হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর মু’জিযাহ
হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) হলেন আল্লাহর সর্বশেষ রাসুল ও নবী। তিনি ১২ রাবিউল আওইয়ালের ফজরের আগে মক্কা মুকাররামায় জন্ম গ্রহন করেন এবং আপনার মৃত্যু একই তারিখে হয়। তিনার মাতার নাম আমিনা বিনতে ওয়াহাব এবং পিতার নাম আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল মুত্তালিব। আপনার জন্মের আগেই তাঁর পিতা মৃত্যু বরণ করেছিলেন।
হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর জীবনে অনেক আলৌকিক ঘটনা বা মু’জিজা ঘটেছে। আল্লাহ তা’আলা তাঁর দলিল আম্বিয়া ও মুরসালিনদের হাত দিয়ে প্রকাশ করেন। তাদের মাধ্যমে প্রকাশিত অপ্রাকৃতিক ঘটনাকেই মু’জিজা বলে। হুজুর (সাঃ)-এর অনেক মোজেজা আছে তার মধ্যে ১০'টি মোজেজা নিম্নরূপ।
১) ইল্মে গাইব বা অদৃশ্যের জ্ঞান:
হুজুর (সাঃ) ইল্মে গাইব অর্থাৎ অদৃশ্যের জ্ঞান জানতেন। এর প্রমান আমরা এ দারা বুঝতে পারি যে হুজুর (সাঃ) একদিন আবু বাক্কার রাদিয়াল্লাহু আনহুকে বললেন যে তাঁর পর ত্রিস (৩০) বছর খিলাফত হবে ( الخلافة بعدي ثلاثون سنة )। আর সত্যিই হুজুর (সাঃ)-এর ইন্তেকালের পর ত্রিশ বছর খেলাফত হয়েছিল। আবু বাক্কার (রাঃ) ২ বছর ৩ মাস ও ১০ দিন খিলাফত করেছিলেন, তিনার পরে উমার বিন খাত্তাব (রাঃ) ১০ বছর ৬ মাস ৮ দিন খিলাফত করেছিলেন, তিনার পরে উসমান বিন আফফান (রাঃ) ১১ বছর ১১ মাস ৯ দিন খিলাফত করেছিলেন, তিনার পরে আলি বিন আবি তালিব ৪ বছর ৯ মাস ৭ দিন খেলাফত করেছিলেন।
২) চাদের দু' টুকরো:
হুজুর (সাঃ) মক্কা থেকে চাঁদকে দু'টুকরো করেছিলেন। যখন মক্কার বাসিন্দারা হুজুর (সাঃ)-কে একটি চিন্হ দেখাবার জন্য জিজ্ঞাসা করলেন তখন হুজুর (সাঃ) তাদেরকে মক্কা থেকে চাঁদকে দু'টুকরো করে দেখিয়ে ছিলেন। এটার উপরে বিশ্যাস রাখা ওয়াজিব কারন এর প্রমান কুরানে আছে। আল্লাহ তা’আলা বলেন:
(اقتربت الساعة وانشق القمر )
৩) আঙ্গুল থেকে পানি বার করা:
এটিও একটি হুজুর (সাঃ)-এর মোজেজা ছিল, এবং এর বর্ণনা সহিহ হাদীসেও পাওয়া যায়।
৪) কম খাদ্দ্যে বরকত এমনকি সকলেরই জন্য যথেষ্ট হয়ে যাওয়া:
৫)ব্রিক্ষের কথা বলা ও আপনার দাওয়াতের উত্তর:
ইবনে উমার (র:) থেকে বর্ণিত যে একদিন হুজুর (সাঃ)-এর সাথে কিছু আরাবিদের সাক্ষাৎ হয়। তখন নবী (সাঃ) তাদেরকে ইসলামের দিকে দাওয়াত দেন। তারা বলে আপনার কথার উপরে কে সাক্ষ্য আছে? তখন আমার নবী বলেন: এই বৃক্ষটি। তার পর সেই গাছটিকে ডাকেন আর সেই গাছটি হুজুর (সাঃ)-এর দুই হাথের সামনে এসে দারিয়ে যায় আর বলে “أشهد أن لا اله الا الله و أنك رسول الله (আমি সাক্ষী দিচ্ছি যে আল্লাহ ছাড়া কেউ মা'বুদ নেই এবং নিশ্চয় আপনি আল্লাহর রসুল) তার পর গাছটি নিজের জায়গায় ফিরে যায়।
৬) কাঠের কান্না:
আপনি একটি কাঠের উপরে দাঁড়িয়ে খুতবা করতেন। যখন সাহাবারা আপনার জন্য একটি মিম্বার বানিয়ে দেন এবং আপনি সেটার উপরে খুতবা করেন তখন সেই কাঠটি কাঁদতে লাগে। কান্নাটি সব মানুষ শুনতে পায়। তারপর হুজুর (সাঃ) সেই কাঠটির কাছে যান এবং তাঁকে চুপ করান যেমন মা তার সন্তানকে চুপ করায়। আর কাঠটি চুপ হয়ে যায়।
৭) পাথরের তাসবীহ ও বেজানের উচ্চারণ:
আলি ইবন আবি তালিব (র:) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন যে: আমরা হুজুর (সাঃ)-এর সাথে মক্কায় ছিলাম। যখনই জঙ্গলের দিকে বার হন তখনই আমাদের নবীকে গাছ ও পাহাড় আসসালামু আলিকুম ইয়া রাসুলাল্লাহ হলে স্বাগতম জানায়।
৮) একদিন একটি উট এসে নবীর কাছে নালিশ করে যে তাঁর সাহাবা তাকে ব্যাবহার করে এবং এখন তাকে কুরবানি করতে চায়। তারপর হুজুর (সাঃ) তার জন্য সুপারিশ করেন।
৯) বিদায় হজের দিনে এক বাচ্চাকে হুজুর (সাঃ)-এর কাছে নিয়ে আসা হয়। আর বাচ্চাটি সেই দিনই জন্ম হয়ে ছিল। হুজুর (সা) সেই বাচ্চাকে জিজ্ঞাসা করেন: “আমি কে?” বাচ্চাটি উত্তরে বলে: “আল্লাহর রাসুল”। হুজুর (সাঃ) বলেন: “তুমি সত্যি বলেছ”। তারপর সেই বাচ্চাটির নাম রাখা হয় মুবারাকুল ইয়ামামাহ।
১০) কুরআন শারীফ:
কুরআন শারিফ হুজুর (সাঃ)-এর সব থেকে বড় মোজেজা। কারণ আল্লাহ যখন আরববাসীদেরকে একটি ছোট একই সূরা নিয়ে আসার জন্য চ্যালেঞ্জ করেন, তখন তারা সবাই হেরে যায়। অথচ নবীর অনেক শত্রুরা সাহিত্য পন্ডিত ছিল, তবুও তারা অক্ষম হয়।