প্রেম যখন নবী মুহাম্মদ সাঃ এর সাথে

কাউকে ভালোবাসা মানে তাকে মন প্রাণ থেকে চাওয়া আর তার সন্তুষ্টি অর্জন করা যা তার আবেগ ও অনুভূতি প্রধান ভূমিকা পালন করে । আর সেই সন্তুষ্টি অর্জন করার জন্য এক প্রেমিক তার প্রিয়জনের জন্য জান ও  প্রাণ থেকে  চেষ্টা করে তা পূর্ণাঙ্গ ভাবে পূরণ করতে।

কবি যেন বলেছেন-

"ভালোবাসা ভালোবাসে শুধুই তাকে; 

ভালোবেসে ভালোবাসায় বেঁধে যে রাখে।"

আর কেউ যদি কাউকে ভালবাসে তাহলে তার কিছু চিহ্ন বা নিদর্শনসমূহ যেমন তাকে তার প্রতি কর্মে অনুসরণ বা অনুকরণ করা ও তার পছন্দনীয় জিনিসকে আপন পছন্দনীয় জিনিস করে নেওয়া এবং তার অপছন্দনীয় জিনিসকে আপন অপছন্দনীয় জিনিস গড়ে তোলা ও অতিরিক্ত সম্মান ও আদব করা। তার প্রতিটা আদেশ, নির্দেশ ও নিষেধ সবকিছুই পাই পাই করারই অপর নাম ভালোবাসা।

তাই বলা যেতে পারে ভালোবাসার অপর নাম হল অনুসরণ। 

সে ক্ষেত্রে আল্লাহ তায়ালা নিজেই কুরআন শরীফে বলছেন- 'হে রসূল বলুন, যদি

তোমরা আল্লাহকে ভালবাস, তাহলে আমাকে অনুসরণ কর, যাতে‌ আল্লাহ ও তোমাদিগকে ভালবাসেন এবং তোমাদিগকে তোমাদের পাপ মার্জনা করে দেন। আর আল্লাহ হলেন ক্ষমাকারী দয়ালু।'

 প্রেম বা ভালোবাসাকে বিভক্ত গেলে প্রায় ভিন্ন রকম হয় যেমন দেখতে গেলে নিজে মা-বাবাকে ভালোবাসা ও নিজের মনের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করা সেটাও একরকম ভালোবাসা কিন্তু ইসলামিক ক্ষেত্রে সর্ব উত্তম ভালোবাসা বা প্রেম হল নবী মুহাম্মদ সাঃ কে সবার চেয়ে ভালোবাসা। আর এই কথাটি নবী মুহাম্মদ সাঃ নিজেই হাদিসে বলেছেন- 

لا يؤمن احدكم حتى أكون احب اليه من ولده ووالده

  والناس اجمعين

 (তোমাদের মধ্যে কেউ মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না আমি তার নিকট তার পিতা মাতা, সন্তান এবং সকল মানুষ অপেক্ষা প্রিয়তম হয়েছি।)

আজ বর্তমান সমাজে আমাদের হৃদয় বা মন পার্থিব জিনিসের দিকে আকৃষ্ট হয় আর সেটাকে আমরা পেতে যতই বাঁধ  ভাঙতে হয় না কেন কোন পরোয়া করিনা, কিন্তু কখন আমরা ভাবি না যে সেই ভালোবাসার ফল কি আমরা সে পরকালে পাব ?সেই ভালোবাসা কি আমাদের সাথে পরকালে সঙ্গী হবে?

সুতরাং নবী মুহাম্মদ সাঃ এর প্রেমিক হলে ইহকাল ও পরকালে সফল হবে আর পরকালে তিনার সঙ্গী হবে।

আর এই জাহানের মালিক মহান আল্লাহ তায়ালার একজন উত্তম বন্ধু বা প্রিয়জন হলেন সর্বশ্রেষ্ঠ মানব নবী মুহাম্মদ সাঃ যা বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন রূপে প্রকাশিত। নবী মুহাম্মদ সাঃ এর আশিক বা প্রেমিক তিনার যুগে অনেক ছিলেন।তিনার প্রেমিক হিসেবে উত্তম উদাহরণ হল তিনার সাহাবাগণ যারা তিনার জন্য নিজ জান ও প্রাণ কুরবান করতে পিছপা হননি আর আল্লাহ রাস্তায় শহীদ হয়েছেন। চার খলিফা এক বড়ো উদাহরণ তাঁর প্রেমিক হিসেবে।এমন কি বলা হয় মিশরের নারীরা নবী ইউসুফ (আঃ) এর সৌন্দর্যের জন্য নিজস্ব হাত কেটেছিল কিন্তু আরবের যুবকরা নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লামের ক্ষেত্রে নিজের গলাও কাটতে দ্বিধা করেননি এমনকি নিজ পরিবার শহিদ পরও নবী সাঃ এর সুস্থতা না যাচাই করে চুপ থাকেননি  ও আর এক সাহাবী নবী মুহাম্মদ সাঃ ইন্তেকালের খবর শুনে আল্লাহ কাছে মিনতি করেন যেন তার চোখের দৃষ্টি শক্তি নিয়ে নেই কারণ সেই চক্ষু আর তার প্রেমিককে পাবেন না,  এমন ছিলেন তাঁর প্রেমিকগন  যারা নবীর প্রেমে পাগল ছিল। উয়াইস আল কারনি যিনি ইয়ামেনের এক বিখ্যাত সুফি সাধক ও নবী মুহাম্মদ সাঃ এর বিশাল বড় প্রেমিক যিনি নবী মুহাম্মদ সাঃ এর দন্ত মোবারক শহীদ এর কথা শুনে নিজের সমস্ত দন্ত ভেঙ্গে ফেলে।

তারপর দেখতে গেলে তিনার উম্মতের বিশেষ বুজরোকরাও নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম এর প্রেমে মগ্ন ছিলেন। আর সেই প্রেমের প্রমাণ দিতে মস্ত খন্ডের বইও লিখে ফেলেছিলেন ও তাদের মধ্যে কেউ কেউ কবিতার মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন। যাদের মধ্যে হল ইমাম বূসুরী (রাহঃ) যিনি দাসত্বের ও এক উত্তম প্রেমিক হিসেবে প্রমাণ বা পরিচয় দিতে গিয়ে নবী মুহাম্মদ সাঃ এর প্রশংসা করে এক কবিতার বই লিখেছিলেন যেটি 'কাসিদাতুল বুরদা' নামক জানা যায়। যেটি পড়লে পাঠককে মনে হবে সে যেন নিজেই আবেগ ও ভালোবাসা প্রকাশ করেছে।

আর এক প্রেমিক যিনি সঠিক আকিদা বাঁচাতে অনেক যুদ্ধ করেছেন আর নবীর প্রেমে মিশ্রন বার্তা প্রচার করেছিলেন তিনি হলেন ইমাম আহমাদ রেজা খান বেরেলবী (রাহঃ) যিনি ইসলাম সংস্কারে নবী মুহাম্মদ সাঃ কে কি ধরনের বা কেমন করে ভালবাসতে বা প্রেম করতে হয় তা প্রচুর বিশ্বস্ত ভাবে ব্যাখ্যা করে গেছেন।

নবী মুহাম্মাদ সা: এর সন্তুষ্টি লাভের আশা না করা

এক অভাগার পরিচয়।

Related Posts

Leave A Comment

Voting Poll

Get Newsletter