কথার আগে সালাম
সালাম ((السلام হচ্ছে একটি আরবি শব্দ, এবং আলেমদের মতে সালাম শব্দের অর্থ হল “শান্তি ও নিরাপত্তা”। এই সালাম হল ইসলামের ও মুসলমানের ভালোবাসার প্রতিক। তাই এই সালামের দারায় এক মুসলমান অপর মুসলমানের প্রতি একটি ভালোবাসার সৌরভ সহজেই খুজে পায়। এবং সেই ভালোবাসার আদান ও প্রদান বাড়িয়ে তোলার একটি সহজ পদ্ধতি হচ্ছে সালাম। পরেস্পরের মধ্যে সৃষ্টি হয় একটি ভালোবাসা। হাদিস শরিফে হযরত মুহাম্মাদ (صلى الله عليه وسلم) ইরশাদ করেছেন যে افشواالسلامبينكمএর অর্থাৎ হল-তোমরা নিজেদের মধ্যে সালাম বিনিময় বা প্রচালণ কর। কারণ এই সালাম তোমাদের মণের মধ্যে যে হিংশা, অহংকার, লোভ, লালচি ইত্যাদি রয়েছে সেই সব জিনসকে দূর করে। এবং এই সালাম একটি অপরিচত মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক জুড়ে দেয়। ও জারা নিকটবর্তী মানুষ তাদেরকে প্রিয় মানুষ হিসেবে পরিণত করে এই সালাম। অর্থাৎ এই যে মানুষ সামাজিক ভাবে এক অপরের মধ্যে একটি খুব সুন্দর ঠাণ্ডা বাতাসের অনুভব করেএকটি ভালোবাসা গড়ে তলে এই সালাম। যেই বাতাসে কোন রকমের হিংশা নেই, কোন শত্রুতার গন্ধ নেই, কোন অহাংকার নেই শুধু আছে ভালোবাসা আর ভালোবাসা। তাই আমাদের উপর অপরিহার্য যে যারা আমাদের পরিচিত কিংবা অপরিচিত সবাইকে আমরা সালাম দিয় এটা আমাদের কর্তব্য। এটা আমাদের বিশ্ব নবী হযরত মুহাম্মাদ (صلى الله عليه وسلم) এর সুন্নত।
- সালামের সঠিক পদ্ধতিঃ-
একটি হাদিসে বর্ণিত আছে যে- ইমরান ইবনুল হুসাইন (রঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেছেন যে, একজন ব্যক্তি হুযুর (صلى الله عليه وسلم)কাছে এলেন এবং তিনি সালাম দিলেন আসসালা মুআলাইকুম। তখন তিনাকে রসূল (صلى الله عليه وسلم) তিনার সালামের উত্তর দিলেন অতঃপর লোকটি বসলে তখন রসূল (صلى الله عليه وسلم) বললেন “দশ” ( অর্থাৎ তুমি ১০ টি নেকি পেয়েছ )।
এরপর আরেকটি ব্যক্তি হুযুর (صلى الله عليه وسلم) কাছে এলেন এবং তিনি সালাম দিলেন আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। তখন তিনাকে রসূল (صلى الله عليه وسلم) তিনার সালামের উত্তর দিলেন অতঃপর লোকটি বসলে তখন রসূল (صلى الله عليه وسلم) বললেন “বিশ” (অর্থাৎ তুমি ২০ টি নেকি পেয়েছ)।
এবং আরও এক ব্যক্তি হুযুর (صلى الله عليه وسلم) কাছে এলেন এবং তিনি সালাম দিলেন আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ ওয়া বারাকাতুহু। তখন তিনাকে রসূল (صلى الله عليه وسلم) তিনার সালামের উত্তর দিলেন অতঃপর লোকটি বসলে তখন রসূল (صلى الله عليه وسلم) বললেন “ত্রিশ” ( অর্থাৎ তুমি ৩০ টি নেকি পেয়েছ )।
সালামের উচ্চারণে আমরা যে ভুলগুলো করেঃ- সালামের উচ্চারণে আমরা যে ভুলগুলো করে থাকি তা হল- স্লামালাইকুম, সালামালাইকুম, আস্লামালাইকুম, আস্লাআলাইকুম, সেলামালাইকুম, ইস্লামালাইকুম, অয়ালাইকুম ইত্যাদি বলা । এই শব্দগুলো উচ্চারণ করে কাউকে সালাম দেওয়া ঠিক নয়। কেননা এই সব বল্লে সালামের যে অর্থ সেটি ঠিক হয় না এর অর্থ ভুল হয়ে যায়। তাই সালামের যে সঠিক উচ্চারণ সেটিই উচ্চারণ করা উত্তম। তো এই সব ছোটো ছোটো ভুল থেকে আমদের বেঁচে থাকতে হবে আল্লাহ তৌফিক দান করুন।
- সালামের আদাবঃ-
এর অর্থাৎ হল- ছোটরা বড়োদের উপর সালাম দেয়, এবং পায়ে হাঁটা ব্যক্তি বসে থাকা ব্যক্তিকে সালাম দেয়, ও কম সংখ্যাক লোক বেশি সংখ্যাক লোককে সালাম দেয়।
অনেক এরকম আছে যে তারা ভাবে শুধুমাত্র ছোটরাই বড়োদের উপর সালাম দিবে, কিন্তু সেরকম কিছু নয় বরং বড়োরাও ছোটোদের উপর সালাম দিতে পারে কেননা আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ (صلى الله عليه وسلم)ছোটোদের উপর সালাম দিতেন। এমন কি বয়স্করাও ছোটোদের উপর সালাম দিতে পারে এতে কন রকমের বাধা নেয়।
এবং এরকম আছে যে তারা নিজেদের অর্থাৎ শুধু মাত্র পরিচিত কে সালাম দেয় অপরিচিত ব্যক্তিকে সালাম দেয় না এটা করা নিষেধ রয়েছে। তাই যারা মুখ চিনে কিংবা ও পরিচিত ব্যক্তিকে সালাম দেওয়া নিন্দিত কাজ। কারণ পরিচিত ও অপরিচিত ব্যক্তিকে সবাইকে সালাম দেওয়ার নির্দেশ এসেছে।
- সালাম কাদের উপর দেওয়া নিশেধঃ-
আপনি কী জানেন রসূল صلى الله عليه وسلم) (কাদের উপর সালাম দিতে বারণ করেন, তো আসুন জেনে নিন।
রসূল (صلى الله عليه وسلم)তিনার হাদিশ শরিফে ইরশাদ করেছেন যে- لا تبدءوا اليهود و لا النصارى بالسلام
অর্থাৎ- তোমরা ইয়াহূদী ও খৃষ্টানদের প্রথমে সালাম দেবে না । এই হাদিশ দ্বারা আমরা সুস্পষ্ট ভাবে বুঝতে পারছি যে, সব ধর্মের মানুষ কে সালাম দিতে রসূল (صلى الله عليه وسلم) বারণ করেছেন। যেমন ইয়াহূদী ও খৃষ্টানদের উপর সালাম দিতে মানা করেছেন।
এবং এটাও বলেছেন যে কোনো অমুসলিম যদি আগে সালামা দেয় তাহলে শুধু তোমরা ‘অয়া-আলাইকুম’ বলবে। যেমন রসূল (صلى الله عليه وسلم)ইরশাদ করেছেন যে- اذا سلم عليكم اهل الكتاب فقولوا و عليكم
অর্থাৎ যদি কিতাবগণ তমাদের উপর সালাম দেই তাহলে তার উত্তরে তোমরা বলুন শুধু ‘অয়া-আলাইকুম’।
(আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে সালাম দেওয়ার তৌফিক দান করুন। এবং সঠিক রাস্তায় চলার তৌফিক দান করুন। ইসলামকে আরও এগিয়ে নিয়ে জাওয়ার আমাদের তৌফিক দান করুন “আমিন”)