থেকে বামদলের বিভাজন সৃষ্টি হয়। এবং তৃণমূল কংগ্রেস দল ক্ষমতায় এলে বামদলের প্রগতি মন্থর হয়ে যায়।
বিরোধী দল হিসেবে বাম দলের সক্রিয়তা প্রায় লুপ্ত হয়ে যায় এবং 
দল বিভক্তির কারণে অনেক নেতা দল ত্যাগ করে।
বিরোধী দল হিসেবে বাম দলের অবনতি এই রাজ্যে বিজেপি দলের প্রবেশপথ সহজ করে দেয়। এই নিয়ে শাসক দলের ওপর বিপদের মেঘ ডাকছে।
মিম ও তৃণমূলের সম্ভাব্য জোট:
ইদানিং অনেক তৃণমূল নেতার দল পরিবর্তন বিজেপি দলকে
শক্তিসাধন দিয়েছে।
অন্যদিকে বিভিন্ন খবর সূত্রে জানা যায় যে মিম এর বঙ্গ নেতা আনোয়ার পাশা
ভরসা দিয়েছেন, যে মিম পার্টি আসন্ন নির্বাচনে তৃণমূলের সঙ্গে জোট করে বিজেপিকে প্রত্যাহত করবে ।
কলকাতার এক তৃণমূল মন্ত্রী, ব্রাত্য বসু,এই প্রসঙ্গে ব্যক্ত করেছেন যে," যারা আজ তৃণমূল কংগ্রেস দলে যোগদান করলো তারা জাতীয় স্তরে মমতা দিদির সমর্থক হল"।
এতদ্দ্বারা বোঝা গেল যে শাসক দল মিম দলের পদক্ষেপ দ্বারা চিন্তিত নয়। বরং সন্তুষ্ট যদি মিম দল তাদের সাথেই 'বিজেপি হটাও দেশ বাঁচাও' স্লোগানের সমর্থক হয়। এখন দেখার বিষয় হল এই যে, এই চাঞ্চল্যকর রাজনীতিতে কোন দল বিজয় মহারতি হয়।
 
  
             
            
                     
            
                     
            
                                             
            
                                             
            
                                             
            
                                             
            
                                             
            
                                             
            
             
            
             
            
             
            
            