পাপীদের বাসস্থান জাহান্নাম
আল্লাহর আজাব ও গজবের স্থল হল- দোযখ অর্থাৎ জাহান্নাম। আল্লাহর রহমত ও নিয়ামতের যেমন শেষ নেই, তেমন আজাব,গজবের ও শেষ নেই। মানুষ যে আজাব সম্পর্কে ভাবনা চিন্তা করে, তা প্রকৃত আজাবের এক বিন্দু মাত্র । কুরআন হাদিসে দোযখের শাস্তির সম্পর্কে যে ভয়ানক বর্ণনা দেওয়া হয়েছে ,হাদিস শরীফে বর্ণিত আছে যে বান্দা যখন দোযখ বাঁচার জন্য রক্ষা চায় , তখন দোযখ আল্লাহ তায়ালাকে বলে –হে আল্লাহ ! এ তো আমার কাছে রক্ষা চাচ্ছে ,তুমি তাকে পানাহ দাও। কুরআন শরীফে অনেক বার বর্ণিত হয়েছে-'জাহান্নাম থেকে বেঁচে থাকও ,দোযখ কে ভয় কর'।আমাদের নবী হুজুর ﷺ আমাদের কে শিক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্যে এর পরিত্রাণের জন্য বেশি করে প্রার্থনা করতেন এবং বেশি বেশি করে দুয়া করতেন যেন তার উম্মত জান্নাতে প্রবেশ করে এবং
জাহান্নামের অগ্নিশিখা সুউচ্চ অট্টালিকার সমপর্যায়ে উঠবে। মানুষ আর পাথর হবে, দোজকের জ্বালানি তাপমাত্তার দিক দিয়ে দুনিয়ার আগুন হচ্ছে জাহান্নামের আগুনের এক সত্তরাংশ। জাহান্নামের সর্ব নিম্ন আজাব হল—এক প্রকার আগুনের তালুর নীচে লাগানো হবে, এবং সেই জাহান্নামী বাক্তির মাথার মগজ পানির মত ফুটতে থাকবে, তাকে মনে হবে যে আমার উপর সবচেয়ে বড় আজাব হচ্ছে ,কিন্তু বাস্তবে তাকে সর্বনিম্ন আজাব দেওয়া হচ্ছে । তাকে আল্লাহ তায়ালা জিজ্ঞেসা করবেন, যদি সমস্ত দুনিয়া তোমার হয়ে যায় , তা কি তুমি এ আজাব থেকে রেহাই পাবার জন্য মুক্তিপন হিসেবে দিয়ে দেবে ? সে বলবে –হ্যাঁ নিশ্চয়’। আল্লাহ তাআলা বলবেন-আমি যখন আদম জাতি হিসেবে তোমাকে দুনিয়াতে প্রেরণ করেছিলাম ,এবং অনেক সহজ কাজের নির্দেশ দিয়েছিলাম অর্থাৎ কুফরি না করার জন্য, কিন্তু তুমি তা শোননি বরং তা অমান্য করেছিলে ।
সম্প্রীতি দোজখের আগুন হাজার বছর জ্বালানোর পর লাল হয়ে গিয়েছিল, আবার হাজার বছর জ্বালানোর পর সাদা হয়ে গিয়েছিল, পুনরায় হাজার বছর জ্বালানোর পর কালো হয়ে গিয়েছিল, বর্তমানে কালো অবস্থায় আছে, তাতে কোনো আলোর নামগন্ধ নেই। দোজখ এমন ভয়ানক যেখানে এত ভয়ঙ্কার আযাব না থাকলেও চলত । সেখানে কাফেরদের জন্য শাস্তির নানারকম ব্যাবস্থা আছে । জাহান্নামে এমন ভারী গদা দিয়ে ফেরেস্তাগণ ওদেরকে মারবে, সেই গদা এমন যে দুনিয়ার সমস্ত মানুষ ও জিন একত্রিত হয়েও উঠাতে পারবে না।
জাহান্নামে “বুখতি” নামক বড় আকৃতির উটের গলার সমান এক একটি বিচ্ছু থাকবে। আর বড় বড় সাপ তারা যে কত বিষাক্ত হবে ,আল্লাহই ভালো জানেন। এবং দোজখবাসীদের শরীর থেকে পুঁজ বের হবে, তা তাদেরকে পান করতে দেওয়া হবে । এবং কাঁটা ওয়ালা এক প্রকার ফল তাদেরকে খেতে দেওয়া হবে, সেই খাবার যদি দুনিয়ায় থাকত তাহলে দুনিয়ার সমস্ত খাদ্য দুর্গন্ধময় ও বিষাক্ত হয়ে যেত । দোযখবাসীরা, দোযখের ফেরেস্তা মালেক (আঃ)কে আহব্বান করে বলবে – ‘আপনার খোদাকে বলুন ,আমাদেরকে মেরে ফেলুক । মালেক ফেরেস্তা এক হাজার বছর চুপ থাকার পর বলবেন ,আমাকে বলে লাভ কি, যার নাফারমানি করেছো , তাকেই গিয়ে বল । তখন তারা আল্লাহকে বিভিন্ন ধরনের প্রশংসা করে ডাকবে। একহাজার বছর পর আল্লাহ তায়ালা উত্তর দিবেন – ‘দূর হও ,জাহান্নামবাসি । তখন তারা সমস্ত আশা ভরসা ছেড়ে গাধার মত আওয়াজে কাঁদতে শুরু করবে , কাঁদতে কাঁদতে চোখের পানি শেষ হয়ে যাবে এবং চোখ দিয়ে রক্ত বের হবে। দোযখবাসীর আকৃতি এমন বীভৎস হবে, যে দুনিয়ায় মানুষ যদি দেখত সঙ্গে সঙ্গে মৃত্য বরণ করত ।
সামান্য গ্রীস্মকালে দুনিয়ার আগুন কে দেখে ভয় লাগে তাহলে জাহান্নামের আগুন কেমন হবে । আল্লাহ তায়ালা কুরআন মাজিদে বলেছেনঃ "তোমরা জাহান্নাম থেকে বাঁচো এবং তোমার পরিবারকে বাচাও।" আমাদের উচিত দ্বীন-দুনিয়া ও আখেরাতে আল্লাহর ক্ষমা ও সাহায্য কামনা করা দরকার। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে জাহান্নাম থেকে বাঁচাক এবং জান্নাতে প্রবেশ করাক আমীন …!