ইসলামিক ক্যালেন্ডারের প্রথম মাস

                                                                 ইসলামিক ক্যালেন্ডারের প্রথম মাস

মুহাররাম দিয়ে আরম্ভ হয় এই ইসলামিক ক্যালেন্ডার; পালিত হয় এই মাসের দশম দিনে ভিষণ নেক আমল। আল্লাহ তা’আলা কুরান শরিফে বর্ণনা করেছেনঃ إنّ عدة الشهور عند الله اثنا عشر سنة، ومنها أربعة حرم অর্থ্যাৎঃ আল্লাহর নিকটে মাসের সংখ্যা হচ্ছে ১২টি, তার মধ্যে ৪টী হচ্ছে গারাম মাস। এই চারটি মাসে আল্লাহ তা’আলা ঝগড়া, ঝামেলা ও যুদ্ধ থেকে দূরে থাকতে হুকুম দিয়েছেন।

 ইয়ামে আশুরার (মুহাররাম মাসের দশম দিন) ফযিলত নিয়ে যদি সমালোচনা করি বুঝতে পারবো এই মুবারোকমই দিনের ফযিলত কি? বিভিন্ন নবীকে আল্লাহ তা’আলা এই মাসে পৃথিবির বুকে এই দিনে প্রেরন করে। আকাশ থেকে প্রথম পানি অবতির্ণ করা আল্লাহ তা’আলা এই দিনেই করেন।

১- হযরত ইব্রাহিম আলাইহি সালামের যুগে নমরুদ বাদশাহ রাজত্য করত। নমরুদ বাদশাহ ইব্রাহিম আলাইহি সালামকে ও তিনার প্রজাকে বিভিন্ন ভাবে জুলুম করত। একদা একদিন নমরুদ বাদশাহ ইব্রাহিম আলাইহি সালাম কে আগুনে পুরিয়ে মারার ফন্দি বার করলেন।সবাই কে খবর দেওয়া হল যে, অমুক দিনে নমরুদ বাদশাহ  ইব্রাহিম আলাইহি সালাম কে আগুনে ফেলবেন।শেষ পর্যন্ত  তিনাকে আগুনে ফেলা হলো কিন্তু তিনার ইমানে কোনো পরিবর্তণ আনতে পারেনি। তিনাকে সঠিক পথ থেকে সড়াতে পারেনি। প্রায় সাত দিণে পর আল্লাহ তা’আলা তিনাকে আগুন থেকে এই দিনে  অর্থ্যাৎ ইয়ামে আশুরায় বাচাঁয়।

২- আল্লাহর নবী আইয়ুব আলাইহি সালামকে বিষণ ভারি রোগ হয়। পুরো শরীরের চামড়া ঝরে ঝরে পরে যায়, বেচেঁ থাকে শুধু জিহ্বা। কিন্তু আল্লাহর নবী এই পরিস্থিতিতেও আল্লাহর জিকির করতেন।এবং আল্লাহর কাছে দুআ করতেনঃ يارب مسني الضر وأنت أرحم الراحمين, হে প্রভু আমি অসুস্থ আমাকে দয়া করো তুমি অসিম দয়ালু। তারপর আল্লাহ তা’আলা তিনাকে এই ইয়ামে আশুরায় সুস্থ করে তুলে।

৩- এই দিনে আল্লাহ তা’আলা ইউনুস আলাইহি সালামকে মাছের পেট থেকে বার করেন। বলা হয়েছে যে, ইউনুস আলাইহি সালাম যদি মাছের পেটে তাসবিস না পরতেন বোধায় সারা জীবিণ মাছের পেতে কাটতে হতো। কিন্তু ইউনুস আলাইহি সালাম সব সময় তাসবিহ পরতেন, ফলে এই দিনে আল্লাহ তা’আলা মাছের পেট থেকে বার করে।

৪- এই দিনে আল্লাহ তা’আলা আদম আলাইহি সালামের তওব কবুল করেন।

৫- এই দিনেই কিয়ামতের আগমন হবে।

    আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনআ এই দিনে হয়ে থাকে। লিখতে গেলে পাতা শেষ হয়ে যাবে। বলতে গেলে সময় শেষ হয়ে যাবে কিন্তু এই দিনে ঘটিত ঘটনা গুলে কখনই শেষ হবেনা।

 

  আশুরা দিনের গুরুত্বপূর্ণ নেক আমল

হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) বর্ণনা করেছেন; من مسح بيده على رأس يتيم يوم عاشوراء رفع الله له بكل شعره على رأسه درجة في الجنة. যে ব্যাক্তি এই দিনে এক মাতৃ-পিতৃহীন বালকের মাথায় হাত বুলিয়ে দিবে। তাহলে সে তার চুলের সমান নেকি পাবে। ওর মাথায় যতগুলো চুল থাকবে সে ব্যাক্তি ততগুলি নেকি পাবে।

আরেকটি হাদিসে রাসুল (সাঃ)ইরশাদ করেছেনঃ من اغتسل يوم عاشوراء لم يمرض مرضا إلا مرض الموت.যে ব্যাক্তি আশুরার দিনে স্বনান করবে, সে কখনো অসুস্থয় পরিনত হবেনা মৃত্যুর অসুস্থ ছাড়া।

 বিশেষ করে আশুরার দিনে রোযা রাখা অনেক ফযিলত, কুরান হাদিসে দলিল রয়েছে যে, রমযান মাসের রোয়ার পর এই আশুরার দিনের রোযা অতি ফযিলতময়।  

হুযুর (সাঃ) বলেছেন যে, এই দিনে অন্বক নবী রোযা রাখতেন। صوموا يو م عاشوراء يوم كانت الأنبياء تصومه যেমন মুসা আলাইহি সালাম এবং নুহ আলাইহি সালাম।এবং আল্লাহ তা’আলা মুসা আলাইহি সালাম কে আদেশ দিয়েছিলেন যে, হে মুসা তুমি তোমার উম্মতকে বলে দাও তারা যেন আশুরার দিনে রোযা রাখে।

একদা নবী(সাঃ) ইয়াহুদের দেখলেন যে, তারা আশুরার দিনে রোযা রেখেছে। হুজুর(সাঃ) জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমরা আজকে কেন রোযা রেখেছ? তারা উত্তরে বললঃ আমাদের মুসা (আঃ) এই দিনে রোযা রাখতেন, এবং মুসা (আঃ) ফির’আউনের হাত থেকে এই দিনে রক্ষা পায়। অর্থ্যাৎ ফির’আউন মুসা (আঃ) কে অনেক অত্যাচার করতো, সেই ফির’আউন নিল নদীতে এই দিনে ডুবে।

 তখন থেকে হযরত মুহাম্মাদও (সাঃ) এই দিনে রোযা রাখতেন।হাপগসা (রাঃ) বলেছেন যে, عن     حفصة رضي الله عنها: أربع لم تكن يدعهن النبي صيام عاشوراء والعشر وثلاثة أيام من كل شهر وركعتان قبل الفجر.       হুজুর(সাঃ) চারটি জিনিস কে কখনই ছাড়েননি যার মধ্যে একটি হচ্ছে আশুরার রোযা।

 

Related Posts

Leave A Comment

Voting Poll

Get Newsletter