মহৎ চরিত্র (১): নবীজীর ﷺ কার্যকর শিক্ষাবিদ্যা

নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ইসলাম সমগ্র মানবজাতির জন্য আল্লাহ প্রেরিত মহান শিক্ষক। তিনার শিক্ষায় সত্যসন্ধান, ন্যায় বিচার, অন্যের সহায়তা, সদাচারণ, মানবতা, প্রকৃতি প্রেম, ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত। নবী প্রদত্ত শিক্ষায় আলোকে সফলতার সমগ্র রাস্তা উন্মোচিত। তিনার প্রদত্ত শিক্ষা কিয়ামত অবধি অবশিষ্ট এবং কার্যকর হয়ে থাকবে। নবীজির শিষ্যসমগ্র যথা সাহাবাগণ তিনার জ্ঞান মণি অর্জনের উদ্দেশ্যে তাঁর দরবারে উদ্বিগ্ন হয়ে থাকতেন। উরওয়া বিন মাসউদ আল-সাকাফী বলেন: “আল্লাহর কসম, আমি চোসরোস, সিজার এবং নেগাসের রাজার কাছে গেছি।  কিন্তু আল্লাহর কসম, আমি এমন কোন রাজা দেখিনি যাকে তার সঙ্গীরা এমন সম্মান জানায় যেরূপ মুহাম্মাদের সাহাবীদের মুহাম্মদকে সম্মান কর…।”

  এই পরম গুরু পরায়ণতার পিছনে রহস্য কি? অবশ্যই গুরুর শিক্ষার কিছু মাধুর্যতা শিষ্যকে ভিতর বাহির থেকে আবৃত করে রাখে। নবীর শিক্ষকতায় ওই সমস্ত মাধুর্যপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলি অন্বেষণ করা যাক। 

নবী প্রেরক বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের স্রষ্টা আল্লাহ পাক মানব জীবনের সংবিধান কুরআন শরীফের মহৎ চরিত্রের অধিকারী নবী করীমের শিক্ষকতায় বলেন: তিনি হন, যিনি উমি লোকদের মধ্যে তাদেরই মধ্যে থেকে একজন রসূল প্রেরণ করেন যেন তাদের মধ্যে তাঁর আয়াতসমূহ পাঠ করেন, তাদেরকে পবিত্র করেন এবং তাদের কিতাব ও হেকমতের জ্ঞান দান করেন। এবং নিশ্চয় তারা ইতিপূর্বে সুস্পষ্ট পথ ভ্রষ্টতার মধ্যেই ছিল। (সূরা জুমআ, আয়াত ২)

  উক্ত আয়াত থেকে পরিষ্কারভাবে বেশ কিছু জিনিস স্পষ্ট হয়: ১) আল্লাহ তাআলার মহত্ত্ব, ২) রসূলের দায়িত্ব ৩) উম্মতের অবস্থা এবং ৪) জ্ঞানের বাস্তব উদ্দেশ্য।

 অতএব এমন সমাজের শিক্ষক হয়ে প্রেরিত হন যাদের অবস্থা ছিল শোচনীয়; তারা অজ্ঞতার অন্ধকারে জর্জরিত ছিল। হেদায়েত এবং বাস্তব পথের রাস্তা হারিয়ে ফেলেছিল। এই অন্ধকারকে ব্যাখ্যা করে আল্লাহ তায়ালা অন্য একটি আয়াতে বলেন: “অথবা যেমন অন্ধকাররাশি কোন সমুদ্রের গভীর জলাশয়ের মধ্যে, সেটার উপর ঢেউ, ঢেউয়ের উপর আরো ঢেউ, সেটার উর্ধ্বে মেঘপুঞ্জ, অন্ধকারপুঞ্জ রয়েছে একের উপর এক। যেমন আপন হাত বের করে তখন তা দেখা যাওয়ার আদৌ সম্ভবনা নেই, এবং আল্লাহ যাকে আলো দান করেন না, তার জন্য কোথাও আলো নেই।” (সূরা নূর, আয়াত: ৪০)

  এইরকম সামাজ-সংস্কৃতিক অবস্থায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এক প্রভাবশীল শিক্ষক হয়ে প্রেরিত হন। নবীজির হাদিস: “আমাকে প্রেরন করা হয়েছে শিক্ষাদানকারী হিসেবে।” (ইবনে মাজাহ) তিনার শিক্ষাপ্রদানের পদ্ধতি অনন্য - যার মধ্যে রয়েছে মনবিজ্ঞান, সত্য প্রদর্শন, ব্যবহারিক উদাহরণ, জীবন পাঠ, দৃষ্টি, ধৈর্য। জীবনধারা এবং চরিত্রের মাধ্যমে শিক্ষা দিয়েছেন। তিনি বিশ্বের সর্বকালের সেরা শিক্ষাবিদ। রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লামের শিক্ষা প্রদানের পদ্ধতির বিশেষ বৈশিষ্ট্য, অন্যান্যতা এবং প্রভাবশীলতা বিশ্লেষণ করা যাক:

জীবন উদাহরণ

সাহাবারা নবী (ﷺ)-এর জীবনধারা লক্ষ্য করে আকৃষ্ট হন। নবীর সহচররা তিনার কর্ম ও চরিত্র দেখে তাদের জীবনে অনুবাদ করতে আগ্রহী হয়ে উঠেন।  তিনার সব কথাই ছিল কার্যকরী এবং অন্যদের কাছে আকর্ষণীয়।  কারণ, তিনি সব কথাই কর্মে আনার পরই অন্যকে আদেশ দিতেন। তিনি কুরআনের বাস্তব উদাহরণ হয়ে বাস করেন - হাদীসের প্রমাণ: "তাঁর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি সাল্লাম) চরিত্র ছিল কুরআন" (আহমদ)।

  কুরআনী নির্দেশ - "হে ঈমানদারগণ! কেন তোমরা বল, যা করো না" (সূরা সাফ্ফ: ২) - বাস্তবরূপে তিনি দেখিয়ে গেছেন যে একজন শিক্ষকের চরিত্র গঠন কি রকম হওয়া উচিত। তিনি কর্মের মাধ্যমে মানুষকে শিক্ষা দিয়েছেন।

ক্রমান্যক পদ্ধতি

রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনার শিক্ষা প্রদানে কোনদিনও দ্রুত বা ধীর হোন নি, বরং স্বাভাবিক এবং ক্রমান্যক গতিতে যথাযথ কৌশলে জ্ঞান বিতরণ অব্যাহত রেখেছেন যাতে নব শিক্ষার্থীদের অনুধাবনে ব্যাঘাত না ঘটে। একই উদ্দেশ্যে নিয়ে সম্পূর্ন কুরআন ধারাবাহিক ভাবে ২৩ বছরে অবতীর্ণ হয় যাতে মানুষের উপর একগুচ্ছ ভাবে আইন প্রণয়ন না করে পরিস্থিতি মোতাবেক অনুশীলন দেওয়া হয়।

  জুনদুব ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে ছিলাম। আমরা ছিলাম শক্তিশালী এবং সক্ষম যুবক। আমরা কুরআন শেখার পূর্বে ঈমান শিখেছি, অতঃপর কুরআন শিখেছি এবং তার দ্বারা আমাদের ঈমান বেড়ে যায়। (ইবনে মাজাহ)

কুরআনের শিক্ষাপ্রদান পদ্ধতিও অনুরূপ ক্রমান্যক। ইসলাম প্রচারের মক্বীয় সময়কালে ঈমান এবং অন্যান্য মৌলিক শিক্ষার ওপর প্রাধান্য দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে অবশিষ্ট বিষয়বস্তু, আহকামের বিধি-বিধান ব্যাখ্যা করা হয়।

সংলাপ এবং পারস্পরিক প্রশ্ন

আবূ হুরাইরাহ (রা:) হতে বর্ণিত। তিনি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছেন, ‘‘বলতো যদি তোমাদের কারো বাড়ির সামনে একটি নদী থাকে, আর সে তাতে প্রত্যহ পাঁচবার গোসল করে, তাহলে কি তার দেহে কোন ময়লা থাকবে? তারা বললেন, তার দেহে কোনোরূপ ময়লা বাকী থাকবে না। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ হলো পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের উদাহরণ। এর মাধ্যমে আল্লাহ্ তা‘আলা (বান্দার) গুনাহসমূহ মিটিয়ে দেন। (মুসলিম, আহমদ)

  উক্ত বর্ণনা থেকে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অন্যতম শিক্ষা প্রদানের কিছু পদ্ধতি প্রকাশ হয়। প্রথমত বাস্তব উদাহরণ দিয়ে বিষয়বস্তুকে সরল এবং পরিষ্কার করে দেওয়া যাতে অনুধাবন সহজ হয়। স্পষ্ট উপলব্ধি ব্যবহারিক কর্মের দিকে পরিচালিত করে যেমন কি হাদিসটির মধ্যে দেখা গেছে। আরেকটি লক্ষ্যের বিষয় যে এই হাদিসটির মধ্যে নবী (ﷺ)-এর সাহাবাদের সঙ্গে সংলাপ এবং পারস্পরিক প্রশ্নের মাধ্যমে শিক্ষা দেওয়ার পদ্ধতি যথেষ্ট কার্যকৃত। নামাজের উপকারিতা পরিমাণ নবী (ﷺ) ব্যাখ্যাতীত সৌন্দর্যের সঙ্গে চিত্রাহিত করেছেন যা সহজেই সবার হৃদয়কে আকৃষ্ট করে ফেলে। রসূলের মধূর্যপূর্ণ প্রদর্শন পদ্ধতি নিম্নের আরেকটি উপশিরোনামে তুলে ধরা হয়েছে। 

প্রদর্শন পদ্ধতি

আবদুল্লাহ্ ইবনু মাস্’ঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি চতুর্ভুজ আঁকলেন এবং এর মধ্যখানে একটি রেখা টানলেন, যা তা থেকে বের হয়ে গেল। তারপর দু’পাশ দিয়ে মধ্যের রেখার সঙ্গে ভেতরের দিকে কয়েকটা ছোট ছোট রেখা মিলালেন এবং বললেন, "এ মাঝের রেখাটা হলো মানুষ। আর এ চতুর্ভুজটি হলো তার আয়ু, যা বেষ্টন করে আছে। আর বাইরে বেরিয়ে যাওয়া রেখাটি হলো তার আশা। আর এ ছোট ছোট রেখাগুলো বাধা-বন্ধন। যদি সে এর একটা এড়িয়ে যায়, তবে আরেকটা তাকে দংশন করে। আর আরেকটি যদি এড়িয়ে যায় তবে আরেকটি তাকে দংশন করে।" (বুখারী)

  কতই না সুন্দর প্রদর্শন আর কতই সুন্দর শিক্ষা! স্পষ্ট যে নবীর শিক্ষা প্রদানের পদ্ধতি বিশ্বের সমগ্র শিক্ষক ও শিক্ষাবিদের চেয়ে উন্নতর।

অনুশীলন, অনুসন্ধান এবং পুরস্কারের উৎসাহ

অনুশীলন ছাড়া ছাত্র কোন বিদ্যার ব্যবহারিক প্রক্রিয়া জানতে পারেনা। নিজে অনুসন্ধান করে কোন সমস্যার সমাধান না পেলে জ্ঞানের যথার্থতা কমে যায়। অবশ্যই শিক্ষা প্রদানে পুরস্কারের প্রতিশ্রুতি শিশুদের মধ্যে নতুন শক্তির উদ্দীপনা জায়গায়। এই সমগ্র দিকগুলি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু সাল্লাম-এর শিক্ষাপ্রদান পদ্ধতির নিপুণভাবে অন্তর্ভুক্ত ছিল। 

  বহুসংস্কৃতিক মদিনা নগরীতে ইহুদিদের এক সমস্যা বিচারের জন্য মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অন্যকে বিচারক বানিয়েছেন। নিম্নের অন্য একটি হাদীসের বর্ণনা থেকে অনুসন্ধানের প্রতি নবীর অনুপ্রেনা বোঝা যায়।

  আমর ইবনু আস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন, যদি কোন বিচারক যথাযথ চিন্তা-গবেষণার পর রায় দেন, অতঃপর তিনি সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হন, তার জন্য রয়েছে দু’টি প্রতিদান (দিগুণ সাওয়াব)। আর যদি তিনি চিন্তা-গবেষণা করে রায় প্রদানের সময় ভুল করেন, তবুও তার জন্য রয়েছে একটি প্রতিদান।

পুনরাবৃত্তি পদ্ধতি

আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী ﷺ বাহনের উপর বসে ছিলেন এবং তাঁর পেছনে মু’আয (রাঃ) আরোহণ করেছিলেন। তিনি (ﷺ) বললেন: হে মু’আয! তিনি (মু’আয) বললেন: আমি উপস্থিত আছি, হে আল্লাহর রসূল! তিনি (ﷺ) আবার বললেন: হে মু’আয! তিনি বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমি উপস্থিত আছি। তৃতীয়বার আবার তিনি (ﷺ) বললেন: হে মু’আয! তিনি বললেন, আমি উপস্থিত আছি। এভাবে মু’আযকে তিনবার ডাকলেন এবং (মু’আয) তিনবারই তাঁর উত্তর দিলেন। অতঃপর তিনি (ﷺ) বললেন, আল্লাহর যে বান্দা খাঁটি মনে এ ঘোষণা দিবে - আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন ইলাহ নেই, আর মুহাম্মাদ আল্লাহর রসূল - আল্লাহ তার ওপর জাহান্নাম হারাম করে দিবেন।

  পুনরাবতী পদ্ধতি ব্যবহার করে কোন বিষয়ের উপর জোর দেওয়া যায় এবং শিক্ষার্থীর মনোযোগও বজায় থাকে। এটিকে রসূলের তা'কিদ পদ্ধতিও বলা যেতে পারে। অনেক বাক্য নবী করীম সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম তিনবার করে বলতেন। তাছাড়া, উক্ত বর্ণনায় শিশু শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রধান নিয়ে আচরণ কেমন হওয়া চায় সেটাও খুব সুন্দর ভাবে বোঝা যায়। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহার একেবারে আছে তিনি বলেন যে রসূল এমনভাবে কথা বলতেন যে, কেউ যদি তাঁর শব্দ গণনা করতে চায়, তাহলে সেগুলোও গণনা করা যায়। (বুখারী)

  নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম-এর কথা-বার্তার অনন্যতা হল আল্লাহ তাআ'লা প্রদত্ত অভিনব বৈশিষ্ট্য তিনার জাওয়ামিউল কলিম (সংক্ষিপ্ত কথা ব্যাপক অর্থ) হওয়া যা পৃথিবীর আর কেউ তুলনামূলকভাবে অর্জন করতে পারেনা।

শাস্তিহীন শিক্ষা

এই উপশিরোনামে  ব্যাখ্যা না বাড়িয়ে সোজা একটি হাদীসের উদ্ধৃতি তুলে ধরা হল:

আনাস বিন মালিক (র:) বর্ণনা করেন, "... আমি দশ বছর রসূল -এর খিদমত করেছি, কিন্তু কখনো তিনি আমার উপর 'উফ্' পর্যন্ত বলেননি। যা আমি স্বেচ্ছায় করেছি তার উপর তিনি আমাকে বলেননি যে, 'তা কেন করলে?’ আর যা করিনি তার জন্যও বলেননি যে, 'কেন করলে না?' (বুখারী ও মুসলিম)

ফলাফল 

আরবের যে সময়কাল জাহেলিয়াত বলে আখ্যায়িত হয়, নবীজীর শিক্ষা প্রভাবে বিশ্বের সর্বোত্তম প্রজন্মে পরিবর্তিত হয়। যে সমাজে হিংস্র লড়াকু এবং স্বজ্ঞাত কবি হয়ে খ্যাতি পাওয়া যেত, নবী তাদেরকে এবং পরবর্তীদের বিশ্বসেরা সাহিত্যিক, সেনাপতি, চিকিৎসক, ভ্রমণকারী, ধনী, সুফি, সমাজ নেতা, শিক্ষক এবং শিক্ষাবিদ হিসেবে গড়ে তোলেন।

 নবী ﷺ-এর শিক্ষাদানের ফলাফল - এত বিস্তৃত বিষয় শব্দের মাধ্যমে সমাপ্ত করা সম্ভব নয়। সেই ফলাফলে অবশ্যই অন্ধকার আলোতে পরিণত হয়েছে, অন্যায়ের সরে বিচার স্থাপিত হয়েছে, অজ্ঞতার যুগ বিশ্বসেরা পাণ্ডিত্য সৃষ্টি করেছে। সবই রসূলের শিক্ষার অবদান। আল্লাহর একমাত্র গ্রহণযোগ্য ধর্ম ইসলাম বিশ্বের বুকে বিরাজমান হয়ে আছে এবং কিয়ামত অবদি থাকবে। নবী ﷺ-এর শিক্ষা চিরতার জীবিত হয়ে থাকবে।

Related Posts

Leave A Comment

Voting Poll

Get Newsletter