ইমাম তিরমিজি ও তিনার সুনান
রাসুল সাল্লাহু আলিহিস সালাম এর কালাম বা বার্তাকে হাদিস বলা হয় । এই হাদিসের মোট ছইটি গ্রন্থ আছে যে গুলি আমাদের মুসলমানের মধ্যে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ও বিখ্যাতগত হয়ে পরিচিত । তার মধ্যে এখানে উল্লেখ করতে চলেছি যে (সুনানু তিরমিজি) । এই গ্রন্থটি আর অনেক নামে পরিচিত যেমন আল যামিয়ি (الجامع ) সুনানু তিরমিজি ( سنن الترمذي ) জামিয়ি আল কাবির ( الجامع الكبير ) আল যামিয়ি সাহিহ ( الجامع الصحيح ) আল যামিয়ি মুখতাসার ( الجامع المختصر ) এই সমস্ত নামে পরিচিত রয়েছে ।
ইমামের পরিচিত
তিনার জন্মগ্রহন ২১০ হিজরি তিরমিজ খুরাসান শহরে যেটি আফগানস্তানে উপস্থিত রয়েছে । তিনার পুরো নাম মুহাম্মাদ বিন ইশা বিন সাওরা বিন মুসা বিন জাহহাক তিরমুজি । ইমাম তিরমিজি এর ব্যাপারে আলেমদের মধ্যে সন্দেহ রয়েছে যে ইমাম তিরমিজি জন্মগ্রহন থেকে দৃষ্টিহীন না বড় হয়ে দৃষ্টিহীন ।এর জন্য ঐতিহাসিকগণ বলেন যেতিনি বড় হয়ে দৃষ্টিহীন হয়েছিলেন ইলম ও হাদিসের শিক্ষা অর্জনের পরে তিনি তিনার দৃষ্টি হারিয়ে ফেলেছিলেন ।
ইমাম ইবন কাসের বলেন যে তিনি শিক্ষা অর্জনের যাত্রা , হাদিসের জমা , বই লিখা , এবং একে ওপরের সঙ্গে বিতর্ক ,এই সব কর্মের পরে তিনার দৃষ্টিহীন হয়ে যাই ।
আল হাফিয ওমার আল মারওয়াজি তিনি বলেন যখন ইমাম বুখারি ইন্তেকাল করেন তখন তিনি খুরাসানের খালিফা ইশা বিন মুসা ( ইমাম তিরমিজি ) কে ছাড়া কাউকে খালিফা হিসাবে দেননি যে তিনি খদাভিরুতা ছিলেন যে এতো কান্না করেছেন যে তিনি দৃষ্টিহীন হয়ে গেছে ছিলেন ।
তিরমিজের বিবারন
জাইহুন পাহাড়ের পূর্ব দিকে খুরাসান শহরে অবস্থিত ( আফগানস্তানের সীমান্ত উজবেগিস্তান প্রজাতন্তরের দক্ষিনে ) এখানকার বাড়ি ও বাজার দেখতে খুব সুন্দর ।
ইবনে বাতুতা তিনি বলেনঃ শহরটি খুব বড় সুন্দর সুন্দর ঘর বাড়ি ও বাজার , অনেক বড় বড় বাগান , বলা হয় যে ওখানকার বাসিন্দারা স্নান করে দুধ দিয়ে ।
আর এই তিরমিজ শহরটি প্রথমে জাইহুন নদীর তটে আবস্থিত ছিল কিছু কারণ বসিত ধ্বংস হয়ে যাই এবং নতুনভাবে শহরটিকে আবার তৈরি করে ২০০ কিলোমিটার নদীর দূর হয়ে ।
এবং ঐতিহাসিকগণ বলনে যে প্রথম যুগে তিরমিজ শহরে বুদ্ধিজাতি বসবাস করত আর ওই শহরে ১২ টি মূতি এবং এক হাজার খ্রীস্টান সন্ন্যাসী ছিল ওখানকার রাজাকে বলা হতক তরমুজ শাহ এই দেখে সর্বপ্রথম তুরমুজকে ফাতাহ এবং ইসলামের প্রচার করেন মুসা বিন আব্দুল বিন মাজিম (রাহঃ)
ইমাম তুরমুজির প্রশংসা আলেমদের নিকটে
তিনারা বলেন যে ইমাম তুরমুজি অভ্যাস ও সৌর্ন্দয সর্বদা নাবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাই হিসসালাম এর সুন্নতের উপর আমল,ধারন ক্ষমতা,নিশঃসরণ,স্মরণ শক্তি দুনিয়ার সংসার ত্যাগ ব্যক্তি ছিলেন।
ইমাম শাফি রহঃ বলেন : ইমাম তুরমুজী তিনি বড়ো বড়ো ইমামদের সমতুল্য একজন ইমাম ছিলেন এবং তিনাকে অনেক মানুষও করেছেন ইলসে হাদিসের উপর। তিনি অনেক বই লিখেছন এবং তিনাকে একজন হাফীজ নামে অনুরুপ করেন।
তিনার জ্ঞান অর্জনের যাত্রা
তিনার জ্ঞান অর্জন যাত্রা প্রথমই শুরু হয়নি। বরং তিনি বাড়ি থেকে জ্ঞান অর্জন শুরু করেন তিনার পিতার কাছ থেকে। আর ত্রৈতিহাসিক গন বলেন,যে ইমাম তুরমুজী তিনি 240 হিজরী পরে জ্ঞান অর্জনের মাত্রা শুরু করেন। তিনি সর্ব প্রথম বুখারি (উছবোকাস্তিন) যাত্রা করেন তার পর মারওা (তুরকামাস্তান) তারপরে যাত্রা করেন রাথের দিকে( জহরান,ইরান) তারপরে বাসরা ও কুফা এবং বাগদাদ (ইরাক) এবং হিজাজ ( মক্কা,মদিনা) এই সব জায়গা তিনি যাত্রা করে হাদীস,তাফসীর,আদাব,ফিকাহ আরো অন্য অন্য জ্ঞান অর্জন করেন।
তিনার শেষ হাদীসের বর্ণিত
তিনি অনেক শেখ এর সঙ্গে হাদীস রিওারাতে করেছেন তার মধ্যে পাচঁ জন আছেন যিনারা বিখ্যাত
1-কুতায়রা বিন সাইদ বিন জামিল বিন তরিফ আস সাকাফি জন্ম গ্রহন 189 হিজরী তিনি ইমামের সাথে 601 হাদীস বর্ণিত করেন।
2-মুহাম্মাদ বিন বশশার বিন উসমান বিন দাওদ বিন কাইসালেন আবদি তিনার জন্ম গ্রহন 167 হিজরী মৃত্যু 252 হিজরি এবং তিনি ইমামের সাথে 422 হাদীস বর্ণিত করেছেন।
3-মহমুদ বিন গইলনে আল আদওী জন্ম গ্রহন মৃত্যু- 249 হিজরী এবং তিনি ইমামের সাথে 292 হাদীস বর্ণিত করেন।
4-হান্নাদ বিন সিররী বিন মুসআব বিন অবি বাকার বিন বাশার জন্ম গ্রহন 152 হিজরী এবং মৃত্যু 243 হিজরীতে,তিনি ইমামের সাথে 280 হাদীস বর্ণিত করেছেন।
5-আহমেদ বিন মানিই বিন আব্দুর রহমান। জন্ম গ্রহন 150 হিজরী এবং মৃত্যু 244 হিজরীতে। তিনি ইমামের সাথে 249 হাদীস বর্ণিত করেন।
তিনার ফিকাহ এর শেখগন
তিনার ফিকাহ এর মাধ্যমে অনেক শেখগন ছিলেন কিন্তু কিছু তার মধ্যে বিখ্যাত গুলি হল
1-ইমাম আনাস বিন মালিক
2- মুহাম্মাদ বিন ইদরীস আশশাফিয়া
3-ইমাম আহমেদ বিন হামবালি
4-ইমাম ইসহাক বিন রাহওাই
5- ইমাম সুফিয়ান সাওরী
6-ইমাম আব্দুল্লাহ বিন মুবারক
তিনার তাফসীরের শেখগন
ইমাম তিরমুজী তিনি বড়ো বড়ো আলেমদের কাছ থেকে তাফসীরের জ্ঞান অর্জন করেছেন তাদের মধ্যে
1-ইমাম জাইদ বিন আসলাম আদীই
2-ইমাম সাইদ বিন জুবের
3-ইমাম হাসান ইবনে আদি হাসান আল বাসরি
4-ইমাম আতা বিন আবি রাবাহ
তিনার বিখ্যাত ছাত্রগন
তিনার কাছ থেকে অনেক ছাত্র জ্ঞান অর্জন করেছেন এবং তাদের মধ্যে কিছু মেধাবি ছাত্র তিনারা হলেন
1-আবু বাকার আহমেদ বিন ইসমাইল বিন আমির সামারকান্দ
2-আবু হামিদ আহমেদ বিন আব্দুল্লাহ বিন দাওদ মারওজী
3-মাহমুদ বিন আমবার আন নাসাফি
4-মাহমুদ বিন মুনদীর আল হারওী