ইদুল আযহা
এমন এক বিশেষ দিন যেই দিনে সমস্ত মানুষ খুশীর সঙ্গে আল্লাহ্কে রাজি করার জন্য কোন প্রাণী যেমনঃ গরু, ছাগল, মহিষ ইত্যাদি কুরবানি করে সেই দিনকে ইদুল আযহা বলে। এই দিনটি প্রথম ইদুল ফিতার কিছু মাস পর পালন করা হয়। এই দিনের এতই বরকত যে, নবি কারিম (সঃ) বলেছেনঃ যে বাক্তি আল্লাহর জন্য একটি ছাগল কুরবানি করল, সেই ছাগলের যত গুলি লম আছে সেই সমস্ত লোকের পরিবর্তে দশটি করে নেকি দেওয়া হবে।
ইদুল আযহা নামযের শর্তাবলীঃ
ইদুল আযহার নামযের শর্তগুলি এই যে শুধু দুই রাকাত নামায হবে, এবং এই দুই রাকাতের মধ্যে প্রথম রাকাতে সাতটি তাকবির এবং দুই রাকাতে পাঁচটি তাকবির। সমস্ত মানুষ ইদগাহাতে নামায আদায় করে।
কুরবানি কোন সময় করা উচিতঃ
এই ইদুল আযহার দিনে কিছু মানুষ ইদের নামাজের আগে কুরবানি করে, কিন্তু নবী কারিম (সঃ) বলেছেন: তোমরা নামযের পরে কুরবানি আদায় করো।
কুরবানি করে কি হয়ঃ
অনেক মানুষ বলে কুরবানি করে কি হয়? কুরবানি করা একটি অনেক বড় নেকির কাজ, এবং এটি একটি সুন্নত যা ইব্রাহিম (আঃ) এর কাছ থেকে আরম্ভ হয়। মহান রব্বুল আলামিন কুরআন শরিফে বলছেন যে তোমরা যখন কুরবানি করো তখন সেই জীবের রক্ত ও মাংস আল্লাহার তাআলার কাছে কিছুই যায়না। শুধু একটি জিনিস যাই সেটি হল তাক্বওয়া তোমরাদের মনের নিয়ত। নবী (সঃ) বলেছেন, যখন তোমরা কুরবানি করো সেই জীবের রক্ত মাটিতে পরার আগেই আল্লাহ্ তাআলা তোমাদের সমস্ত গুনাহয় ক্ষমা করে দেন।
কুরবানি কিভাবে সুন্নত হয়ঃ
একদা একসময় মহান রব্বুল আলামিন ইব্রাহিম (আঃ)-কে স্বপ্নের মাধ্যমে বলেন: এ ইব্রাহিম তুমি আল্লাহর পথে কুরবানি কর। তারপর ইব্রাহিম (আঃ) আল্লাহ তাআলার কথা অনুযারি অনেক গুলি পুশু, যেমন- উট, গুরু, ভেড়া, ইত্যাদি কুরবানি করলেন। কিন্তু আবার আল্লাহ তায়ালা ইব্রাহিম (আঃ)-কে স্বপ্নের মাদ্ধেমে বলেন: এ ইব্রাহিম তুমি আল্লাহর পথে কুরবানি কর। এরকম ভাবে আল্লাহ তায়ালা ইব্রাহিম (আঃ)-কে পরস্পর তিন দিন ধরে বললেন। শেষের স্বপ্নতে আল্লাহ তায়ালা ইব্রাহিম (আঃ)-কে বলেন: এ ইব্রাহিম তুমি আল্লাহর পথে তোমার কলিজার টুকরো ইসমাইল (আঃ)-কে আল্লাহর পথে কুরবানি কর। তারপরের দিন ইব্রাহিম(আঃ) আল্লাহর কথায় রাজি হয়ে তার প্রীয়তম স্ত্রীকে বললেন তুমি আমার কলিজার টুকরা ইসমাঈলকে সুন্দর ভাবে সাজিয়ে দাও। তার পরে ইব্রাহিম (আঃ) তার পুত্রকে নিয়ে ভ্রমন শুরু করলেন। রাস্তায় যাবার পথে ইবলিশ শয়তান ইসমাঈল (আঃ)-কে বলল: হে ইসমাঈল তেমাকে তোমার পিতা ভ্রমনে নিয়ে যাচ্ছে না, বরং তোমাকে তোমার পিতা আল্লাহর রাস্তায় কুরবানী করতে নিয়ে যাচ্ছেন। তখন ইবলিশের কথা শুনে ইসমাঈল (আঃ) বললেন: যদি এরকমই হয়ে থাকে তাহলে আমি আল্লাহর পথে কুরবানী হতে রাজী। তারপর ইব্রাহিম (আঃ) ও ইসমাইল (আঃ) রাস্তা এগিয়ে যান। শেষে প্রান্তে ইব্রাহিম (আঃ) তার কলিজার টুকরা ইসমাইল (আঃ)-কে বলেন, এ ইসমাইল আমি তোমাকে মিথ্যা কথা বলে এনিছি। পিতার কথা শুনে ইস্মাইল(আঃ) বললেন, বাবা আমি জানি আপনি আমাকে আল্লাহর পথে কুরবানি করতে এনেছেন। আমি আল্লাহর পথে কুরবানি হতে রাজি, ইসমাইল(আঃ) বললেন, পিতা তুমি আমার চককে কাপর দিয়ে ঢেকে দেন, এবং হাত গুলি বেঁধে দিন যাতে আপনার আমাকে কুরবানি করার সময় কষ্ট না হয়। সন্তানের কথা অনুযারি ইব্রাহিম(আঃ) কাজ করলেন। তারপর ইব্রাহিম(আঃ) যখন আল্লাহর নাম পরে কুরবানি করতে যান, সেই সময় আল্লাহ তায়ালা জিব্রাইল কে বললেন, এ জিব্রাইল তুমি একটি দুম্বা নিয়ে যায় এবং ইসমাইল(আঃ) এর জায়গাই রেখে দাও। আল্লাহর কথার অনুযারি জিব্রাইল(আঃ) একটি দুম্বা নিয়ে রেখে দায়, এবং ইস্মাইল(আঃ) জীবিত বেঁচে যাই, সেখান থেকে শুরু হয় আমাদের কুরবানি করা, অর্থাৎ ইদুল আযহা।
তাহলে, আমরা আল্লাহর আয়াতের দ্বারা এটাই বুজতে পারলাম যে, কুরবানি করা আমাদের ওপর সুন্নত কি ভাবে হয়, এবং হয়তো আল্লাহ তায়ালা ইব্রাহিম(আঃ) কে পরীক্ষা করছিলেন। আর বুজতে পারলাম যে ইব্রাহিম(আঃ) যদি আল্লাহর জন্য নিজের কলিজার টুকরা ইসমাইল(আঃ) কে আল্লাহর জন্য কুরবানি করতে রাজি হন। তাহলে আমাদের কে অতান্ত অপরিহার্য যে, আমরা যান আল্লাহার খুশির জন্য সব করতে রাজি হয়।