অতীত ও বর্তমান মুসলমানের অবস্থা
সমস্ত প্রশংসা সেই মহান করুনাময় আল্লাহ তায়ালার জন্য যিনি এক ও অদ্বিতীয়। এবং সমস্ত দরূদ ও সালাম তিনার হাবিব মোহাম্মদ (সা:) ও তার পরিবার ও সাহাবাগণের উপর।
মুসলিম এমন একটি জাতি যে কিছু সময়ের মধ্যে সারা বিশ্বে ইসলামের শ্লোগান ছড়িয়ে দিয়েছিল। পৃথিবীর প্রত্যেক প্রান্তে এই ইসলামের শ্লোগান ছড়িয়ে, এক সত্যবাদী, নিষ্ঠূর ও বিচার প্রতিষ্ঠাকারী হিসাবে পরিচিত লাভ করে। তাদের মূল কারণ ছিল আল্লাহর প্রতি পরিপূর্ণ বিশ্বাস (ঈমান), তার কিতাব অর্থাৎ কোর’আন ও তার হাবিব হুজুর (সা:)-এর প্রতি ভালোবাসা ও তিনার হাদিসের উপর অটল থাকা। তাঁরা সেই মুসলমান ছিলেন যারা শুধুমাত্র একত্ববাদী খুদা ছাড়া কাওকে ভয় করতেন না। তিনারা শুধু সেই একত্তবাদী খুদার ইবাদত করতেন, তার সামনে মাথানত করতেন, তারিই হুকুমের আদেশ পালন করতেন। তাকে ছাড়া আর অন্য কাউকে ইবাদতে শরিক করতেন না।
মহান আল্লাহু রাব্বুল আলামিন তার পবিত্র গ্রন্থ কোরআন-এর মধ্যে ঘোষণা করেন :-
قُلۡ إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحۡيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ ٱلۡعَٰلَمِي * لَا شَرِيكَ لَهُۥۖ وَبِذَٰلِكَ أُمِرۡتُ وَأَنَا۠ أَوَّلُ ٱلۡمُسۡلِمِينَ
আপনি বলুন: আমার নামাজ, আমার কোরবানি এবং আমার জীবন ও মরণ বিশ্ব প্রতিপালক আল্লাহরই জন্য। তার কোনো অংশীদার নাই। আমি তাই আদিষ্ট হয়েছি এবং আমিই প্রথম অনুগত্য শীল। (সূরা আন আম: ১৬২-১৬৩)
ইসলাম তখনি শক্তিশালী ও মজবুত হয়ে প্রচার হয়েছিল যখন মসলমান মহান আল্লাহর কিতাব কোর’আন ও তার হাবিব হুজুর (সা:)-এর সুন্নত কে শক্ত ভাবে ধরে রেখেছিল। সেই সময় তাদের ঈমান ছিল পাথরের চেয়েও অতি শক্তিশালী যা দেখে জালিমকারী তাদের নাম শুনলেই ভয়ে প্রকম্পিত হতো। জুলুমকারী জুলম করতে ভয় পেতো। ডাকাতকারী ডাকাত করতে ভয় পেতো। অত্তাচারকারী অত্যাচার করতে ভয় পেতো।
সেই সময় কালের মুসলমানগণ ছিলেন সত্যবাদী ও ইবাদতকারী। তাদের আচার আচরণ ছিল অমায়ক, তাঁরা সত্যর রাস্তায় অটল থাকতো। তাঁরা শুধু মাত্র আল্লাহ ও তার রাসূল (সা:)-এর আদেশকেই প্রাধান্য দিতেন। কোনো সমস্যা বা বিতর্ক দেখা দিলে কোরআন ও হাদিস অনুসরণ করে বিচার করতেন। গরিব ও ধোনির মধ্যে কোনো রকমের বেধাবেদ করতেন না। সবাই কে সমান নজরে দেখতেন। তাদের মধ্যে সমান বিচার করতেন। তাদের শক্তি ছিল ইনসাফ, তাঁরা সর্বদা ইনসাফ কে পছন্দ করতেন ।
প্রাচীন যুগের মুসলমানগণ ভালো কাজ করার জন্য প্রতিযোগিতা করতেন। ভালো কাজের জন্য সর্বদা তিনাদের হাত এগিয়ে দিতেন। সমস্ত খারাপ কাজ থেকে দূরে থাকতেন যেমন মদ, সুদ, ঘুষ, জুয়া ইত্যাদি। অন্যায়ের বিরুদ্ধে সর্বদা আঙুল উঠাতেন। অসহায় মানুষের সাহায্য করতেন।
বর্তমান যুগের মুসলমানগণ
আজ আমরা কোন সময়ে বসবাস করছি সেটাও হয়তো ভুলতে চলেছি। আজ মুসলমানগণ তাদের পূর্বপুরুষের রাস্তা অনুসরণ না করে, এক অজানা পথের দিকে রওনা দিয়েছে। সেই সময় মুসলমানের নাম শুনে সমস্ত বাদশা মাথা নত করে দিত, আর আজ মসলমান তাদের সামনে নিজেকে ছোটো বলে মাথা নত করেদেয়। মুসলমানগণ ইবাদতে অলস হয়ে পরেছে, কোর’আন ও হাদিসের আদর্শ ছেড়ে নিজের মতো নিয়ম তৈরী করে। মুসলমান সত্যের পথ ছেড়ে ভ্রষ্টাচারী পথের দিকে এগিয়ে চলেছে। সুদ, মদ, গাজা ইত্যাদি খারাপ জিনিসের সাথে লিপ্ত হয়ে পড়েছে। আজ মুসলমান সেই গর্তের মধ্যে রয়েগেছে যেখান থেকে ফিরে আসা প্রায় কঠিন হয়ে দাড়িয়েছে। আল্লাহর ইবাদত করতে অলস হয়ে পড়েছে , সৃষ্টি কর্তার গুণগান ছেড়ে নাচ-গান- এ ব্যাস্ত হয়ে গেছে । এক মুসলমান ভাই ওপর আর এক মুসলমান ভায়ের শত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইনসাফ এর বদলে মিথ্যা অভিযোগ করে অন্য দেরকে ফাঁসানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে।
- কেউ আবার কোরআন তেলাওয়াত থেকে ওনেক দূরে চলে গেছে।
- অনেকে আবার মাজার কে ব্যবসা হিসাবে টাকা আয় করতে ব্যাস্ত হয়ে পড়েছে।
- নিজের ঈমান বিক্রি করে বেধর্মীদের সাথে একত্তা হয়ে ইসলামের বিরুদ্ধে সরযন্ত করে।
- আজ মুসলমানগণ কোরআন অনুযায়ে বিচার করা ছেড়ে দিয়েছে।
- হুজুর (সা:)-এর সুন্নতবলি কে ছেড়ে দিয়ে শয়তানের অনুসরণ করে।
উপসংহার
আজ আমাদের কে দরকার সেই ঈমান কে আবার জাগরণ করা যার সামনে বাদশাহরা মাথা নত করে নিতো। সেই ঈমান কে ফিরিয়া নিয়ে আসা, যা দেখে অত্তাচারকারী দ্বিতীয়বার অত্যাচার করতে ভয় পাবে। আবার সেই ইবাদাতের দিকে ফিরে আস্তে হবে যার কারণে ইসলাম সারা বিশ্বে ছড়িয়ে গেছিলো। নিজের ঈমান কে পাথরের মতো শক্ত করে, হাতের ওপর হাত রেখে এক সঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে। আল্লাহ তায়ালা যেন আমাদের কে এই সমস্ত জিনিস এর ওপর আমল করার তৌফিক দেন আমীন।