হুজুর সাল্লাল্লাহ আলায়হি ওয়া সাল্লামের ব্যবসা ও শাদী মোবারক

মক্কা নগরীতে খাদিজা নামে একজন ধনী বিধবা মহিলা থাকতেন।যিনি একজন বড় ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি নবীপাক সাল্লাল্লাহ আলায়হি ওয়া সাল্লামের সত্যবাদিতা ও আমানাতদারী বিষয়ে অনেক কিছু শুনে রেখেছিলেন। এই জন্য তিনি নবী সাল্লাল্লাহ আলায়হি ওয়া সাল্লামকে তার ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য বারবার আবেদন করেছিলেন। এবং হুজুর সাল্লাল্লাহ আলায়হি ওয়া সাল্লাম তিনার আবেদন শিকার করেছিলেন।আর হুজুর সাল্লাল্লাহ আলায়হি ওয়া সাল্লাম তিনার সাথে ব্যবসা করা শুরু করলেন।হুজুর সাল্লাল্লাহ আলায়হি ওয়া সাল্লাম খাদিজা রাদিয়াল্লাহ আনহার দাসী মাইসারার সাথে ব্যবসার জন্য শাম দেশের দিকে চলে গেলেন।এই সফরটা নবীপাক সাল্লাল্লাহ আলায়হি ওয়া সাল্লামের দ্বিতীয় ব্যবসায়ী সফর ছিল। হুজুর সাল্লাল্লাহ আলায়হি ওয়া সাল্লাম এর আগেও একবার ব্যবসায়ী সফরে গিয়েছিলেন। তিনার চাচা হযরত আবু তালিবের সঙ্গে। এটা দ্বিতীয় বার।

হুজুর সাল্লাল্লাহ আলায়হি ওয়া সাল্লাম খাদিজা রাদিয়াল্লাহ আনহার দাসী মাইসারার সাথে শাম দেশে পৌছালেন।সেখানে একটি ঘটনা ঘটল। সেখানে পৌছানোর পর হুজুর সাল্লাল্লাহ আলায়হি ওয়া সাল্লাম একটু বিশ্রাম নেওয়ার জন্য একটি গাছের নিচে বসে পড়লেন। সেখানকার একজন ধর্মজ্ঞানী নাস্তরা সাহেব বললেন: এখন এই গাছের নীচে যিনি বসে আছেন তিনি একজন নবী। এবং নাস্তরা সাহেব খাদিজা রাদিয়াল্লাহ আনহার দাসী মাইসারাকে জিজ্ঞাসা করলেন: এই ব্যক্তির চোখ দুটি লাল ?মাইসারা বলল: হ্যাঁ, তার চোখ দুটি সর্বক্ষণ লাল থাকে। নাস্তারা বললো তাহলে অবশ্যই তিনি একজন নবী এবং অন্তিম নবী অর্থাৎ শেষ নবী।

এই সফরে যখন কড়া রৌদ্র হতো তখন দুইজন ফেরেস্তা হুজুর সাল্লাল্লাহ আলায়হি ওয়া সাল্লামকে ছায়া করতো।কিংবা কোনো মুশকিল এলে হুজুর সাল্লাল্লাহ আলায়হি ওয়া সাল্লামকে হিফাযত করতো।

হুজুর সাল্লাল্লাহ আলায়হি ওয়া সাল্লাম শাম দেশে অনেক দিন ব্যবসা করলেন।অনেক দিন ব্যবসা করার পর হুজুর সাল্লাল্লাহ আলায়হি ওয়া সাল্লাম মাইসারার সঙ্গে মক্কায় ফিরে এলেন। আল্লাহ তাআলা তিনার ব্যবসাতে খুব বরকত দিলেন। এই সব দেখে খাদিজা রাদিয়াল্লাহ আনহা দারুন সন্তষ্ট হলেন।

হুজুর সাল্লাল্লাহ আলায়হি ওয়া সাল্লামের শান ও মর্যাদা দেথে খাদিজা রাদিয়াল্লাহ আনহা তাঁর সাথে বিবাহ করার ইচ্ছা প্রকাশ করলে নবী সাল্লাল্লাহ আলায়হি ওয়া সাল্লাম হযরত খাদিজা রাদিয়াল্লাহ আনহার সাথে বিবাহ করলেন। বিবাহের সময় নবী সাল্লাল্লাহ আলায়হি ওয়া সাল্লামের বয়স ২৫ বছর ও মা খাদিজা রাদিয়াল্লাহ আনহার বয়স ৪০ বছর ছিল। রসুলে রসুলে খোদা সাল্লাল্লাহ আলায়হি ওয়া সাল্লামের সাথে হযরত মা খাদিজা রাদিয়াল্লাহ আনহা ২৫ বছর কাটিয়ে ৬৫ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন।

প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহ আলায়হি ওয়া সাল্লাম মোট এগারোজন নারীকে বিয়ে করে নিজের স্ত্রী বানিয়ে ছিলেন। তারা হচ্ছে- খাদিজা বিনত খুওয়াইলিদ, আয়িশা বিনত আবু বক্কর ,হাফসা বিনত উমার, উম্মে সালমা বিনত আবু উমায়া, উম্মে হাবিবা বিনত আবু সুফয়ান, সাওদা বিনত জামআ, জাইনাব বিনত জাহাশ, জাইনাব বিনত খুজাইমা, মাইমুনা বিনত হারিস, জুওয়াইরা বিনত হারিস, সফিয়া বিনত হুয়ি।

প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহ আলায়হি ওয়া সাল্লামের তিনজন পুত্র সন্তান ও চারজন কন্যা সন্তান ছিলো। এই সাতজন সন্তানাদি খাদিজা বিবির থেকে জন্ম নিয়েছিলেন। কেবল এই সাতজনের মধ্যে একজন নবী সাল্লাল্লাহ আলায়হি ওয়া সাল্লামের অন্য স্ত্রী হযরত মারিয়া কিবতিয়া রাদিয়াল্লাহ আনহার থেকে হয়েছিলেন। তিনি হচ্ছেন হযরত ইব্রাহিম।

নবী সাল্লাল্লাহ আলায়হি ওয়া সাল্লামের পুত্রদের নাম- ১। হযরত কসিম রাদিয়াল্লাহ তাআলা আনহু ২। হযরত আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহ তাআলা আনহু ৩। হযরত ইব্রাহিম রাদিয়াল্লাহ আনহু। নবী সাল্লাল্লাহ আলায়হি ওয়া সাল্লামের তিনজন পুত্র সকলেই ছোট কালে ইন্তেকাল করে যায়।

নবী সাল্লাল্লাহ আলায়হি ওয়া সাল্লামের কম্যাদের নাম- ১। হযরত যয়নব রাদিয়াল্লাহ তাআলা  আনহা ২। হযরত রুকাইয়া রাদিয়াল্লাহ তাআলা আনহা  ৩। হযরত উম্মে কুলসুম রাদিয়াল্লাহ তাআলা আনহা এবং ৪। হযরত ফাতিমা রাদিয়াল্লাহ তাআলা আনহা। 

Related Posts

Leave A Comment

Voting Poll

Get Newsletter