হযরত আবুবাকর (রাঃ)-এর জীবনী
আরব দেশের পবিত্র মক্কা ভূমিতে কোরাইশ বংশটি ছিল সর্বশ্রেষ্ঠ এবং কুলিন। পৃথীবীতে এই বংশটি বিশেষ ভাবে পরিচিত ছিল । এই বংশে এই দুনিয়ার সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হযরত মুহাম্মাদ ﷺ জন্ম গ্রহণ করেছিলেন । এই বংশের একটি শাখার নাম হল বানী তায়েম । এই বানী তায়েমে হযরত আবুবাক্কার সিদ্দিক (রাঃ) জন্ম গ্রহণ করেছিলেন । তিনি ৫৭৩ খ্রিষ্টাব্দে জন্ম গ্রহন করেছিলেন। তার আসল নাম ছিল আব্দুল্লাহ এবং তার ডাক নাম ছিল আবুবাক্কার। তিনি ইসলাম গ্রহণ করার পর তাকে সিদ্দিক এবং আতিক উপাধি দেওয়া হয় । যার অর্থ হল বিশ্বাসী । তিনি সিদ্দিকি-ই- আকবর মর্যদাও লাভ করেছিলেন। তার পিতার নাম উসমান ইবনে আমের ও মাতা সালমা, তার কুনিয়াত ছিল উম্মুল খায়ের।
হযরত আবুবকর সিদ্দিক (রাঃ) ছিলেন চরিত্রবান ও ব্যক্তিত্বের মানুষ ছিলেন। সব সামাজিক ব্যাপারে কুরাইশগন তিনার কাছে যুক্তি পরামর্শ করতে আসতেন। তিনি ছিলেন একজন মক্কানগরীর অনেক ধনি ব্যাক্তি । তিনি ছোটোবেলা থেকেই তার বাবার সঙ্গে ব্যবসা করে প্রচুর ধন সম্পদ উপার্জন করেন ।তিনি বাল্যকালে নবী ﷺ এর সঙ্গে শাম ( সিরিয়া ) ব্যবসা করতে গিয়েছিলেন । তার সঙ্গে তিনি মক্কা নগরীতে বিশেষ সুনাম অর্জন করেন। যেমন সত্য ভাষণ,সদাচার, নম্রতা,মায়া,মমতা, এবং তিনি একজন বিদ্বান,ভালো বক্তা এবং কবিও ছিলেন তিনি । আত্মীয় শুত্রু মিত্র তাদের ধন সম্পদ আবুবকর রাঃ এর কাছে আমানত রাখতেন।
আবুবকর (রাঃ) ইসলাম গ্রহুণ করার পরে তিনি তার জীবনকে ইসলামের জন্য এবং নবী ﷺ সাথী হয়ে কাটিয়া ছিলেন। আনেক আঘাত হতে আবুবকর রাঃ নবী সাঃকে শত্রুদের হাত থাকে রক্ষা করেছিলেন। এর জন্য নবী সাঃ আবুবকর (রাঃ) কে খুব ভালোবাসতেন। হজরত আবুবকর (রাঃ) নবী ﷺ এর চেয়ে ২ বছর ২ মাস ১০ দিনের ছোট ছেলেন। তিনি ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হওয়া পর তার সমস্ত ধনওসম্পদকে এবং ৪০ হাজার স্বর্ণ মুদ্রা ইসলামের খিদমতে দান করে দিয়েছিলেন। এর কারনে তাকে অনেক ক্লেশ এবং কষ্ট সহ্য করতে হয়। উমাইয়া নামক এক ধনি বাক্তির একজন ক্রিতদাস ছিল হজরত বিলাল। উমাইয়া তার উপর অনেক অত্যাচার করত। তার কারনে হজরত আবুবকর (রাঃ) তার কাছ থেকে তাকে উপযুক্ত মুল্য দিয়ে তার কাছ থেকে তাকে রক্ষা করেন। যখন মুহাম্মাদ ﷺ রজব মাসের ২৭ রাত্রে ইসরা ও মেরাজ করে যখন আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাত করে ফিরে এসে মসজিদে ফজরে নামাজ আদায় করলেন নামাজ শেষ হয়ার পরে নবি ﷺ তার প্রিয় সাহাবাদেরকে ইসরা ও মিরাজের ঘটনা বলছিলেন, তখন কোন সাহাবাও কথা বিশ্বাস করছিল না । এ কথা যখন আবুবকর রাঃ এর কানে পৌঁছিল,এ কথা শুনে আবুবকর (রাঃ) বললেন ,যদি নবি ﷺ এ কথা বলে থাকেন তাহলে নিশ্চয় সত্য কথা বলেছেন, কারন নবী ﷺ বাল্যকাল থেকে এখন পর্যন্ত কোন মিথ্যা কথা বলেননি । সে সময় আবুবকর (রাঃ) এ কথা সত্য হিসেবে মেনে নেওয়ার কারনে নবী ﷺ তাকে সিদ্দিক উপাধি দেন। নবী ﷺ এর সঙ্গে অনেক যুদ্ধে অংশগ্রহন করেন, যেমন-: তাবুকের যুদ্ধে, বদরের যুদ্ধে , উহুদ, হুদায়বিয়া, সত্তরের যুদ্ধে ইত্যাদি।
তার সঙ্গে সঙ্গে নবী ﷺ ইন্তেকাল হওয়ার সময়নবি ﷺ আবুবকর সিদ্দিক(রাঃ)-কে ইসলামের প্রথম খলিফা হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। এ ছাড়া আবুবাক্কার সিদ্দিক (রাঃ)- নবী ﷺ এর বাল্যকালের বন্ধু ছিলেন। কারন হজরত আবুবকর সিদ্দিক(রাঃ) নবী ﷺ এর সাথে সর্বকালীন বিপদে আপদে। নবী ﷺ এর সঙ্গে জীবনযাপন করেছিলেন। আমরা যদি আবুকর (রাঃ) এর জীবনী পড়ি তাহলে আমরা জানতে পারব, যে তিনি নবী ﷺ কে তার জীবন থেকেও বেশি ভালো বেসেছিলেন। আল্লহ তা'আলা নবী ﷺ এর প্রতি নিজের জিবনের চেয়ও বেশি ভালো বাসার তৌফিক দান করেন আমিন…..!