প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (ﷺ)-এর জীবনীচিত্র
ন্মর ঘটনা
রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা (ﷺ) এতিম হয়ে এই পৃথিবীতে আবির্ভাব গ্রহণ করেন। জন্মের আগেই পিত আব্দুল্লাহ ইন্তেকাল করেন। তাঁর মাতা হযরত আমিনা বিবি দেখা শুনা করতেন। জন্মের পর আমিনা বিবি পুত্রের সুন্দর্য দেখে হতবম্ব হন। মনে হচ্ছিলো যেন চাঁদের টুকরো তাঁর কুটিরে এসে পড়েছে। মক্কার প্রথা অনুসারে দুগ্ধ পানের জন্য বাচ্চা মুহাম্মদকে (ﷺ) মা হালিমার হস্তে তুলে দেয়া হয়। নবীজিকে গ্রহণ করার পরে পরে হালিমার কুটির কল্যান ও বরকতে ভোরে উঠে - তাঁদের দুর্বল উটটি সতেজ হয়ে উঠে, বকরীর দুগ্ধ স্তন পরিপূর্ণ হয়ে উঠে, ইত্যাদি।
বিবাহ ঘটনা
মক্কায় খাদিজা (রাঃ) নামক এক অনেক ধনী মহিলা ছিলেন। তাঁর ব্যাবসার কাজে অনেক লোক নিযুক্ত ছিল। কিন্তু তিনি এদের কাজের ওপর সন্তুষ্ট ছিলেন না। তখন খাদিজা (রাঃ) বান্ধবী নাফিসা কে বললেন এমন একটা মানুষের খোঁজ করতে যে বিশস্ত হয় এবং ব্যাবসায় কখনও বিশ্বাসঘাতকতা না করে। তখন মনে করেন যে আবু তালিবের নিজ পৌত্র মুহাম্মদ (ﷺ) খুব সত্যবাদী এবং সবার কাছে বিশস্ত। এই শুনে নাফিসা মারফত খাদিজা (রাঃ) ব্যাবসার কাজে সাহার্য্য করার জন্য যুবক নবীজিকে বলেন। নবীজি ব্যাবসায় অনেক সচ্ছলতা এবং সততার সঙ্গে কাজ করেন। এসব দেখে খাদিজা (রাঃ) অনেক নবী (ﷺ)-কে পছন্দ করতে লাগেন এবং তাঁর চরিত্রের প্রতি মুগ্ধ হন। তখন তিনি বান্ধবী নাফিসার মাধ্যমে নবীজির (ﷺ) কাছে বিয়ের প্রস্তাব পাঠান। নবী প্রস্তাব গ্রহণ করার পর বিয়ে সম্পর্ণ হয়। খাদিজার (রাঃ) বয়স ছিল ৪০ এবং নবীজীর (ﷺ) ২৫।
সন্তান-সন্তীতি
খাদিজা (রাঃ) দুই জন পুত্র এবং চার জন কন্যা সন্তান-সন্তীতি ছিল। আর মারিয়া আল-কিবতিয়া গর্ভে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম গ্রহণ হয়। কিন্তু সব পুত্রই শৈশবকালেই ইন্তেকাল করেন। নবীজির (ﷺ) পুত্র না থাকায় মক্কার কাফেররা নবীকে (ﷺ) বিদ্রূপভাবে উপহাস করতো। পুত্র সন্তানদের নাম - ইব্রাহিম (রাঃ), কাসেম (রাঃ), ইব্রাহিম (রাঃ)। কন্যাদের নাম - ফাতিমা (রাঃ), জয়নাব (রাঃ), রুকাইয়া (রাঃ), উম্মে কুলসুম (রাঃ)।
ফাতিমা (রাঃ) ছিলেন নবীর (ﷺ) কনিষ্ঠ কন্যা। তিনি তাঁকে খুব ভালোবাসতেন। তিনি (ﷺ) বলেন: ফাতিমা আমার এক টুকরো, তাই যে তাকে রাগান্বিত করল, সে আমাকে রাগান্বিত করল।
হিজরত
মক্কা থেকে মদীনায় পর্যন্ত প্রত্যাগমন করাকে ইসলামের ইতিহাসে জিহরাত বলেন। নবীজী মক্কাবাসী এবং মক্কা শহরকে অনেক ভালোবাসতেন। কিন্তু, মক্কার কাফেরদের নিপীড়ন বৃদ্ধি পেলে নবীজিকে (ﷺ) নিজ মাতৃভূমি ত্যাগ করতে হয়। অবশই, মদিনার মানুষ নবীজিকে (ﷺ) খুব সম্মান করে শহরে স্বাগতম জানান। মক্কার কষ্ট মদিনার স্নেহে মুছে যায়।
ইন্তেকাল
নবী (ﷺ) ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে মদিনা শহরে ৬১ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন। আমাদের উচিত এই নবীর রেখে যাওয়া পদ্ধিতি আমরা অনুসরণ করি।