মওলানা আবুল কালাম আজাদের শিক্ষাদর্শন ও বর্তমান ভারত

ভূমিকা

মওলানা আবুল কালাম আজাদ (১৮৮৮–১৯৫৮) ছিলেন স্বাধীন ভারতের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী। তিনি কেবল একজন মহান রাজনীতিবিদ, দার্শনিক এবং স্বাধীনতা সংগ্রামীই ছিলেন না, বরং আধুনিক ভারতের শিক্ষাব্যবস্থার ভিত্তি স্থাপনকারী স্থপতিও ছিলেন। ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত হওয়া একটি নতুন রাষ্ট্রের জন্য তাঁর শিক্ষাদর্শন ছিল এক আলোর দিশা। তিনি উপলব্ধি করেছিলেন যে শিক্ষার মাধ্যম ছাড়া দেশের প্রকৃত উন্নয়ন অসম্ভব। শিক্ষার হাত ধরে একটি ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক এবং বিজ্ঞানমনস্ক ভারত গড়ে তোলা সম্ভব। তাঁর জন্মবার্ষিকী প্রতি বছর ‘জাতীয় শিক্ষা দিবস’ হিসাবে পালিত হয়, যা প্রমাণ করে যে ভারতীয় জাতির জন্য তাঁর শিক্ষাচিন্তা কতটা গভীর ও তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। এই প্রবন্ধে মওলানা আজাদের শিক্ষাদর্শনের মূল নীতিসমূহ, তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক অবদান এবং বর্তমান ভারতববর্ষে সেই নীতিগুলির চিরন্তন প্রাসঙ্গিকতা সম্পর্কে বিশদভাবে আলোচনা করা হবে।

মওলানা আজাদের ঐতিহাসিক ও দার্শনিক পটভূমি

আজাদের শিক্ষণীয় দৃষ্টিভঙ্গির মূল ভিত্তি ছিল তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের অভিজ্ঞতা এবং ভারতীয় জাতীয়তাবাদের প্রতি তাঁর অবিচল বিশ্বাস। মক্কায় জন্মগ্রহণ করা এবং ইসলামিক ধর্মশাস্ত্রে গভীর জ্ঞান থাকা সত্ত্বেও, তিনি পুরনো রক্ষণশীল ধারণাসমূহকে অগ্রাহ্য করে এক যুক্তিবাদী ও আধুনিক মানসিকতা গ্রহণ করেছিলেন।

 জ্ঞানের সংশ্লেষণ এবং যুক্তিবাদ

আজাদ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের জ্ঞানের মধ্যে এক সুন্দর সমন্বয় স্থাপন করতে চেয়েছিলেন। তিনি ধর্মীয় জ্ঞানকে মানবতাবাদী দর্শন এবং আধুনিক বিজ্ঞানের সাথে সংযুক্ত করে এক নতুন চিন্তাধারার জন্ম দিয়েছিলেন। তাঁর মতে, শিক্ষা কুসংস্কার থেকে মুক্ত হয়ে এক অনুসন্ধিৎসু ও বিশ্লেষণাত্মক মনের সৃষ্টি করতে সাহায্য করে। যৌবনকালে তাঁর প্রকাশিত উর্দু পত্রিকা ‘আল-হিলাল’-এর মাধ্যমে তিনি জাতীয়তাবাদী চেতনা জাগিয়ে তোলার পাশাপাশি ধর্মের সংকীর্ণ ব্যাখ্যার বিরুদ্ধেও সোচ্চার হয়েছিলেন।

 ধর্মনিরপেক্ষ জাতীয়তাবাদের স্থপতি

তিনি দ্বি-জাতি তত্ত্বের ঘোর বিরোধী ছিলেন। তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতেন যে একটি স্বাধীন, ধর্মনিরপেক্ষ ভারতেই সকল ধর্মের মানুষ শান্তিপূৰ্ণভাবে বসবাস করতে পারবে। তাঁর শিক্ষাদর্শনে এই আদর্শটিই প্রতিফলিত হয়েছিল: শিক্ষাকে জাতীয় একতা ও ভ্রাতৃত্ববোধের ভিত্তি তৈরি করতে হবে, যেখানে ধর্মীয় পরিচিতির চেয়ে দেশের প্রতি আনুগত্য অধিক গুরুত্বপূর্ণ হবে।

 আজাদের শিক্ষাদর্শনের মূল চালিকা শক্তি

আজাদের শিক্ষানীতির মূল চালিকা শক্তি ছিল তিনটি স্তম্ভ: সার্বজনীন শিক্ষা, ধর্মনিরপেক্ষতা এবং বিজ্ঞান-প্রযুক্তির প্রচার।

 সার্বজনীন ও বাধ্যতামূলক শিক্ষার গুরুত্ব

আজাদ বিশ্বাস করতেন যে শিক্ষা লাভ করা প্রত্যেক ভারতীয় নাগরিকের জন্মগত অধিকার। তিনি স্বাধীন ভারতের জন্য ১৪ বছর বয়স পর্যন্ত সকল শিশুর জন্য বিনামূল্যে ও বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষার সপক্ষে সওয়াল করেছিলেন। তাঁর মতে, প্রত্যেক নাগরিকের পক্ষে নিজের দায়িত্ব ও রাষ্ট্রীয় কর্তব্য পালনের জন্য এই ন্যূনতম শিক্ষার স্তর লাভ করা অপরিহার্য।

  • সাংবিধানিক ভিত্তি: আজাদের এই ধারণাটিই পরবর্তীকালে ভারতীয় সংবিধানের ধারা ৪৬ এবং সম্প্রতি ধারা ২১এ-এর অধীনে ‘শিক্ষার অধিকার আইন’ (Right to Education Act)-এর মাধ্যমে কার্যকর করা হয়েছে। তিনি উপলব্ধি করেছিলেন যে গণতন্ত্রকে সফল করতে হলে প্রথমে শিক্ষার গণতন্ত্রায়ণ করতে হবে। শিক্ষার মাধ্যমেই সমাজের জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল দুর্বল ও বঞ্চিত শ্রেণির মানুষের মধ্যে সমতা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।

 সামগ্রিক বিকাশ এবং নৈতিক শিক্ষা

আজাদের মতে, শিক্ষার লক্ষ্য হওয়া উচিত ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ, চরিত্র গঠন এবং একতার ভাব গড়ে তোলা। তিনি শিক্ষার মাধ্যমে মানুষের মনে মানবিকতার শিক্ষা এবং সামাজিক দায়বদ্ধতার বোধ জাগিয়ে তুলতে চেয়েছিলেন।

  • কলা ও চরিত্র গঠন: তিনি জ্ঞানের সাথে মানবতাবাদের সংযোগ ঘটিয়ে একটি সু-সভ্য ও সচেতন সমাজ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তাই, তিনি কলা, কারুশিল্প এবং শারীরিক শিক্ষাকে মূলধারার শিক্ষার অংশ হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করার ওপর গুরুত্ব দিয়েছিলেন। এই শিক্ষা একজন ছাত্রকে কেবল বিদ্বান নয়, একজন ভালো মানুষ হতেও উৎসাহিত করে।

 বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষার প্রচার

মওলানা আজাদ ছিলেন আধুনিকতার প্রবল সমর্থক। উপনিবেশিক শাসনের ফলে ভারতে শিল্প ও কারিগরি ক্ষেত্রে যে বিরাট ব্যবধান সৃষ্টি হয়েছিল, তা দূর করতে তিনি বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষাকে দেশের কৃষি ও শিল্প বিপ্লবের জন্য অপরিহার্য বলে মনে করতেন।

  • গবেষণার সংস্কৃতি: তিনি শিক্ষার মান উন্নত করার পাশাপাশি দেশের প্রতিষ্ঠানগুলিকে বিশ্বমানের গবেষণা কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। তাঁর মতে, শিক্ষণ গবেষণা-ভিত্তিক হতে হবে, যেখানে ছাত্র-ছাত্রীরা সমস্যা সমাধানের কৌশল এবং উদ্ভাবনী ক্ষমতার বিকাশ ঘটাতে পারে।

 শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে আজাদের সাংবিধানিক অবদান

শিক্ষামন্ত্রী হিসাবে মওলানা আজাদ মাত্র এক দশকের মধ্যে ভারতের শিক্ষার জন্য কয়েকটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, যা আজও ভারতীয় শিক্ষার মান নিয়ন্ত্রণ করে চলেছে। এই অবদানগুলি দুটি মূল ক্ষেত্রে বিভক্ত: উচ্চ শিক্ষা এবং সাংস্কৃতিক গবেষণা। স্বাধীন ভারতের প্রথম কয়েক বছরেই আজাদ দেশের কারিগরি ও উচ্চ শিক্ষার জন্য শক্তিশালী কাঠামো নির্মাণ করেছিলেন।

  • ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (IIT): দেশের কারিগরি শিক্ষার মান বিশ্বমানের করার লক্ষ্যে তিনি ১৯৫১ সালে খড়গপুরে প্রথম ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (IIT) স্থাপন করতে মূল ভূমিকা নিয়েছিলেন। এছাড়া তিনি বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স (IISc) এবং দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিগরি অনুষদের উন্নয়নেও বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছিলেন। আজ এই IIT এবং IISc গুলি ভারতের মেধা ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে এক বিশ্বব্যাপী ছাপ ফেলেছে।
  • বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (UGC): ১৯৫৩ সালে উচ্চ শিক্ষার সমন্বয়, মানদণ্ডের নিরীক্ষণ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে তহবিল বন্টন নিশ্চিত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (UGC) স্থাপন করা হয়েছিল। এর ফলে উচ্চ শিক্ষায় একটি নিয়ন্ত্রিত এবং মানসম্পন্ন ব্যবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল।
  • কারিগরি শিক্ষার জন্য সর্বভারতীয় পরিষদ (AICTE): দেশে কারিগরি শিক্ষার নিয়ন্ত্রণ ও বিকাশের জন্য এই সংস্থা স্থাপন করা হয়েছিল, যার ফলে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার পাঠ্যক্রমগুলির মান নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছিল।
  • বৈজ্ঞানিক তথা ঔদ্যোগিক গবেষণা পরিষদ (CSIR): দেশের শিল্প ও বৈজ্ঞানিক গবেষণার প্রচারের জন্য তিনি CSIR স্থাপন করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন, যা বিজ্ঞানকে কেবল শ্রেণীকক্ষেই সীমাবদ্ধ না রেখে সমাজ ও শিল্পক্ষেত্রে নিয়ে এসেছিল।

 সাংস্কৃতিক ও সাহিত্যিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ

আজাদ বিশ্বাস করতেন যে শিক্ষা ও সংস্কৃতি একে অপরের পরিপূরক। একটি সমৃদ্ধ জাতি গড়তে হলে নিজেদের সাহিত্য, কলা এবং সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখা অত্যন্ত জরুরি।

  • জাতীয় অকাদেমিগুলি: তিনি ভারতের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও প্রচারের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেছিলেন এবং এই উদ্দেশ্যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক অকাদেমি স্থাপন করেছিলেন:
    • সাহিত্য অকাদেমি (Sahitya Akademi): ভারতীয় ভাষাগুলির সাহিত্যিক বিকাশ ও সমন্বয়ের জন্য।
    • ললিত কলা অকাদেমি (Lalit Kala Akademi): দৃশ্য ও চারু কলার প্রচারের জন্য।
    • সংগীত নাটক অকাদেমি (Sangeet Natak Akademi): প্রদর্শন কলা ও নাট্যের প্রচারের জন্য।
  • ভারতীয় সাংস্কৃতিক সম্পর্ক পরিষদ (ICCR): ভারতীয় সংস্কৃতির মাধ্যমে বিশ্বের সাথে সম্পর্ক গড়ার জন্য এই পরিষদ গঠন করা হয়েছিল।

 বর্তমান ভারতে আজাদের শিক্ষাদর্শনের প্রাসঙ্গিকতা

স্বাধীন ভারতের জন্য আজাদ যে ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন, তা আজকের ‘বিকশিত ভারত’-এর স্বপ্নকে সাকার করার পথে এক পথপ্রদর্শক হিসাবে কাজ করে।

জাতীয় শিক্ষা নীতি (NEP) ২০২০ এবং আজাদের দৃষ্টিভঙ্গি

বর্তমান জাতীয় শিক্ষা নীতি (এনইপি) ২০২০-তে মওলানা আজাদের বহু মৌলিক আদর্শের প্রতিধ্বনি শোনা যায়:

আজাদের নীতি

NEP 2020 তে প্রতিফলন

মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষা

প্রাথমিক স্তরে আঞ্চলিক ভাষা/মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষাদানের সপক্ষে সওয়াল।

সর্বাঙ্গীণ বিকাশ

কলা, বিজ্ঞান, বৃত্তিমূলক শিক্ষাকে একত্রিত করে সামগ্রিক বিকাশের ওপর জোর।

শিক্ষকের মর্যাদা

শিক্ষকের প্রশিক্ষণ ও মর্যাদা বৃদ্ধিকে উচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।

বৃত্তিমূলক শিক্ষা

ষষ্ঠ শ্রেণী থেকেই বৃত্তিমূলক শিক্ষা শুরু করার ব্যবস্থা।

আজাদ মহিলাদের জন্য কারুশিল্পের সাথে বৃত্তিমূলক শিক্ষার সপক্ষে সওয়াল করেছিলেন, যার প্রাসঙ্গিকতা NEP 2020-ও স্বীকার করে নিয়েছে।

 লিঙ্গ সমতা, নারী শিক্ষা এবং সামাজিক সমতা

আজাদ ঘোষণা করেছিলেন যে সমাজের অর্ধেক অংশ নারী সমাজকে শিক্ষা না দিলে কোনো জাতীয় শিক্ষা প্রকল্প সম্পূর্ণ হতে পারে না। তিনি শিক্ষাকে সামাজিক বৈষম্য দূর করার একটি শক্তিশালী হাতিয়ার হিসাবে গণ্য করতেন।

  • বর্তমান চ্যালেঞ্জ: আজকের ভারতে উচ্চ শিক্ষা এবং কর্মশক্তিতে মহিলাদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করা আজও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আজাদের নারী শিক্ষার প্রতি থাকা দায়বদ্ধতা আজও দেশের সরকারি প্রকল্প এবং অভিযানগুলিকে (যেমন বেটি বচাও, বেটি পড়াও) পথ দেখাচ্ছে, যার লক্ষ্য হল লিঙ্গ সমতা প্রতিষ্ঠা করা।
  • সমতার জন্য শিক্ষা: জাতি এবং আর্থ-সামাজিক বৈষম্যের ফলে সৃষ্ট শিক্ষার ব্যবধান দূর করতে তিনি Neighborhood School (প্রতিবেশী বিদ্যালয়)-এর ধারণার ওপর জোর দিয়েছিলেন, যাতে সকল শিশু একই স্কুলে শিক্ষা লাভ করে সামাজিকভাবে একত্রিত হতে পারে।

ধর্মনিরপেক্ষ এবং নৈতিক ভিত্তির প্রয়োজনীয়তা

আজকের সমাজে সাম্প্রদায়িক ও সামাজিক মেরুকরণের প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে দেখা যায়। এমন পরিস্থিতিতে আজাদের ধর্মনিরপেক্ষতা ও সহনশীলতার শিক্ষার আদর্শ আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। শিক্ষা ছাত্র-ছাত্রীকে সমালোচনা মূলক চিন্তাভাবনার (Critical Thinking) মাধ্যমে পুরনো গোঁড়ামি এবং বিভেদ সৃষ্টিকারী শক্তিসমূহকে প্রতিহত করতে সক্ষম করে তুলতে হবে। তাঁর দর্শন আমাদের শেখায় যে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তি কোনো একটি ধর্ম বা ভাষার ওপর নয়, বরং ভারতের বিভিন্ন সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধা এবং মানবিক মূল্যবোধের ওপর নির্ভর করে।

 উপসংহার

মওলানা আবুল কালাম আজাদের শিক্ষা সম্পর্কিত দৃষ্টিভঙ্গি কেবল তাঁর সময়ের জন্যই নয়, বর্তমান ভারতের জন্যও এক চিরন্তন সম্পদ। তাঁর দূরদর্শী চিন্তাধারার ফলস্বরূপই ভারত উচ্চ কারিগরি শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে এক শক্তিশালী স্থান অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। তাঁর দ্বারা প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানগুলিই আজ ভারতকে বিশ্ব মঞ্চে জ্ঞানের ক্ষেত্রে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করছে। যদিও আজ ভারত সাক্ষরতার হার, ডিজিটাল শিক্ষার প্রচার এবং সমতার ক্ষেত্রে যথেষ্ট অগ্রগতি লাভ করেছে, তবুও শিক্ষার গুণগত মান, গ্রামীণ ও শহুরে এলাকার মধ্যে শিক্ষার ব্যবধান এবং উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে সকলের অংশগ্রহণের মতো অনেক চ্যালেঞ্জ এখনও রয়ে গেছে।

আজাদের শিক্ষাদর্শন ছিল এক ‘মানবিক শিক্ষা’, যা কেবল ভালো চাকরি পাওয়ার ওপর নয়, বরং একজন ভালো মানুষ এবং সচেতন নাগরিক হওয়ার ওপর জোর দিয়েছিল। অতএব, একটি শক্তিশালী, নৈতিক, এবং সমতাপূর্ণ ভারত গড়ার জন্য, আমাদের মওলানা আজাদের এই শিক্ষার আদর্শকে পুনরায় উজ্জীবিত করার অঙ্গীকার নিতে হবে। তাঁর শিক্ষাদর্শন আজও এক সবল, সমতাপূর্ণ এবং উন্নত ভারতের ভিত্তি।

Related Posts

Leave A Comment

Voting Poll

Get Newsletter