প্রিয় খলিফা হযরত আবু বক্কর সিদ্দিক রাদিয়াল্লাহ আনহু

হযরত আবু বক্কর সিদ্দিক রাদিয়াল্লাহ আনহু মক্কার বিখ্যাত বংশের বড় ঘড়ের ব্যাক্তি ছিলেন। তিনার নাম ছিল কুহাফা ও তিনার মাতার নাম ছিল সাল্মা। তিনি মক্কা শরীফের ওই চারজন ভালো ভাগ্যবান মানুষদের মধ্যে একজন ছিলেন যারা সর্ব প্রথম হুজুর সাল্লল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের ওপর ইমান এনেছিল।                                

তারা চারজন হচ্ছে- হযরত খাদিজা রাদিয়াল্লাহ আনহা যিনি নারিদের মধ্যে সর্ব প্রথম ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তারপর হযরত আবু বক্কর রাদিয়াল্লাহ আনহু যিনি পুরুসদের মধ্যে সর্ব প্রথম ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তারপর হযরত আলী রাদিয়াল্লাহ আনহু যিনি ছেলেদের মধ্যে সর্ব প্রথম ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তারপর হযরত যায়েদ বিন হারিসা যিনি যুবকদের মধ্যে সর্ব প্রথম ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন।

তাদেরই মধ্যে হযরত আবু বক্কর রাদিয়াল্লাহ আনহু সব সময় সব কাজে সমস্ত কিছুতে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের সাথে থাকতেন। হুজুর সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের সমস্ত কথা এবং সমস্ত আদেশ মেনে চলতেন। আর তিনাকে সিদ্দিক বলে ডাকা হতো এই কারণে যে তিনি হুজুর সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের সমস্ত কথাই বিশ্বাস করতেন। তাই তিনাকে সিদ্দিক অর্থাৎ বিশ্বাস কারী বলে ডাকা হতো। যখন হুজুর সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম সাত আসমান পার করে মিরাজে আল্লার সাথে দেখা করতে গিয়েছিলেন এবং উপহার সরূপে পাঁচ ওয়াক্তের নামায এনেছিলেন। তার পরের সকালে যখন এই কথা হুজুর সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম  আবু বক্কর সিদ্দিক রাদিয়াল্লাহ আনহুকে বললেন, তখনই তিনি হুজুর সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের মিরাজের কথা বিশ্বাস করে নিলেন।

হুজুর সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের সাথে দ্বীন প্রচার

মুসলমান হওয়ার পর আবু বক্কর রাদিয়াল্লাহ আনহু ওই চেষ্টায় লেগে পড়লেন যাতে মক্কার আরও অন্য মানুষরাও ইসলাম কবুল করে মুসলমান হয়ে যায়। হুজুর সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম কে আল্লার নবী মানে। আল্লার হুকুম মেনে চলে। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের কথা মেনে চলে এবং আল্লাহ তাআলা কে খুশি করে জাহান্নাম থেকে বাচে।

মক্কায় আবু বক্কর রাদিয়াল্লাহ আনহু ছোট থেতে বড়, জাওয়ান থেকে বুড়ো সমস্ত লোকের সঙ্গে মেলা মেশা করত।তাদের কে সর্ব প্রথম ইসলামের দিকে দাওয়াত দিতে শুরু করল। বিশষ করে মক্কার বড় বড় ঘড়ের লোকদের এবং মক্কার নাওজাওয়ানদের।  হযরত আবু বক্কর রাদিয়াল্লাহ আনহু যখন লোকেদের ইসলামের দিকে দাওয়াত দিতেন তখন তিনি খুব পরিষ্কার এবং সহজ ভাষায় সুন্দর ভাবে লোকদের বোঝাতো।যার কারণে লোকরা কুব সহজ ভাবেই বুঝে যেত।এই                                                                                                                              দাওয়াতের খবর খুব তারাতারি ছড়াতে শুরু করল। অনেকজন মানুষ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করল। তাদের মধ্যে বেশির ভাগ বড় বড় ঘড়ের লোকরা এবং নাওজাওয়ান লোকরা ছিল।

তারা হচ্ছে - হযরত উসমান রাদিয়াল্লাহ আনহু, হযরত যুবায়ের রাদিয়াল্লাহ আনহু, হযরত আব্দুর রহমান বিন আউফ রাদিয়াল্লাহ আনহু, হযরত সায়িদ বিন ওক্কাস রাদিয়াল্লাহ আনহু, হযরত আবু উবাইদা বিন জারাহ রাদিয়াল্লাহ আনহু, হযরত তলহা রাদিয়াল্লাহ আনহু এবং হযরত আবু সালমা রাদিয়াল্লাহ আনহু। ইনারা সবাই হযরত আবু বক্কর রাদিয়াল্লাহ আনহুর দাওয়াত দেওয়ার পর ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে মুসলমান হয়ে গিয়েছিল।

মৃত্যু

১৩ হিজরি জামাদ আল-উখার মাসের ৮ তারিখ শনিবারের দিন ছিল। সেই সময়টা ছিল ঠান্ডা কাল। হযরত আবু বক্কর রাদিয়াল্লাহ আনহু গোসল করে ছিল এবং সেই কারণে তিনাকে জ্বর হয়ে গিয়েছিল। এই অসুস্থ ভাবেই তিনার দিন চলতে থাকল। কিছু দিন পর হযরত আবু বক্কর রাদিয়াল্লাহ আনহু তিনার মেয়ে হযরত আয়িশা রাদিয়াল্লাহ আনহাকে জিজ্ঞেস করলেন যে আজকের দিনটা কোন দিন? তখন আয়িশা রাদিয়াল্লাহ আনহা উত্তরে বললেন-সোমবারের দিন। তিনি আবার জিজ্ঞাসা করল যে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের কোন দিনে মৃত্যু হয়েছিল? আয়িশা রাদিয়াল্লাহ আনহা বললেন-সোমবারের দিনে।এই কথা শুনে আবু বক্কর রাদিয়াল্লাহ আনহু বলতে লাগলেন যেন আজকেই আল্লাহ তাআলা তিনাকে তিনার কাছে ডেকে নেয়।তারপর আবার জিজ্ঞাসা করলেন যে মৃত্যুর সময় হুজুর সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামকে কইটি কাপড়ে কাফন দেওয়া হয়েছি? তখন আয়িশা রাদিয়াল্লাহ আনহা বললেন: তিনটি কাপড়ে কাফন দেওয়া হয়েছিল। এই কথা শুনে হযরত আবু বক্কর রাদিয়াল্লাহ আনহু বললেন: আমার মৃত্যুর সময়েও যেন তিনটি কাপড়ে কাফন দেওয়া হয়। সেই দিনেই হযরত আবু বক্কর রাদিয়াল্লাহ আনহুর ইন্তেকাল হয়ে যায়। আর তিনাকে তিনার বলা কথা অনুযায়ি তিনটি কাপড়ে কাফন দেওয়া হয়। 

Related Posts

Leave A Comment

Voting Poll

Get Newsletter