ইউপিএসসি পরীক্ষা: কি, কেন এবং মুসলিম কোথায়?

গত ১৬ এপ্রিল ইউপিএসসি প্রকিশিত ফলাফল অনুসারে ২০২৩ সিভিল সার্ভিস পরিক্ষার কৃতীদের তালিকায় ৫১ জন মুসলিম স্থান পেয়েছে। 

ফলাফল নিয়ে বিশদ বিশ্লেষণের পূর্বে জেনে নেওয়া যাক ইউপিএসসির এই পরীক্ষা কি? এর গুরুত্ব ও কার্য? দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনসংখ্যা মুসলমান এই ক্ষেত্রে কোথায়?

ইউপিএসসি কী? 

ইউপিএসসি (UPSC) ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সংক্ষিপ্তসার যাকে বাংলাতে সংঘ লোক সেবা আয়োগ বলা হয়। এটি ভারত সরকারের একটি কেন্দ্রীয় সংস্থা যা দেশের বিভিন্ন উৎকৃষ্ট পরিষেবার পরীক্ষা সঞ্চালিত করে। সংস্থাটি ভারত সরকারের কর্মকর্তা ও প্রশিক্ষণ বিভাগের অধীনে পরিচালিত হয়। 

কিছু গুরুত্বপূর্ন পরীক্ষার মধ্যে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা, ন্যাশনাল ডিফেন্স একাডেমি এবং নেভাল একাডেমি পরীক্ষা, ইন্ডিয়ান ফরেস্ট সার্ভিস, ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল সার্ভিস পরীক্ষা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। সাম্প্রতিক প্রকাশিত ফলাফলটি হল সব থেকে উৎকৃষ্ট, মর্যাদাপূর্ণ এবং কঠিন পরীক্ষার যথা সিভিল সার্ভিস এক্সামিনেশন (CSE)। ইউপিএসসির সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা বিশ্বের বিশ্বের অন্যতম সবচেয়ে কঠিন এবং প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা হিসাবে বিবেচিত হয়।

১৯২২ সালে ব্রিটিশ সরকার দ্বারা সূচিত এই পরীক্ষার মাধ্যমে দেশের উচ্চ পরিষেবা পদে নিয়োগ করা হয় যেমন ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস (IAS), ইন্ডিয়ান পুলিশ সার্ভিস (IPS), ইন্ডিয়ান ফরেন সার্ভিস (IFS) ইত্যাদি। বার্ষিক পরীক্ষার জন্য ১০ লাখেরও বেশি প্রার্থী আবেদন করে। কিন্তু অবশেষে প্রায় হাজার অধিক প্রত্যাশীরা সাফল্য পায় যার মধ্যে প্রায় প্রথম ১৫০ কৃতীদের আইএএসের পদে নির্বাচিত করা হয়। স্নাতক সহ একজন ভারতীয় নাগরিক এই পরীক্ষায় বসতে পারে। 

ইউপিএসসি সিভিল সার্ভিসেস পরীক্ষা বছর ধরে তিনটি ধাপে হয় – প্রথমত যোগ্যতা পরীক্ষার জন্য বহু নির্বাচনী প্রশ্নের প্রিলিমস, দ্বিতীয়ত লিখিত মেনস (১৭৫০ মার্কস) এবং তৃতীয়ত ব্যাক্তিত্ব পরীক্ষা ইন্টারভিউ (২৭৫ মার্কস)।

সাম্প্রতিক ফলাফল ও বিশ্লেষণ

গত ১৬ এপ্রিল বিগত বছরের ফলাফল প্রকাশিত হয়। এ বছর কমিশন কর্তৃক বিভিন্ন মর্যাদাপূর্ণ সেবায় নিয়োগের জন্য মোট ১০১৬ জন প্রার্থীকে সুপারিশ করা হয়েছে। আদিত্য শ্রীবাস্তব মোট ১০৯৯ নম্বর নিয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন।

কৃতীদের মধ্যে এবার ৫১ জন মুসলিম উচ্চাকাঙ্ক্ষী সফল হয়েছে। এদের মধ্যে পাঁচ জন প্রথম একশ এবং দুই জন মহিলা প্রর্থম দশের সারিতে স্থান পেয়েছে। যদিও এই সংখ্যা দেশে সম্প্রদায়ের সার্বিক জনসংখ্যার গড় তুলনায় অনেক কম, তবুও এটি এক বড়ো কৃতিত্ব।

সার্বিক কল্যাণ লক্ষ্য রেখে, এরকম পদের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজনীয় যাতে দেশ ও জাতির প্রভাবশালী পরিষেবা বিনিময় করা সম্ভব হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় এক সম্পর্কে সম্প্রদায়ের মধ্যে কোনো বিশেষ সামাজিক জাগরণ নেয়। শিক্ষা যে কোনো উন্নতির মেরুদন্ড। তাই, সমাজে এরকম শিক্ষা ব্যাবস্থা নির্মাণ করতে হবে যাতে কোনো সদস্য এর জ্যোতির্ময় বাতি থেকে বঞ্চিত না হয়। তাদের ঐতিহ্যগত ও আদর্শপূর্ণ শিক্ষার পরিকাঠামো পুনরায় গঠন করা উচিত যেখানে ধর্মীয় শিক্ষা ও পার্থিব শিক্ষার মধ্যে কোনো বিভাজন রেখা থাকেনা। অবশ্যই জ্ঞানার্জন একটি ধার্মিক কর্তব্য।

Related Posts

Leave A Comment

Voting Poll

Get Newsletter