কোরআনের একত্রীকরণ :- মাসহাফ লিখন
আমরা মুসলিম, সবাই এই জ্ঞান থেকে অবিচ্ছিন নয়, অতপর আমরা জানি যে –আল্লাহ তা'আলার আসমানি কিতাব হল- তাওরাত , জাবুর , ইঞ্জিল ও কোরআন মাজিদ। তাওরাত হযরত মুসা ( আলাহি সালাম ) এর উপর নাজিল হয় , জাবুর হজরাত দাউদ ( আলাহি সালাম ) এর উপর নাজিল হয় এবং ইঞ্জিল হজরত ইসা ( আলাহি সালাম ) এর উপর নাজিল হয় এবং কোরআন আল্লাহ তাআলাহর আখিরি পয়গাম্বার হজরাত মুহাম্মাদ ﷺ এর উপর নাজিল হয়। কোরআন মাজিদ হল আল্লাহ তা'আলার প্রবিত্র কালাম ও কিতাব, যেটি আল্লাহ তাআলা তিনার হাবিব অর্থাৎ হযরত মুহাম্মাদ ﷺ এর উপর নাজিল করেন তিনার উম্মত দের হিদায়াতের আলোর দিকে আহব্বান করার জন্য। আর মানুষদেরকে সঠিক পথ পদর্শন করার জন্য। পবিত্র কোরআনুল মজিদ মানবজাতির সর্বাঙ্গীণ কল্যাণ ও মুক্তির দিশারি বা পথপ্রদর্শক। মহান রাব্বুলআলামিন আল্লাহ ওহীর মাধ্যমে- সর্বকালের, সর্বদেশের, সর্বলোকে জীবনবিধান ও মুক্তির সনদ হিসেবে কোরআনকে নাজিল করেছেন। আল্লাহ পবিত্র কোরআন সম্পর্কে ইরশাদ করেন :– ‘আমি স্বয়ং এ উপদেশ গ্রন্থ অবতারণ করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক।’ (সূরা: হিজর, আয়াত : ৯)।
কোরান হচ্ছে আল্লাহর প্রবিত্র কালাম আর্থাৎ:– আল্লাহর পবিত্র কথা যা আসমান থেকে জিবরাইল দারা নাবী কারিম ﷺ এর উপর নাজিল করা হত জাবালে-নুর নামক এক পাহাড়ের হেরাগুহায়, যেখানে নাবি কারিম ﷺ গিয়ে আল্লাহ তাওলার ইবাদাত করতেন । প্রতি দিনের মত এক দিন যখন নাবী কারিম ﷺ হেরা গুহাতে ইবাদাত করেন এমন সময় জিবরাইল ( আলাহি সালাম ) এসে নাবী কারিম ﷺ এর সিনা মুবারাক ধরে গভীর কণ্ঠে তাঁকে বলেন ‘ইকরা’ পড়ুন। প্রিয় নবী (সা.) বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেলেন। উদ্বেলিত কণ্ঠে তাকে বললেন ‘আমি তো পড়তে জানি না’। জিবরাইল ( আলাহি সালাম ) তখন রাসূলসূ পাক হজরত মুহাম্মাদ ﷺ-কে বুকে চেপে ধরে আবার বলেন, পড়ুন। তৃতীয় বার যখন জিবরাইল ( আলাহি সালাম ) তাঁকে বুকে আলিংগন করে ছেড়ে দিয়ে বলেন, পড়ুন! জিবরাইল ( আলাহি সালাম ) আবার জর করে বলেন- ‘পাঠ করুন, আপনার পালনকর্তার নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্তপিণ্ড থেকে। পাঠ করুন, আপনার পালনকর্তা মহাদয়ালু, যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন, শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানত না। (সূরা: আলাক : প্রথম পাঁচ (১-৫) আয়াত)। পড়লেন। তারপর সঙ্গে সঙ্গে হজরত জিবরাইল ( আলাহি সালাম ) সেখান থেকে চলে গেলেনI এখান থেকে নাবী কারিম ﷺ এর উপর কোরআন নাযিল হওয়া শুরু হয়।
জাহিলাতের যুগে মানুষ ইসলাম ধর্ম কে মানত না তারা কোরআনকে বিশ্বাস করত না । কোরআন হল আরবি ভাষাতে বরং সেই যুগে অনেক বড়ো বড়ো আরবির সাহিত্যিকগন ছিলেন তার পরেও তারা এই কোরআনকে বুঝতো না। কারন তারা যদি ইসলামকে মেনে নেই তাহলে জাহিলিয়াতের মানুষরাও ইসলাম ধর্মকে গ্রহন করে নিবে । তাই তারা কোরআন কে মানত না। এবং যখন তারা কোরআন কে মিথ্য বলে ঘষনা করে আল্লাহ তাআলা তাদের কে চ্যালেঞ্জ করে বলেন , হে জাহিলিয়াতের মানুষরা তোমরা কোরআনের মত একটি সুরা বা গ্রন্থ্য নিয়ে আসো । আল্লাহ তাআলা তাদের কে চ্যালেঞ্জ করে বলেন। তখন তারা অনেক চেষ্টা করে কিন্তু তারা কোরআনের মত একটিও সুরা আনতে পারে না । এটাই হল কুরানের মর্যাদা যা আল্লাহ তাআলা বলেন । যে আমি কোরআনকে নাজিল করেছি এবং আমি তার দেখাশুনা করব । কোরআনের একটা হারফ আজ পর্যন্ত চেঞ্জ হয়নি আর কিয়ামত পর্যন্ত হবে না ।
আমরা সবাই জানি যে কোরআন নাবী কারিম এর উপর একবারেই নাযিল হয় নি । তিনার উপর ২৩ বছর ধরে এই কুরাআন নাজিল হয় এর কারন কি ? তার মধ্যে হতে আমি আপনাদের সামক্ষে তুলে ধরব।
1. মুশরিক দের সামনে নাবী কারিম ﷺ সাবিত থাকার জন্য ।
2. নাবি কারিম ﷺ এর উপর কঠিন না হওয়ার জন্য ।
3. আসমানের হুকুম কে আস্তে আস্তে করে মানুষকে বলার জন্য।
4. কোরআন মুখস্ত করতে বা তার হুকুম বুঝতে আসান হওয়ার জন্য ।
5. কন ঘটনার হয়ার সমায় ,সেই জিনিস থেকে জাগ্রত করার জন্য ।
6. এবং এটা জানার জন্যে যে কুরান আল্লাহর কালাম।
কুরাআন অবতীর্ণ :–
নাবি কারিম জিবিত থাকা কালিন কুরাআন একটি বই হিসেবে সেই জামানাই ছিল না কুরাআন ওহির মাধ্যমে নাজিল হওয়ার পর নাবী কারিম ﷺ সেই কুরাআন সাহাবাদের কে শুনিয়ে দিতেন এবং সাহাবারা কুরান মুখস্ত শুনে তারা মুখস্ত করত ,বা পাথরে লিখে রাখত , বা গাছের পাতাই লিখে রাখত বা হাড্ডিতে লিখে রাখত সাহাবাগন । আর নাবি কারিম ﷺ এর কালে প্রথমত কোরআন দুই ভাবে জমা করা হয়েছিল ।
اؤلا : الجمع في الصدور
ثانيا: الجمع في السطور
প্রথম
হদ্বয়ের মধ্যে জমা করা , অর্থাৎ তিনারা নাবী কারিম ﷺ এর কাছ থেকে কুরাআন শুনতেন এবং মুখস্ত করে মনের মধ্যে ধরে রাখতেন।
দ্বিতীয়
কোন জায়গায় লিখে বা নকশা করে রালহতেন , অর্থাৎ সেই জামানাই কাগছ ছিল না তাই সাহাবারা কাছের পাতাই লিখে রাখতেন বা পাথরে , হাড্ডিতে এই সব যিনিস পত্র তে জমা করে রাখতেন। এবং দ্বিতীয়বার নাবী কারিম ﷺ ইন্তেকালের পর হযরত আবু বাক্কার সিদ্দিক [রাঃ] এর জামানাই কুরাআন জমা করা হই । কেন না যখন তিনারা ইয়ামামা যুদ্ধে যান এবং সেই এমামা যুদ্ধতে অনেক সাহাবা গন শাহিদ হন তিনাদের মধ্যে অনেক কেও হাফিজ ছিলেন এবং কাড়ি ছিলেন যারা করআন কে মুখস্ত করে রেখেছিলেন। তাই আবু বাকর সিদ্দিক [রাঃ] ভাবছিলেন যে এভাবে তো কারি গন শেষ হয়ে যাবে আর কুরাআন আস্তে আস্তে মুছে যাবে তাই তিনি কুরাআন মিটের যাওয়ার বা শেস হয়ার ভয়ে তিনি জয়েদ বিন সাবিত [রাঃ] কে কোরআন জমা করা হুকুম দেওয়া হই [ ورئ زيد بن ثابت : والله لو كلَفني نقل جبل من الجبال ما كان اثقل عليَ مما امرني به ]
তখন জায়েদ বিন সাবিত রা: তিনি বলেন যে আল্লাহার কসম করে বলছি যদি মাকে পাহাড় কে এক জাইগা থেকে আর এক জায়গায় নিয়ে জেতে বল্লে তার থেকে কঠিন হবে এই কোরআনকে জমা করা । কেন না কোরআন এমন একটি বানী যা পাহাড়ের উপরে রাখা হলে পরে সেই পাহাড় ভেঙ্গে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাবে। তাহলে ভেবে দেখুন যে কুরান কতো ভারি বা কঠীন যেই কুরাআন কে নাবি কারিম ﷺ এর উপর ২৩ বছর ধরে কোরআন নাজিল হয় ।
এবং তৃতীয়বার কোরআন জমা করা হই উস্মান [রাঃ] এর শাসনকালে যখন মানুষ কোরআন নিয়ে বিভক্ত হয়ে যাই । তিনারা সবাই আলাদা আলাদা ভাবে কিরাত করতে লাগে । ৭ দল হয়ে যাই এবং নিজেদের মধ্যে সবাই ঝগরা করাতে লাগে এই কুরাআন তিলাওত নিয়ে । এই সব দেখে হযরত উসমান রা: সব কিছু জমা করে যেন একটি কোরআন বা মুসহাফ তৈরি করা হই ।এবং সেই মুসহাফ ‘ হারাকাত’ দেওয়া হয় । যাতে আর মানুষের মধ্যে ঝগরা সৃস্টি না হয় । এবং সেই কোরআন যেন কেয়ামতের দিন পর্যন্ত বাকি থাকে ।