জমজম কূপ সৃষ্টির ঘটনা

হযরত ইসমাইল (আঃ) এর জন্ম-গ্রহন

 

হযরত ইব্রাহীম (আঃ)-এর প্রথম স্ত্রী বিবি সাবার একান্ত আগ্রহ, ইচ্ছা এবং চেষ্টার ফলেই হযরত ইব্রাহীম (আঃ)-এর সাথে বিবি হাজেরার বিবাহ হইয়াছিল। কিন্তু কিছুদিন পরে উক্ত হাজেরার পূর্বে হযরত ইব্রাহীম (আঃ)-এর একটি পুত্রসন্তান জন্মগ্রহণ করিবার সাথে সাথেই আবার হযরত হাজেরার প্রতি বিবি সারার মনোভাব অন্য রকম হইয়া গেল। যে সারা বিধি হাজেরাকে কনিষ্ঠ ভগ্নির মত স্নেহ-আদর করিতেন, তিনি তাঁহার প্রতি বিদ্বেষভাবাপন্ন হইয়া পড়িলেন। তাঁহার অন্তরে গপত্নী-সুলভ চিন্তা-ভাবনার সৃষ্টি হইল এবং বাহিরেও তাহা নগ্নরূপে প্রকাশিত হইয়া উঠিল। তাহার আচরণ ও ব্যবহারগুলি হইয়া উঠিল অত্যন্ত শত্রুতা এবং হিংসামূলক। তিনি নানাভাবে হাজেরার প্রতি নিপীড়ন এবং দুর্ব্যবহার চালাইতে লাগিলেন।

 

শেষ পর্যন্ত একদিন তিনি তাঁহার স্বামীকে বলিয়াই ফেলিলেন, আপনি একই স্থানে আমাদের দুইজনকে রাখিতে পারিবেন না। হাজেরা যদি এ বাড়ীতে থাকে তবে আমি অনা কোথাও চলিয়া যাইব। আর যদি আমাকে আপনি এ বাড়ীতে রাখিতে চান তাহা হইলে হাজেরাকে এমন কোথাও বাধিয়া আসুন, যেখানে কোন ফল-মূল, বৃক্ষ ও পানি নাই এবং উহা মনুষ্য বসতি নহে।

 

সারার এই ধরনের প্রস্তাব এবং বিবি হাজেরার প্রতি তাঁহার ব্যবহারে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) যারপর নাই চিন্তাকূল হইয়া পড়িলেন। তিনি ভাবিতে লাগিলেন সম্পূর্ণ নিরপরাধিনী হাজেরাকে গৃহ হইতে নির্বাসন দিলে আমি আল্লাহর কাছে কি জবাব দিব ? আবার সারার কথা মত তাহাকে নির্বাসন না দিলে সারা যেভাবে তাহার উপর অত্যাচার শুরু করিয়াছে, তাহাই বা হাজেরা সহ্য করিবে কিভাবে ? আবার সারার কথা মত কাজ না করিলে সে রাগের বশে কোথাও চলিয়াও যাইতে পারে, তাহাতেও হয়ত বা আমাকে আল্লাহর নিকট জবাবদিহি করিতে হইতে পারে। উভয় সঙ্কটে পড়িয়া হযরত ইব্রাহীম (আঃ) অড়ান্ত বিমর্ষভাবে দিন কাটাইতে লাগিলেন। কোন পথ অবলম্বন করিবেন তাহা তিনি ভাবিয়া পাইতেছিলেন না। ঠিক এমনি অবস্থায় হযরত ইব্রাহীম (আঃ)-এর প্রতি আল্লাহর তরফ হইতে অহী অবতীর্ণ হইয়া তাঁহার করণীয় কর্তব্য নির্ধারিত হইয়া গেল।

 

আল্লাহ তাঁহাকে আদেশ করিলেন, “হে ইব্রাহীম। সারা যাহা বলিতেছে, তুমি তাহাই কর। হাজেরাকে এমন একটি স্থানে নিয়া রাখিয়া আস, সেখানে কোন গাছ-পালা, ফল, পানি বা লোকজনের বসতি নাই।" আল্লাহর তরফ হইতে এইপ নির্দেশ লাভ করিয়া হযরত ইব্রাহীম (আঃ) যেন একটা নিকের সন্ধান লাভ করিলেন। তিনি দেখিলেন, সারা যাহা বলিতেছে, আল্লাহ তায়ালার পক্ষ হইতেও ঠিক একই নির্দেশ করা হইতেছে। তবে, নিশ্চয়ই ইহার ভিতরে হয়ত বা কোন নিগূঢ় রহস্য আছে। সুতরাং তিনি তাঁহার শিশুপুত্র হযরত ইসমাইলসহ বিবি হাজেরাকে নির্বাসন নিবারই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিলেন ।

 

হাজেরা ইসমাইল নির্জন প্রান্তরে নির্বাসিত

 

শীঘ্রই একদা হযরত ইব্রাহীম (আঃ) বিবি হাজেরাকে বলিলেন, ইসমাইলকে লইয়া তৈরী হও। আমি তোমাদিগকে লইয়া কোন এক জায়গায় যাইব। হাজেরা তৈরী হইয়া গেলেন। অতঃপর হযরত ইব্রাহীম (আঃ) কিছু খেজুর, কয়েকটি রুটি এবং এক মোশক পানিসহ হাজেরা ও শিশুপুত্র ইসমাইলকে লইয়া বাইতুল মোকাদ্দাস হইতে একটি উই আরোহণ করিয়া অনবরত পথ চলিতে লাগিলেন। একধারে কয়েকদিন চলিবার পর যেখানে এখন খানায়ে কা'কা অবস্থিত, তাহারই নিকটবর্তী ফারান প্রান্তরে উপস্থিত হইয়া দেখিতে পাইলেন যে, সেখানে বহুদূর এলাকা ব্যাপিয়া কোন বৃক্ষলতা, পানি বা জনমানবের চিহ্নমাত্র নাই। চারিদিকে কেবল ধূসর ভূমি। হযরত ইব্রাহীম (আঃ) আল্লাহ তায়ালা কর্তৃক প্রেরিত ফেরেশতা হি(আ) এর পরামর্শে স্ত্রী হাজেরা ও শিশুপুত্র ইসমাইলকে উঠা হইতে সেখানে নামাইয়া দিলেন।

 

ইসমাইল জননী বিবি হাজেরা একটু আগেও বুঝিতে পারেন নাই যে, স্বামী তাহাকে কোথায় লইয়া যাইতেছেন। কিন্তু যখন তাঁহাকে ৫টি হইতে নামাইয়া দিয়া স্বামী বলিলেন, হাজেরা। পুত্র ইসমাইলসহ ভূমি এখানে থাকিবে। তখন তিনি অবস্থা কিছুটা আদায় করিয়া বলিলেন, হে আমার স্বামী আল্লাহর নবী। আপনি কি আল্লাহর আদেশেই আমাকে এখানে রাখিয়া যাইতেছেন হযরত ইব্রাহীম (আঃ) তাহার নিরপরাধিনী স্ত্রী হাজেরকে শিশুপুত্র ইসমাইলসহ এই নির্জন প্রান্তরে নির্বাসন দিয়া যাইতেছিলেন বটে, কিন্তু পুঃখে তাঁহার হৃদয় চৌচির হইয়া যাইতেছিল। মুখে তাহার কোন কথা বাহির হইতেছিল না। তাই হাজেরার প্রশ্নের উত্তরে অতি কষ্টে কোনরূপে তাঁহার মুখ হইতে বাহির হইল শুধু হযরত হাজেরা তখন বলিলেন, তবে আমার আর কোন চিন্তা নাই। নিশ্চয় আমি আল্লাহর উপরে নির্ভর করিয়া ধৈর্যাবলম্বন করতঃ এখানে অবস্থান করিব। হযরত ইব্রাহীম (আঃ)-এর দুই নাম হইতে তখন অসুর ধারা প্রবাহিত হইতেছিল। তিনি বলিলেন, হাজেরা। আমিও তোমাকে সেই মহান প্রতিপালকের নিকটই সমর্পণ করিয়া যাইতেছি, যিনি সব - দরিদ্রগণের প্রকৃত সহায় এবং প্রতিপালনকারী।

 

নবিনার মুহূর্তে হাজেরা হযরত ইব্রাহীম (আঃ)-কে শুধু এতটুকু বলিলেন, প্রিয় ম আপনার নিকট শুধু এই অনুরোধ রহিল, আপনি মাঝে মাঝে আসিয়া যেন আমাকে না হউক পতঃ আপনার কলিজার টুকরা এই শিশু পুত্রটিকে দেখিয়া যান।

 

হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এ কথার কোন উত্তর না নিয়া নীরবে তাহার চক্ষু মুখিতে মুখিতে স্ত্রী ও শিশুগুলোর নিট বইতে বিদায় নিলেন এবং অনুরে দাঁড়ানো উটের পিঠে আরোহণ উদ্দেশ্যে রওয়ানা হইলেন। তিনি হজের শিশু পুরে কেজে থাকা করিয়া নিশ্চল পাথরের মূর্তির মত চলমান উটটির দিকে একদৃষ্টে তাকাইয়া রহিলেন। তাঁহার দুইটি নের হইতে চপ চপ করিয়া দুই ফোঁটা তন্তু অনু মামিনের বুকে পতিত হইল। কাপড়ের আচল দ্বারা নো তিনি মুছিয়া ফেলিলেন। এ সময় তাঁহার বুকের মধ্যে যে কোনার বড় শুরু হইবার উপক্রম হইয়াছিল, তাহা তিনি হৃদয়ের প্রবল শক্তি ধারা প্রতিরোধ করিলেন। তিনি মনকে প্রবোধ দিলেন, না, ভাঙ্গিয়া পড়িব কেন, আল্লাহ তো সহায় আছেন।

 

হযরত ইব্রাহীম (জয়) বিবি হাজেরাকে যে সামান্য খাদ্য দিয়া সিয়াছিলেন, মাত্র তিনটি দিনেই তাহা ফুরাইয়া গেল, চতুর্থ দিনে তিনি সম্পূর্ণ অনাহারেই কাটাইয়া দিলেন। মোশকে যে পানিটুকু ছিল তাহাও নিঃশেষ হইয়া গেল। কাজেই মুধা ও পিপাসার তাড়নায় তিনি অস্থির হইয়া পড়িলেন। শিশু পুত্র ইসমাইল অবশ্য মাতৃস্তন্য পান করিতেন, কিন্তু চতুর্থ দিনের মত আরও দুই-একদিন অতিবাহিত হওয়ার ফলে বিবি হাজেরার গুন একেবারে দুধ শূন্য হইয়া গেল। তিনি স্বীয় জন্য বোটা টিপিয়া দেখিলেন, এক ফোটা দুধও বাহির হইল না। এমতাবস্থায় পুত্র ইসমাইলের জীবন কিভাবে রক্ষা করিবেন তাহা লইয়া বিবি হাজেরা বিশেষ চিন্তিত এবং ভাবি হইয়া পড়িলেন। ক্ষুধা তৃষ্ণার শিশু ইসমাইলের অবস্থাও করুণ হইয়া উঠিল। ক্ষুধার তাড়নায় তিনি ক্রন্দন শুরু করিলেন। কিন্তু মাতা তাঁহার জন্য কোন খাবারই ব্যবস্থা করিতে পারিলেন না। শিশু ইসমাইল ক্রমশঃ দুর্বল হইয়া পড়িতেছিলেন। পিপাসা তাঁহার প্রবল হইয়া উঠিল। তিনি ছটফট করিতে লাগিলেন। পুত্রের অবস্থা দেখিয়া বিবি হাজেরার মন কাঁদিয়া উঠি, হায় হায়। এই ফল-মূল-পানিশূন্য এবং নির্জন স্থানে এখন তিনি কিভাবে কলিজার টুকরাটির প্রাণ রক্ষা করিবেন। দ্রুত তিনি ছুটিয়া গেলেন বাহিরের দিকে। এদিকে সেদিকে ঘুরিয়া অনুসন্ধান করিতে লাগিলেন, কোথাও একটি ফোঁটা পানি পাওয়া যায় কিনা। কিন্তু না, কোথাও এতটুকু পানির সন্ধান পাওয়া গেল না।

 

হঠাৎ তাঁহার দৃষ্টি পড়িল নিকটস্থ সাফা পাহাড়ের দিকে। তাহার মনে হইল, সাফা পাহাড়ের উপর হইতে একটা পানির ঝর্ণা যেন নীতর দিকে প্রবাহিত হইতেছে। অত্যন্ত আশা লইয়া তিনি দৌড়াইয়া গেলেন সেই দিকে। নিকটবর্তী হইয়া তিনি দেখিলেন যে, না সেখানে - পানির লেশ মাত্র নাই। তাহার দৃষ্টতম হইয়াছিল। আসলে পাহাড়ের পাথরের উপর সূর্যালোক পত্রিা পানির ঝরণার মত মনে হইয়াছিল। তিনি সাফা পাহাড় হইতে ফিরিয়া আসিলেন।

 

অতঃপর মারওয়া পাহাড়ের দিকে হযরত হাজেরার দৃষ্টি পড়িতে সেখানে একই অবস্থা দৃষ্টিগোচর হইল। মনে হইল মারওয়া পাহাড়ের পাদদেশ দিয়া পানির ঝরণা বহিয়া যাইতেছে। তখন তিনি ছুটিয়া গেলেন আবার মারওয়া পাহাড়ে। সেখানে গিয়া তাঁহার মোহ ভাগিল। দিয়া দেখিলেন, না, সেখানেও সাফা পাহাড়ের মত একই অবস্থা। পানি তো নয়, উহা শুধু মিথ্যা মরিচিকা। সূর্যকিকা এবং চকচকে পাথরের লীলা-খেলা- মিথ্যা হইলেও তাহার মন মানিতে ছিল না। তাই তিনি একবার দুইবার করিয়া সাফা ও মারওয়া পাহাড়ে পানির জন্য অন্ততঃ সাতবার ছুটাছুটি করিলেন। শেষ পর্যন্ত নিরাশ হইয়া তিনি চীৎকার করিয়া কাঁদিয়া উঠিলেন এবং কাঁদিতে কাঁদিতেই তাহার মূমূর্ষু পুত্র ইসমাইলের নিকট ফিরিয়া আসিলেন। আসিয়া দেখিলেন, তাঁহার মৃত্যুর আর বিলম্ব নাই কণ্ঠ-তালু শুকাইয়া একেবারে কাঠ হইয়া গিয়াছে। তখন আর তাঁহার কি করিবার আছে ? তিনি পুত্রটির শিয়রের কাছে দাঁড়াইয়াই দুই হাত তুলিয়া আল্লাহর দরবারে মুনাজাত করিতে লাগিলেন-তোমার নিকট কোন কিছুই অস্পৃশ্য এবং গোপন থাকে না। তুমি সর্বশক্তিমান, তুমি যাহা কপার। তোমার নিকট আমার আকুল যে কোন প্রকারে হউক আমাকে একটু পানির ব্যবস্থা করিয়া দিয়া আমার এত পুরা করছে মানুষ। আমার এ শিশু পুত্রটি তোমার নিকট এখনও কোন পাপ বা অপরাধ করে নাই। সে সম্পূর্ণ নির্দোষ, নিরপরাধ। কোন দোষে সে এইভাবে এক ফোঁটা পানির অভাবে প্রাণভাগ করিবে ? হে প্রভু । তুমি না রহীম ও রহমান অসীম অফুরন্ত দয়ার আধার । তুমি তোমার সেই অদূরন্ত দরান দ্বারা আমার এই পুত্রটির প্রাণ রক্ষা কর।

 

বিবি হাজেরার করুণ ক্রন্দন আল্লাহ পাকের মহান আরশে মুআল্লায় পৌঁছিয়া গেল ও সংগে মতো আল্লাহতায়ালা ফেরেশতা জিব্রাঈল (আঃ)-কে ফারানের নির্জন প্রান্তরে বিবি হাজেরার কাছে পাঠাইয়া দিলেন। জিব্রাঈল (আঃ) আসিয়াই শিশু ইসমাইল (আঃ) যেখানে ভূমির উপরে রাহিত ছিলেন, তাহার পাদদেশে দাঁড়াইলেন এবং ভূমির উপরে সজোরে একটি পদাঘাত করিলেন, আর সঙ্গে সঙ্গে তথাকার মাটি সরিয়া পিয়া একটি গভীর গর্তের সৃষ্টি হইল ও সেই গর্তমুখ হইতে অধিকল ধারায় পানি নির্গত হইতে লাগিল ।

 

জিয়াদিল (আঃ) হাজেরাকে লক্ষ্য করিয়া বলিলেন, হে নবী সহধর্মিণী : এই পানি আপনার পুরফে পান করান এবং আপনিও পান করিয়া ভূত্তি লাভ করুন। আল্লাহর রহমতে এই পানির বরকতে ক্ষুধা ও তৃষ্ণা উভয়ই দূরীভূত হইবে। কেননা এই পবিত্র পানি করুণাময় আল্লাহ তায়ালার রহমতের পানীয়। এই পানীয়ের স্রোতধারা কোনদিনই নিঃশেষ হইবে না।

 

হযরত হাজেরা প্রথম তাহার পুত্রকে পানি পান করাইলেন। তৎপর নিজেও প্রাণ ভরিয়া উহা পান করিলেন। তারপর ঠিক কুয়ার চারিদিকে বাঁধ দিয়া পানি আটক করিয়া রাখিলেন। এই কূপটির নাম হইল 'জমজম কূপ।

 

হযরত হাজেরা পুরোর জন্য পানির সন্ধান করিতে যাইয়া যে সাতবার সাফা ও মারওয়া পাহাড়ে দৌড়াদৌড়ি করিয়াছিলেন, তাঁহার সেই পুণ্য স্মৃতিকে পরম প্রভার চির জাগরুক রাখার মা দুনিয়ার অসংখ্য মুসলিম প্রতি বৎসর খানায়ে কাবায় হজ্ব উদ্দেশ্যে গমন করিয়া সাতবার সাফা ও মারওয়া পাহাড়ে দৌড়াদৌড়ি করিয়া থাকেন। আর তাঁহারা প্রত্যেকেই পবিত্র জমজম কূপের পানি পান করিয়া তৃপ্তি লাভ করেন।

 

অতঃপর বিবি হাজেরা তাঁহার পুত্রসহ কয়েকদিন শুধু জমজম কূপের পানি পান করিয়াই কাটাইয়া দিলেন। তারপর সহসা জিব্রাঈল (আঃ) আসিয়া বিবি হাজেরাকে বেহেশতের কিছু বেজুর এবং ঘোরমা দিয়া বলিলেন, এইগুলি ভক্ষণ করিয়া ইহার বিচিগুলি জমজম কূপের চারিদিকে পুঁতিয়া দিবেন। আল্লাহর অসীম রহমতে অতার দিনের মধ্যেই ইহা হইতে গাছ উৎপন্ন হইয়া তাহাতে ফল ধরিবে। বিবি হাজেরা তাহাই করিলেন। তিনি ঐ ফলগুলি খাইয়া উহার বিচিগুলি সবই মাটিতে লাগাইয়া দিলেন। বাস্তবিক খুব অল্পদিনের মধ্যেই উহা হইতে গাছ উৎপন হইল এবং আল্লাহ তায়ালার কুদরতে অচিরেই উহা ফুলেফলে পরিপূর্ণ হইয়া গেল।

 

বিবি হাজেরার এতদিন বাস করিবার জন্য কোন গৃহ ছিল না। শিশু পুটিসহ উন্মুক্ত আকাশের নীচেই তিনি বাস করিতেন। এইবার তিনি খেজুরের শাখা ও পাতার দ্বারা একখানা কুঁড়েঘর নির্মাণ করিয়া তাহাতেই মাথা ওজিতে লাগিলেন। হাজেরার এখন আর পানাহারের কোন অসুবিধা নাই। প্রয়োজন মত খোরমা খেজুর আহার করেন। জমজম কূপের পানি পান করেন এবং নিজের তৈরী খেজুর শাখার ঘরে বাস করেন। আল্লাহর রহমতে তাঁহার ছেলেটিকে নিয়া এখন নিশ্চিন্তেই দিন কাটাইতেছেন।

 

Related Posts

Leave A Comment

1 Comments

Voting Poll

Get Newsletter