নবী মুহাম্মদের (সা:) মহৎ চরিত্র
বিশ্ব ইতিহাসে সর্বোত্তম চরিত্রের উদাহরণ নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর মধূর্যুপূর্ণ জীবনাচরণ। তিনি জীবনের সব পর্যায়ের জন্য শ্রেষ্ঠ আদর্শ। মহান স্রষ্টা, বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের নিয়ন্ত্রক আল্লাহ তা'আলার ঘোষণা:
"এবং নিশ্চয়ই আপনার চরিত্র তো মহান মর্যাদারই।" (কুরআন, ৬৮:৪)
অনুরূপ হাদিস থেকে দুটি বিবৃতি:
আনাস ইবন মালিক (রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকল মানুষের মাঝে সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী ছিলেন। (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন: উত্তম আদর্শের পূর্ণতা দান করার জন্যই আমাকে রাসূল করে পাঠানো হয়েছে। (আহমদ)
বিভিন্ন ভূমিকায়
দ্য হিউম্যানিটি অফ মোহাম্মাদ: এ খ্রিস্টিয়ান ভিউ (The Humanity of Muhammad: A Christian View)-এর লেখক ড. ক্রেজ কনসিডিন বলেন: আরবীতে মুহাম্মদ অর্থ প্রশংসনীয়…। তিনি অল্প বয়স থেকেই আরবীতে আল-আমিন নামে পরিচিত যার অর্থ বিশ্বস্ত। মহান মুহাম্মাদ একজন নবী, রাষ্ট্রনায়ক, সামরিক জেনারেল, বিপ্লবী, আইন প্রণেতা, মুক্তিদাতা, কূটনীতিক, ব্যবসায়ী, আন্তঃসাংস্কৃতির পরিদর্শি, সমাজ নির্মাতা, বন্ধু, স্বামী এবং বাবা সহ অনেক ভূমিকা পালন করেছেন। এই তালিকা আরও লম্বা।
অনন্য সমাধান
বর্তমান বিশ্ব যে সমস্ত সমস্যার সম্মুখীন তার অনন্য নিরাময় হচ্ছে নবী (সাললাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) প্রদত্ত জীবন পাঠ। এই শিক্ষা সমাজে শান্তি ও সহনশীলতা বজায় রাখার উপায় দেখায়। বাস্তব উদাহরণ মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর প্রাক ও পরবর্তী সময়কাল প্রত্যক্ষ করলে জানা যায়। কিন্তু নবী কারীম (সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম) আরব সমাজের গতিপথকে সম্পূর্ণভাবে বদলে দিয়ে মানবজাতিকে বিপদ থেকে উদ্ধার করেছেন। আগামীতে একই আরব থেকে দক্ষ নেতা, প্রশাসক, শিক্ষক, শাসক, বিজ্ঞানী এবং সেনাপতি উদ্ধৃত হয়। এছাড়াও, ইসলাম বাণী চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়লে সারা বিশ্ব এক নবদিশা অর্জন করে।
মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি সাল্লাম)-এর বিনম্র আকর্ষণীয় চরিত্র অনুসারীদের হৃদয়ের মাঝে আবেগ, উদ্দীপনা, সৃজনশীলতা এবং নৈতিকতার প্রক্রিয়া তৈরি করে। ফলত: বিশৃঙ্খল সমাজ শান্তিপূর্ণ ও সচ্ছল হয়ে দাঁড়ায়। নবীজির (সাল্লাল্লাহু আলাইহি সাল্লাম) চরিত্র একদিকে যেমন প্রেম, স্নেহ, দানশীলতা, সরলতা, দয়া, সততা, সদাচরণ ইত্যাদি গুনাগুনের বৈশিষ্ট্যে অন্তর্ভুক্ত; অনুরূপ হিংসা, বিদ্বেষ, লোভ-লালসা, শত্রুতা, অহংকার, প্রভৃতি কুমন্ত্রণা থেকে মুক্ত। শুধুমাত্র ধার্মিক ব্যাপারই নয়, বরং ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে সচ্ছলতা নিয়ে আসার এসব মূল উপকরণ। অর্থাৎ দুনিয়া ও আখেরাতে সফলতার পুঞ্জি নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি সাল্লাম) এর এই মহৎ চরিত্রসমূহ।
মূল উৎস
হযরত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি সাল্লাম)-এর অনুকূল জীবনাদর্শের প্রেরণা উৎস স্বয়ং আল্লাহ তাআলার কালাম কুরআ'ন। সা'দ বিন হিশাম (রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু) বলেন: আমি আয়েশা (রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহা)-কে জিজ্ঞেস করলাম: ''আমাকে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম)-এর চরিত্র সম্পর্কে বলে দিন।' তখন তিনি বললেন: 'তাঁর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি সাল্লাম) চরিত্র কুরআ'ন ছিল।' অর্থাৎ নবীজীর জীবনধারা ছিল কুরআনের আদেশ এবং অধ্যাদেশ অনুসারে।