তারাবীর নামাযের বিবরণ
পবিত্র রমযান মাসে এশার চার রাকাত ফরয নামায আদায় করার পর দু-রাকাত সুন্নত নামায পরে তারাবীর নামায পড়া হয়। আর তারাবীর নামায হচ্ছে সুন্নাতুল-মুয়াক্কদা। তারাবীর নামাযে পবিত্র কোরআন শরীফ খতম করায় [খতম তারাবী] আল্লাহার নিকট থেকে অনেক নেকী অর্জন করা যায় এবং সেটাতে অনেক শাওয়াব আছে। এ ছাড়া তারাবীর নামায যেকোনো সূরাহ দিয়েও পড়া যায় এতে কনো অসুবিধা নাই। তারাবীর নামায মোট বিশ [২০] রাকাত হই। তারাবীর বিশ-রাকাত নামায পরার পরে তিন-রাকাত বেতের-নামায জামাতের সাথে আদায় কোরতে হয়। তারপর তিন-রাকাত বেতের-নামায পরার পরে দুই-রাকাত নফল নামায আদায় করে দোয়া-দরুদ পড়ে মোনাজাত করবে। আর তারাবীর নামায জামাতের সঙ্গে পড়াটাই বাশি উত্তম ও ভালো। এছাড়া তারাবীর নামায একা-একাও পড়া যাবে এতে কোনো বাধা নাই।
তারাবীর নামাযের ফযিলতঃ- যেমন পবিত্র রমযান মাসে রোযা রাখাতে নেকী পাওয়া যায় তারাবীর নামায পড়াতেও সেই একিই রকম নেকী পাওয়া যায়। এবং এই তারাবীর নামায শুধু রমযান মাসে পড়া যায়। আর তারাবীর একটি সেজদাতে ১৫ হাজার নেকী অর্জন করা যায় তাহলে তারাবীর নামাযের সেজদা মোট ৪০ রাকাত তাহলে ৬০ লাখ নেকী আমরা অর্জন করতে পারব শুধু এই রমযান মাসের তারাবীর নামায পরে। আর যে ব্যাক্তি তারাবীর পুরো নামায ইমাম এর সঙ্গে পড়বে অর্থাৎ প্রথম সালাম থেকে নয়ে শেষ সালাম পর্যন্ত ইমাম এর সঙ্গে তারাবীর নামায পড়বে তার জন্য আল্লাহ তাআলা যেমন পুরো রাত নামায পড়ার নেকী তার জন্য আল্লাহ তাআলা প্রদান করবে। এবং হাদিশ শরিফে রাসুল [সঃ] ইরশাদ করেছেন যে- من قامه إيمانا واحتسابا غفر له ما تقدّم منذنبه অর্থাৎঃ যে ব্যাক্তি রাতের বেলায় ইমান, নিয়াত, নেকী এবং শাওয়াবের সঙ্গে নামাযের জন্য দাঁড়ালো তার জন্য আল্লাহ তাআলা আগেকার যতসব ঘুনা আছে সব ঘুনাকে আল্লাহ তাআলা মাফ করে দিবে। শুধু মাত্র সেই রমযান মাসের রাতে নামায পড়ার জন্য। এবং আরও একটি হাদিশে রাসুল [সঃ] বর্ণনা করেছেন যে- من قام رمضان إيمانا واحتسابا غفر له ما تقدّم من ذنبه অর্থাৎঃ রাসুল [সঃ] ইরশাদ করেছেন যে কেউ ব্যাক্তি রমযানের রাতে তারাবীর নামায ইমান, নেকী ও নিয়াতের সঙ্গে আদায় করে, তার জন্য আল্লাহ তাআলা তার আগেকার যত ঘুনা আছে ওই সব ঘুনা মাফ করে দিবে- তারাপর ইবনে শাহাব [রঃ] বায়ান করেছেনঃ- তারপর রাসুল [সঃ] অফাত হয়েগেল আর মানুষেরা আলাদা-আলাদা নিজে-নিজে আর জামাতের সঙ্গে তারাবীর নামায পরছিল তারপর আবু বাক্কার [রঃ] এবং উমর [রঃ] এর খিলাফাতে এইরকমি নামায পরছিল। এবং এখনও সেই রকমই নামায পড়া হয়। তারাবীর নামাযে অনেক ফযিলত আছে এবং সেটাতে অনেক উপকারও আছে।
তারাবীর নামাযের নিয়তঃ-
نويت ان اصلّى للّه تعلى ركعتى صلوة التراويح سنّة رسول اللّه تعلى متوجّهًا الى جهة الكعبة الشريفة اللّه اكبر
অর্থাৎ: আমি তারাবীর দুই-রাকাত সুন্নত নামায আদায় করার জন্য কিবলামুখী হয়ে নিয়ত করলাম, আল্লাহু-আকবার।
তারাবীর নামাযের দোয়াঃ-
سبحان ذي الملك والملكوت سبحان ذي العزّة والعظمة والهيبة والقدرت والكبرياء والجبروت سبحان الملك الحى الّذي لاينام و لايموت سبّوح قدّوس ربّنا وربّ الملئكى والرّوح
অর্থাৎ: আমি সর্বময় ক্ষমতাময় আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করছি, ভয় প্রদর্শনকারী ইজ্জতকারি, শক্তিশালী ও সর্ব শক্তিমান আল্লহর পবিত্রতা ঘোষণা করছি। আমি ঐ জীবন্ত স্বত্বার পবিত্রতা ঘোষণা করছি, যিনি তন্দ্রা ও নিন্দ্রা যাননা এবং চিরকালের জন্য অমর। যিনি অনেক পবিত্র এবং ফেরেশতাগণ ও আত্মাসমূহের প্রতিপালনকারী।
উল্লিখিত দোয়াটি পড়া শেষ হয়ে গেলে অথবা পুরো বিশ রাকাআত তারাবীর নামায় পড়া শেষ হলে নিম্নলিখিত দোয়াটি তিনবার পাঠ করে মুনাজাত শুরু করবে।
اللّهمّ اناّ نسئلك الجنّة و نعوذبك من النّار يا خالق الجنّة والنّار برحمتك ياعزيز يا غفّاريا كريم يا سّتّار يا رحيم يا جبّار يا خالق يا بارّ- اللّهمّ اجرنا من النار يا مجير يا مجير يا مجيربرحمتك يا ارحم الرّاحمين.
অর্থাৎ: হে আল্লাহ তোমার নিকটে বেহেশতের জন্য প্রার্থনা করছি এবং জাহান্নামের আগুন হতে মুক্তি চাইছি। হে বেহেশত ও দোযখের সৃষ্টিকর্তা তোমারই অনুগ্রহের মাধ্যমে, হে ক্ষমতাশীলকারী, হে ক্ষমাকারী, হে পরম দয়ালু, হে উপকারী, হে আল্লাহ। তুমি আমাদেরকে দোযখের আগুন হয়তে বাঁচাও। হে রক্ষাকারী তোমার অনুগ্রহ দ্বারা আমাদেরকে দয়া কর।