মণিপুরে সহিংসতা বৃদ্ধির কারণ
ভূমিকা:
মণিপুর উত্তর-পূর্ব ভারতের একটি পার্বত্য রাজ্য। আমরা স্পষ্টতই জানি যে মণিপুরে জাতিগত সহিংসতা চরমভাবে বাড়ছে। উপজাতি এবং উপজাতি এই সহিংসতার প্রধান বিষয়। এই ভয়ংকর সহিংসতায় বহু নারী ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং শত শত মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়। প্রকাশ্যে নগ্ন হয়েছিলেন দুই নারী। মণিপুর নিয়ে সব অভিযোগের পরও দেশ ও রাজ্যের শাসক ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) সরকারের কোনো পরিবর্তন হয়নি। প্রধানমন্ত্রী মোদি আন্তর্জাতিক দেশ সফর করেছেন, অন্যদিকে মণিপুর এখনও জ্বলছে। মণিপুরে ভারতকে হত্যা করেছে মোদি। ৪০দিন পর্যন্ত এই বিষয়ে কিছু বলেননি মোদি যখন দুই মহিলা মেইতেই যৌন ইতস্তত করছেন, তারপর মোদি লোকশাবায় ২ মিনিটের জন্য মুখ খুললেন। এর জন্য বিরোধী দলগুলো বেশি সমালোচনা করেছে। সুতরাং, এই নিবন্ধে আমি মণিপুরের ইতিহাস এবং এর ভূগোলও ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছি এবং সহিংসতা দ্রুত শুরু হচ্ছে এবং এর সমাধান।
মণিপুরের পটভূমি:
 মণিপুরের ভৌগোলিক বিভাগকে প্রধানত দুটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রধান স্থলভাগকে এর কেন্দ্রে ইম্ফল উপত্যকা বলা হয়। মণিপুর দেখতে ফুটবল মাঠের মতো। এটি মণিপুরের ১০% ভূমি জুড়ে রয়েছে। বাকিটা পাহাড়ি এলাকা। ইম্ফল উপত্যকা উন্নত এবং বাকি অংশ অনুন্নত। মণিপুরে  ৩৪টি উপজাতি আছে। তারা মূলত পরিচিত Kuki এবং Naga Tribes বলে। কিন্তু মণিপুরে সবচেয়ে বড় সম্প্রদায় মেইটিরাই। সেই রাজ্যের প্রায় ৬৪ শতাংশ বাসিন্দা মেইতিরা । তারা সেই রাজ্যের মাত্র ১০ শতাংশ এলাকায় বাস করে।
মেইতি সম্প্রদায় প্রধানত হিন্দু ধর্মের অন্তর্গত এবং ইম্ফল উপত্যকায় তাদের ৫৩% জনসংখ্যা রয়েছে। অর্থনৈতিকভাবে মেইতি উপজাতিরা ধনী, কুকি এবং নাগা উপজাতি পাহাড়ী এলাকায় বসবাস করে। তাদের জনসংখ্যা ৪০% এবং অর্থনৈতিকভাবে তারা দরিদ্র।
এই সহিংসতার সূচনা:
 মেইতিদের ওবিসি এবং অন্যরা সমাজে সংখ্যালঘু রয়েছে। এর পরে তারা তফসিলি উপজাতি (এসটি) পেতে চায় এটি তাদের পাহাড়ে জমিতে বসতে সক্ষম করে। তাই কুকি এবং নাগারা এটি নিয়ে প্রতিবাদ করে। মণিপুর বিধানসভায় মেইটির ক্ষমতা রয়েছে। মণিপুর বিধানসভায় মোট ৬০টি আসন এবং মেইতেই ৩৯টি আসন জিতেছে।
২০ এপ্রিল মণিপুর হাইকোর্টের বিচারক রাজ্য সরকারকে মেইতেইয়ের জন্য এসটি মর্যাদার অনুমতি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন .তাই কুকিরা ভয় পাচ্ছেন যে এটি মেইটিদের পাহাড়ি অঞ্চলে প্রবেশ করতে দেয়, তখন তাদের চেহারা ভেঙে যায়। কুকি অ্যাসোসিয়েশন (ATSUM) হাইকোর্টের বিরোধিতা করে এবং রডে মিছিল করে এবং এর নাম দেয় ৩ মে চুড়াচাঁদপুরে উপজাতীয় সংহতি মার্চ। এটি এই সহিংসতার সূচনা বিন্দু।৫০০ মানুষ বাস্তুচ্যুত, ১০০০
মেইতেই বিষ্ণুপুরে এই সহিংসতায় আক্রান্ত,কাংপোকপিতে কুড়িটি বাড়ি পুড়ে গেছে। 
এই ভাবে ‌‌‍‌‌‍‍‌‌‍‌ধীরে ‍ধীরে মানিপুরে সহিংসতা বৃদ্ধি পায় 
মেইটির এবং কুকিদের মধ্যে দাঙ্গা শুরু হয়। যার ফলে  মানিপুর এখন আগুনে পুড়ছে। 
মেইতিদের ST-দাবী:  এসটি দাবী দ্বারা মেইতিরা পাহাড়ি এলাকার জমি ক্রয় করতে পারে। তার জন্য নাকা এবং কুকি আদিবাসীরা ভয় করছে যে তারা যদি আমাদের সমস্ত জমি কিনে নেয়। তাহলে আমরা কোথায় যাব। তার জন্য তারা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করতে আরম্ভ করছে।কিন্তু মেইতি আদিবাসীদের দাবি যে, তারা শুধু এর দাবি করছে তাদের সংস্কার এবং অস্তিত্ব বজায় রাখার জন্য। এসটির দাবী তারা ২০১৩ সাল থেকে করে আসছে যদিও এই দাবির বিরোধিতা অনেক আদিবাসী জনজাতির লোকজন করছে। কিন্তু মিথিরা বলে আমরা শিক্ষা বা কাজের জন্য নয় নিজের জমির পরিচিতি এবং সংস্কার  কে রক্ষা করার জন্য এই দাবি করছি।মায়ানমার থেকে যে সমস্ত অনুপ্রবেশকারীরা এসেছে তাদের হাত থেকে রক্ষা পেতে চাই মেইতি আদিবাসীরা।
তার জন্য এই উপজাতিরা নিজেদের মধ্যে লড়াই করে চলেছে। এই হিংসতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। কিন্তু তার সত্বেও মোদি সরকার এই ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। তিনি বিদেশ সফর করছেন কিন্তু তার দেশের কি হচ্ছে সেটার দিকে তিনি একবারও তাকিয়ে দেখেন না। মোদি ভারতকে মণিপুরে মেরে ফেলে দিচ্ছে এরকম দাবি অনেক বিরোধীদলরা করছে।
আমরা ভারতবাসী হয়ে আমাদের কর্তব্য আমরা মণিপুরের মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে সাহায্য করি। কিভাবে আমরা সাহায্য করতে পারি, আমাদেরকে দরকার আমরা মণিপুরের ব্যাপারে যত সমস্ত খবর আছে বেশি বেশি করে লিখে মোদি সরকারকে জাগরত করে তুলতে হবে। যাতে তারা মনিপুরের অবস্থাকে শুকল্যাণ করে তোলেন।

Related Posts

Leave A Comment

Voting Poll

Get Newsletter