হজরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহুআনহু
ইসলামের এক অন্যতম সাহাবী হলেন হজরত আবু হুরাইরা (রাদিয়াল্লাহুআনহু) তিনি একজন ইসলামের বিখ্যাত সাহাবী, তিনি খুব ছোট বয়সে বিখ্যাত সাহাবি হজরত তুফায়ি হবনে আদ দাওসীর হাতে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। পরে হুজুর (সঃ)এর সঙ্গে দেখা হলে ৬ বছর গোলাম হিসাবে থেকে যান তিনি। একদা তিনি কান্না করতে করতে হুজুর (সঃ) এর কাছে যায় কেননা তিনার আম্মা জান আবু হুরাইরা (রাদিয়াল্লাহুআনহু) কে খুব মারধর করেছিল ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার জন্য। তাই তিনি মায়ের কাছে মার খেয়ে কান্না করছিলেন । তাকে ডেকে বললেন, যে আমি তো তোমার জন্ম ধরণী মার বিরূদ্ধে কিছু করতে পরব না। আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহুআনহু বললেন আমার আম্মাজান এর হেদিয়েত পাওয়ার জন্য মহান আল্লাহর দরবারে দুয়া করুন। হুজুর (সঃ) দুয়া করলেন এবং আল্লাহ তায়ালা তিনাকে হিদায়াত দান করলেন এবং আবু হুরারা রাদিয়াল্লাহুআনহুর আম্মা জান ইসলাম গ্রহন করে মুসলিম হয়ে গেলেন।     
                                                                                 নামকরণ: হজরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহুআনহুর ইসলাম গ্রহন করার পূর্বে নাম ছিল আবদু শামস, ইসলাম গ্রহন করার পরে হুজুর (সঃ) নাম রাখেন আব্দুর রাহমান, তিনাকে আবু হুরাইরা কেন বলা যায় ? তা আমরা অনেক মুসলিম জানে না , আসলে আবু হুরাইরার অর্থ হচ্ছে বিড়ালের বাবা। এই নামের পিছনে একটি এক মজার কাহানি রয়েছে, আসলে আবু হুরারা (রঃ) বিড়াল খুব পছন্দ করতেন তিনি সব সময় বিড়াল ছানা কাছে রাখতেন এক দিন হুজুর (সঃ) দরবারে যখন সব সাহাবীগন বসে ছিলেন সেই সময় তিনার পকেট থেকে এক বিড়াল ছানা বেরিয়ে পড়ল বিড়াল ছানা দেখে হুজুর (সঃ) মজা করে বলে উঠলেন, এই আবু হুরাইরা আর্থাৎ এই বিড়ালের বাবা। সেই থেকে আব্দুর রহমান রাদিয়াল্লাহুআনহু কে আবু হুরাইরা বলে সমস্ত মুসলিম সমাজ তিনাকে চেনে থাকে।
আবু হুরারা (রঃ)এর জ্ঞান অর্জন: 
 আবু হুরাইরা (রঃ) এক জন জ্ঞান পীপাসু ছিলেন। তিনি সব সময় হুজুর (সঃ) কাছে জ্ঞানের কথা শুনতে ভাল বাসতেন । হুজুর (সঃ) এর কাছ থেকে প্রায় ৫৩৭৪ এর ও বেশি হাদিস মুখস্ত করে ছিলেন আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহুআনহু । ইমাম বখারি (রাহঃ) বলেন, প্রায় ৮০০ ও বেশি হাদিস আবু হুরাইরা (রঃ) কাছ থেকে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। এক বিখ্যাত সাহিবী হজরত যায়িদ বিন সাবিত রাদিয়াল্লাহুআনহু বলেন আমি একসময় হজরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহুআনহু সঙ্গে নামায আদায় করতে মসজিদে গেলাম নাময পরে আবু হুরাইরা (রঃ) দুয়া করেছিলেন, হে আল্লাহ আমাদের এমন জ্ঞান দান কর যেটা আমরা কোনো দিন ভুলে যাবনা।
 তিনি এক জন দানি ব্যাক্তি ছিলেন। আসহাবু সুফ্ফাহর এক জন সদস্য ছিলেন,সর্বদা দান আল্লাহর রাস্তায় টাকা পয়সা খরচ করতে ভালবাসতেন, একদা আবু হুরাইরা (রঃ) মেয়ে একটা মালা কিনে নিতে চাইলে তিনি বলেন যে আমি আমার টাকা আল্লাহর রাস্তা ছাড়া কারও জন্ন্যে খরচ করতে চায়না। একদা একজন সাহাবী যার নাম হজরত মারওয়ান ইবনে হাকাম (রঃ) হজরত আবু হুরাইরা (রঃ) কে ১০০ দিনার আমানত হিসাবে দেয়। কিন্তু আবু হুরাইরা (রঃ) কাছে জদি টাকা বা পয়সা থাকত তাহলে, আর সেই সময় কনো আসহায় মানুষ দেখতে পেলে আগে পিছে কিছু না ভেবে তিনি আল্লাহর রাস্তায় দান করে দিতেন , তাই তিনি সেই কিজটি করলেন তিনি সেই ১০০ দিনার টিকে দান করে দিলেন। পরে ইবনে হাকাম (রঃ) আমানতটা চাইতে এলে তিনি বলেন যে আমি যখন বাইতুল মাল থেকে বেতন পাব তখন তোমায় শোধ করে দিব। তিনি এতটায় দানশীল প্রকৃতির মানুষ ছিলেন।
তিনি আনেক দিন শুধু এক বেলা খেয়ে দিন পার করে দিতেন, বা আনেক সময় পেটে পাথর বেঁধে বেড়াতেন, আনেক সাহাবী তিনাকে বাড়ি নিয়ে গিয়ে খাওয়াতেন। একদা এক সাহাবী তিনাকে বাড়ি নিয়ে গেলেন তার বাড়িতে সুধু ঘি ছাড়া কিছু ছিল না তিনি সেই ঘি চেটে চেটে খেয়ে তৃপ্তি অনুভব করলেন। কিন্তু পরে বিয়ে করে সুখী হন ও আল্লাহ তায়ালা ধন-সম্পদ দান করেন।
ইবাদত হজরত আবু হুরাইরা (রঃ) অর্ধেক রাত পর্যন্ত নামায পড়তেন ও নিজের মেয়ে দের ঘুম থেকে উঠিয়ে দিতেন এই ভাবে তিনার ঘরে সারা রাত নামজ হত।  
 মৃত্যু:
তিনি পরলোক গমন করেন ৬৭৬ (খ্রিঃ) আবু হুরাইরা (রঃ) এর সঙ্গে দেখা করতে এসে ছিলেন মারুওয়ান ইবনে হাকাম তিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার পরে শেষ নিশ্বাস নেই আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহুআনহু জানাযা নামজ পড়ান এক জন সাহাবী হজরত ওয়ালিদ বিন উকবা (রাদিয়াল্লাহুআনহু)।

Related Posts

Leave A Comment

Voting Poll

Get Newsletter