সিবাক:  দারুল হুদায় জাতীয় কলা প্রতিভার মহা যুদ্ধ

 মেন স্টেজের সামনে দাঁড়িয়ে শামি আকস্মিকরায় বলে উঠে: এরকম বৈচিত্র্যপূর্ণ প্রোগ্রাম কী কোনো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত হয়? যেমন জেএনইউ, আমু বা জামিয়া মিলিয়া।" পাশে দাঁড়িয়ে তার বন্ধু শাহী বলে: "এদেশে তো দূরের কথা অক্সফোর্ডে হয় কি তার সম্ভাবনা আছে।  কিন্তু হতেও পারে।" 

   তাদের কথোপকথন দক্ষিণ ভারতের কেরালায় অবস্থিত বিখ্যাত ধর্মীয় ও আধুনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল হুদা ইসলামিক ইউনিভার্সিটিতে দ্বিবার্ষিক সিবাক নামী জাতীয় কলা উৎসবের জমকালো আড়ম্বর ও অনুষ্ঠানের পূর্বপ্রস্তুতি দেখে আরম্ভ হয়। ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রাই এক সপ্তাহব্যাপী এই  উক্ত কলা প্রতিযোগিতার মহাৎসব অনুষ্ঠিত হবে। 

উদ্বোধন: এক নতুন নেতৃত্বের সূচনা

দিনের সন্ধ্যায় নবী বংশধর সৈয়দ হামীদ আলী থাঙ্গলের হস্ত দিয়ে কলাৎসবের উদ্ভোধন হয়।  উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ ব্যাক্তিত্ব উপস্থিত ছিলেন যেমন সর্বাগ্রে প্রতিষ্ঠানের উপাচার্য বাহাউদ্দীন মুহাম্মদ নদভী সাহেব, প্রতিষ্ঠান সভাপতি শাফী হাজী, কেরালা কংগ্রেসের বিশেষ নেতা ভি.ডি শাতিসন, প্রমুখ। কলা প্রতিভার এই মঞ্চে অনবরত চলতে থাকে স্নাতক ছাত্রদের বিভিন্ন সংস্কৃতিক উপস্থাপন। 

তার আগে বৈকালে সৈয়দ কুতুবুজ্জামানের মাজার জিয়ারত এবং সেখান থেকে ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণ পর্যন্ত প্রত্যেক টিমের এক বিশেষ র‍্যালির আয়োজন করা হয়। সকল টিম প্রতিনিধি তাদের প্রতীক তুলে ধরে আকর্ষণীয় প্রদর্শন করে। সেখানে যেন এরকম অনুভূতি হচ্ছিল যে পুরো বিশ্বের বিভিন্ন সমাজ সংস্কৃতি এই ভার্সিটি প্রাঙ্গণে এসে নিজ নিজ পতাকা তলে দাঁড়িয়েছে। 

কলা-প্রতিভার সংমিশ্রণ 

যে সকল প্রতিযোগীরা প্রথম বাছাই পর্ব অতিক্রম করেছে তারা  চূড়ান্ত পর্বে নিজ  দক্ষতা প্রদর্শন করবে। মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গ, অসম, অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্ণাটক এবং বিভিন্ন রাজ্য থেকে দুই হাজার অধিক শিক্ষার্থীরা মোট ৩৫০টি প্রতিযোগিতায় অংশ নিবে।  বিশেষ আকর্ষণের প্রোগ্রামে অন্তর্ভুক্ত প্রতিযোগিতাগুলি হল কিরাত, ব্রিটিশ পার্লামেন্টারি ডিবেট, রিভার্স কুইজ, কাওয়ালি, মুশায়ারা, ইত্যাদী।

শিক্ষার্থীদের লুকিয়ে থাকা প্রতিভা বহিঃপ্রকাশের উদ্দেশ্যে এমন এক বিরাট উদ্যোগ। প্রতিষ্ঠানের ছাত্র সংগঠনের (ডিএসইউ) উদ্যোগে পরিচালিত উক্ত কলাৎসবে রাজ্য ও দেশের সকল অফ ক্যাম্পাস এবং শাখা থেকে পড়ুয়ারা অংশ গ্রহণ করবে।

ইতিহাস-ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনার ডাক 

সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানটি সিবাক ২০২২ তার মোটো 'প্রক্লেইমিং পোস্টেরিটি, রেক্লেইমিং লেগেসি'-র মূল সারমর্মকে তুলে ধরে বিভিন্ন রংবেরঙের কলা সংস্কৃতির ঐতিহ্য-চিত্র তুলে ধরেছে। 'ইন্ডিয়া কামস টু চেম্মাদ'-র দাবি এখানেই বাস্তবিত হয়। মোট সাতটি প্রোগ্রাম ভেন্যুর ঐতিহ্যসংযুক্ত নাম দূরে ফেলা ঐতিহাসিক পাঠ আবার মনে করিয়ে দেয়। সিবাকের মূল সঙ্গীত বা থিম সং  বর্তমান পরিস্থিতিকে পরাজিত করে অতীতকে ফিরিয়ে আনার মনোবল জায়গায়। 

'২২-র বিশেষ বৈশিষ্ট্য

দারুল হুদার আন্তঃকলেজ প্রতিযোগিতা সিবাক এবছর তার ষষ্ঠম সংস্করণে। সিবাক'২২-এর এক বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল অনুষ্ঠানটি পরিপূর্ণভাবে বিভিন্ন উন্নত টেকনোলজি পরিষেবা সমর্থন করে অতি আকর্ষিত হয়ে উঠেছে। সাউন্ড ট্র্যাক, লাইটিং, প্রোগ্রাম লিস্টিং ইত্যাদি ডিজিটাল কর্মাবলী খুব দক্ষতার সঙ্গে সজ্জিত করা হয়েছে। তাছাড়া প্রোগ্রাম পূর্বের বিভিন্ন প্রচার পন্থা দেশজুড়ে প্রত্যেক দর্শককে মুগ্ধ করে। অবশ্যই সেই সকল প্রোগ্রাম পূর্বের প্রচার এখন তার অতি বাস্তব রূপে উপস্থাপিত হচ্ছে। 

Related Posts

Leave A Comment

Voting Poll

Get Newsletter