সূরা ফাতিহার সাত গুরুত্ব ও উপকারিতা জেনে নিন 

প্রতিদিনই পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজে আমরা সতেরো বার সূরা ফাতিহা পাঠ করি। নামাজ আদায় করতে হলেই সূরা ফাতিহা প্রতি রাকাতে আমাদের আবশ্যিকভাবে পাঠ করতে হয়। 

এখানে সূরা ফাতিহার বিবিধ গুরুত্ব থেকে সংক্ষেপে সাতটি বিষয় আলোচনা করা হল।

১. কুরআনের শ্রেষ্ঠতম সূরা

হযরত আবু সাইদ আল-মুয়াল্লা (রা.) থেকে বর্ণিত, আমি একবার নামাজ আদায় করছিলাম। রাসূল (সা.) তখন আমাকে ডাকলেন, কিন্তু নামাজে থাকায় আমি তার ডাকের সাড়া দিতে পারিনি। পরে আমি তার কাছে গিয়ে বললাম, “হে আল্লাহর রাসূল! আমি নামাজে ছিলাম।” 

রাসূল (সা.) বললেন, 

“আল্লাহ কি বলেননি, “হে ঈমানদারগণ! আল্লাহ ও তার রসূলের প্রতি সাড়া দাও যখন তিনি তোমাদের আহ্বান করেন।” (সূরা আল-আনফাল, আয়াত: ২৪)

অতপর তিনি বলেন,

 “আমি কি তোমাকে কুরআনের শ্রেষ্ঠতম সূরাটি শেখাবো না? (এটি হল) ‘আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামীন’, যার সাতটি বারবার পঠিতব্য আয়াত রয়েছে….” (বুখারী) 

২. নামাজের স্তম্ভ

হযরত উবাদা ইবনে সামিত (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন,

 “যে তার নামাজে সূরা ফাতিহা পাঠ করলো না, তার নামাজ বাতিল।” (বুখারী)

৩. কুরআনের মা

হযরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন,

 “আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামীন সূরাটি কুরআনের মা…” (তিরমিজি)

৪. রোগের আরোগ্য দানকারী 

একবার রাসূল (সা.)-এর এক সাহাবী বিচ্ছুর দংশনে সূরা ফাতিহা পড়ে ফু দিচ্ছিলেন। রাসূল (সা.) তখন বললেন,

“তুমি কিভাবে জানলে এটি রুকিয়া (আরোগ্য দানকারী)?” (বুখারী)

৫. আকাশ থেকে প্রেরিত আলো

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত,

 “একবার জিবরাইল (আ.) রাসূল (সা.) এর কাছে থাকার সময় বিকট এক আওয়াজ হল। জিবরাইল (আ.) তখন তার মাথা উপরে তুলে আকাশের দিকে তাকিয়ে বললেন, “এটি আকাশের একটি দরজা কিন্তু এর আগে এটি কখনোই খোলা হয়নি।” এরপর সেই খোলা দরজা দিয়ে একজন ফেরেশতা নিচে নেমে রাসূল (সা.) এর কাছে এলেন এবং বললেন, “আপনাকে প্রদত্ত দুইটি আলোর সুসংবাদ গ্রহণ করুন, যা আপনার আগে কোন নবীকেই দেওয়া হয়নি। এই গ্রন্থের সূচনা (সূরা ফাতিহা) ও সূরা বাকারার শেষ আয়াতসমূহ। কোন প্রকারে উপকার পাওয়া ছাড়া আপনি এগুলো থেকে একটি অক্ষরও পাঠ করবেন না।” (মুসলিম) 

৬. বারবার পঠিতব্য আয়াত

কুরআন কারীমে বলা হয়েছে,

“আমি আপনাকে সাতটি বার বার পঠিতব্য আয়াত এবং মহান কোরআন দিয়েছি।” (সূরা হিজর, আয়াত: ৮৭)

এই আয়াত থেকে বোঝা যায়, কুরআনের অন্যান্য সূরার উপর সূরা ফাতিহার গুরুত্ব কিরূপ।

৭ অন্তরের আরোগ্য দানকারী

কুরআনের এই সূরার শেষের দিকে পথভ্রষ্টতা ও আল্লাহর অভিশাপ থেকে রক্ষার জন্য দোয়া করা হয়েছে। সচেতনভাবে কেউ তা পাঠ করলে সে তার হৃদয়কে পাপ থেকে দূরে রাখতে পারে।

Related Posts

Leave A Comment

Voting Poll

Get Newsletter