সূরা আল কাহাফের বিষ্ময়পূর্ণ বৈশিষ্ট্য

এই সূরার সম্পর্কে ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ কুরাইশরা নাযার ইবনে হারিস ও উকবাহ ইবনে মুঈত'কে মদিনার ইহুদী আলেমদের নিকট পাঠিয়ে দেয় এবং তাদেরকে বলেঃ তোমরা তাদের কাছে গিয়ে তাদের সামনে মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর সমস্ত অবস্থা বণর্না করে বলো। তারাই প্রথম কিতাবপ্রাপ্ত হয়েছিল। পূর্ববর্তী সম্পর্কে তাদের বেশি জ্ঞান আছে। সুতরাং মুহাম্মাদ (সাঃ) সম্পর্কে তাদের মতামত কী তা তাদেরকে জিজ্ঞেস করবে।
এই দুজন তখন মদীনার ইয়াহুদী আলেমদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এবং তাদের সম্মুক্ষে মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর বাক্যবলী ও গুণাবলী বণর্না করে। তারা এদেরকে বলেঃ দেখ, আমরা তোমাদেরকে একটা মিমাংসাযুক্র কথা বলছি যে, তোমরা ফিরে গিয়ে তাঁকে তিনটি প্রশ্ন কর, যদি তিনি উত্তর দিতে পারেন তাহলে তিনি যে সত্য নবী এতে কোনো সন্দেহ নেয়। আর যদি উত্তর দিতে না পারেন তাহলে তাঁর মিথ্যাবাদী হওয়া সম্পর্কে কোনো সন্দেহ থাকবে না। তখন তোমরা তাঁর ব্যাপারে যা ইচ্ছা করতে পার। তোমরা তাঁকে জিজ্ঞেস করবেঃ-  
১) পূর্বযুগে যে যুবকগন বেরিয়ে গিয়েছিলেন তাঁদের ঘটনা বর্ণনা করুন। 
২) কোন ব্যাক্তি পূর্বপ্রান্ত হতে পশ্চিপ্রান্ত পর্যন্ত ঘুরে এসেছিলেন? 
৩) রুহের অবস্থা সম্পর্কে কী মতামত? 
তারপর এরা দুজন মক্কায় ফিরেগিয়ে কুরাইশদেরকে বললঃ চূড়ান্ত ফাইসালার কথা ইয়াহুদী আলেমগন বলেদিয়েছেন। চলো, তাঁকে প্রশ্ন করি। নবীর কাছে গিয়ে এই তিনটি প্রশ্ন উপস্থাপন করি। তারপর তারা নবীর কাছে গিয়ে এই তিনটি প্রশ্ন করল, তখন নবী বললেনঃ তোমরা আগামি কাল এসো। ওাহি আসতে পনেরো দিন লেগে যায়। তারপর জিব্রাঈল (আঃ) অবতীর্ণ করেন সূরা আল-কাহফ। 

কাহফ সূরা তিলাওয়াত করার ফায়দা:
মুসনাদে আহমাদে বর্ণিত হয়েছে: একজন সহাবী এই সূরাটি পাঠ করতে শুরু করেন। তার বাড়িতে একটি পশু ছিল। সে ভয়ে লাফাতে শুরু করে। সহাবী গভীর ভাবে দৃষ্টিপাত করে একখন্ড মেঘ দর্শন করতে পান যা তার উপরে ছায়া দিচ্ছিল। তিনি উহা নবী (সাঃ)-কে বর্ণনা করেন। রাসুল (সাঃ) বলেনঃ তুমি সূরাটি পাঠ করতে থাক। এটা হচ্ছে আল্লাহর পক্ষ হতে ঐ সাকীনা যা কুরআন পাঠ করার সময় অবতীর্ণ হয়ে থাকে। এই সূরা পাঠকারী ছিলেন উসায়েদ ইবন হুযায়েদ (রাঃ)। 
আর একটি হাদিসে বণির্ত আছে: যে ব্যাক্তি জুমু’আর দিনে সূরা কাহফ পাঠ করে তার জন্য দুই জুমু’আর মধ্যবর্তী সময় আলোকিত হয়ে থাকে। আতঃপর মুসতাদরাক হাদিসে মরফু রূপে আবূ যাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেনঃ এ হাদিসের বর্ণনা ধারা সহীহ। 
 
গুহাবাসীদের আলোকিত ঘটনাঃ 
 
কয়েকজন যুবক সত্য দীনের প্রতি আকৃষ্ট হয় এবং হিদায়াত লাভ করে। মুজাহিদ (রাঃ) বর্ণনা করেনঃ তারা বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত ছিল। আল্লাহ তাআলা তাদের হৃদয় এই অনুভূতি জাগিয়ে তোলেন যে, আল্লাহ তাআলা কে ভয় করা উচিত। সুতরাং তারা তাঁর একাত্মবাদকে শিকার করে নেয় এবং এই সাক্ষ্য প্রদান করে যে আল্লাহ ছাড়া আর কেউ ইবাদাতের যোগ্য নেয়।  
সেই গ্রামে দাকয়ানুস নামে একজন কাফির রাজা ছিল। সে সবাইকে কুফুরির দিকে ডাকত। কিন্তু এই যুবকরা আল্লাহ তাআলাকে ভয় করে আশ্রয়ের উদ্দেশে গুহায় প্রবেশ করে। 

 গুহায় আবস্থান কালঃ 
গুহায় আবস্থানের কাল সূর্যের হিসাবে ৩০০ বছর এবং চাঁদের হিসাবে ৩০৯ বছর। আল্লাহ তাআলা কুরআন শারীফে বর্ণনা করেছেনঃ 
ولبثوا  في كهفهم ثلاث مائة سنين وزدادوا تسعا 
 
গুহাবাসীদের মোট সংখ্যাঃ  
ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ যাদের সংখ্যা সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান আছে সেই অল্প সংখ্যক লোকের মধ্যে আমি একজন। আমি জানি যে, তারা ছিলেন সাতজন। 
আতা খুরসানী (রাঃ) তাঁর উক্তি উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন যে, তাঁরা ছিলেন সাতজন। সঠিকতার দিক থেকে ইবনে আব্বাসের (রাঃ) বর্ণনা উত্তম যথা তাঁরা ছিলেন সাতজন।  
سيقولون ثلاثة رابعهم كلبهم ويقولون خمسة وسادسهم كلبهم رجما بالغيب ويقولون سبعة وثامنهم كلبهم
 
গুহাবাসীদের নামঃ  
১) মাক্সাল্মিনা   ২) ইয়াম্লিখা   ৩) মারতুনাস   ৪)বিনুনাস                                                                                                                       ৫)সারিনুনাসয   ৬)জুনাওয়ানাস  ৭)তানুনাস   ৮)কিত্মির।

Related Posts

Leave A Comment

Voting Poll

Get Newsletter