লকডাউনে অনলাইন ক্লাসের বিকল্প আশিনা গ্রামীণ গ্রন্থাগার

একাদশ শ্রেণীতে পড়ে। ইংরেজিতে উচ্চ শিক্ষা করে সে শহুরে অফিসে চাকরি করবে এমন তার আশা। কিন্তু তা সম্ভব হয় কী করে? সে প্রস্তুতি নিতে পারছেনা শহুরে শিক্ষার্থীদের মত। কারণ লকডাওন যথা তার বাবার কাজ বন্ধ। এমন আর্থিক অসহযোগের দু্ঃসময়ে প্রাইভেট টিউশন নেওয়া কষ্টকর বইকি।
   কথাগুলো আশিনা গ্রামের নবসান তুস্তু চরণ হাই স্কুলের পড়ুয়া সঞ্জিনা খাতুন সম্পর্কে। গ্রামটি কলকাতা থেকে প্রায় 50 কিলোমিটার দূরে। গ্রামে সঞ্জিনার মত আরোও কতক শিক্ষার্থীর অবস্থা একই। আসলে যাদের কাছে অনলাইন, কম্পিউটার এবং মোবাইল দুর্লভ পাত্র, কথাগুলো তাদের সবার। যাদের শিক্ষা-দীক্ষা শুধু বই পুস্তকের ওপর নির্ভরশীল কথাগুলো তাদেরই। 
   তাদের বাবা-মা সচেতন ছিলেন যে শহরের শিক্ষার্থীরা অনলাইনে টিউশন এবং ক্লাস নিয়ে এগিয়ে চলেছে। আবিষ্কার হল অনলাইনের বিকল্প গ্রামীণ গ্রন্থাগার। নাম হল আশিনা গ্রামীণ লাইব্রেরী।
   এই গ্রামীণ গ্রন্থাগারের ধারণা সর্বপ্রথম কারিগর রাজ্জাক শেখ দেন। তারপর গ্রামের প্রবাসী কারিগররা গড়ে তোলেন গ্রামীণ গ্রন্থাগার যেখানে সঞ্জিনা এবং তার মতো পড়ুয়ারা শিক্ষার চাহিদা পূরণ করে। 
   প্রথমে শুধু দরকার হয় স্বেচ্ছাসেবক সদস্যের যারা একটি উন্মুক্ত কামরার ব্যাবস্থা করে, কিছু সময় ব্যয় করে তা পরিচালনা করবে। রাজ্জাক আগে হায়দ্রাবাদে কাজ করতো। তার মাধম্যে এই চাহিদা পূরণ হল। কারণ সে একটি সেচ্ছাসেবক সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিল। রাজ্জাক বলে যে তারা রশানের পরিবর্তে সংস্থার কাছে পাঠ পুস্তকের চাহিদা রাখলো। 
   এই সপ্তাহে সাঞ্জিনা একটি বাংলা বই এনে পড়ছে। "আমাদের এখন সরবরাহের সীমিত ব্যবস্থা বলে আমরা কেবল মাত্র তিন দিনের জন্য বই ধার নিতে দিই।" দ্বাদশ শ্রেণীর এক সেচ্ছাসেবী ছাত্রী রাহিলা খাতুন বলে। 

কলেজ ছাত্র এবং উচ্চ শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা

   আসিনা গ্রামীণ গ্রন্থাগারে সাপ্তাহিক দুদিন বিজ্ঞান পরান জাহির আব্বাস শেখ। তিনি বলেন, "আমি আগে স্কুল বাচ্চাদের টিউশন পড়াতাম। লকডাউনের ফলে তারা ফিস বহনে সক্ষম নয়। তাই বসে বসে তো ছাত্রদের বর্বাদি দেখতে পারিনা...।"
 এই শেখের মত বাকী শিক্ষকরাও মাস্ক পরে, স্যানিটাইজার ব্যাবহার করে এবং লকডাউনের নীয়ম মেনে সেখানে ছাত্রদের পড়ান। 
    যৌথ ব্লক ডেভলপমেন্ট অফিসার দীন ইসলাম আশিনা গ্রামের প্রচেস্টার  প্রশংসা করেন, “আমি তাদের প্রয়োজনীয়তার জন্য একটি প্রস্তাব প্রস্তুত করতে বলেছি এবং আমি এটি অনুমোদনের জন্য প্রেরণ করব। আমি যা কিছু করতে পারি তাতে সহায়তা করব।"
  লাইব্রেরিটি এখন গরীব পড়ুয়াদের আশা। প্রতিবেশী গ্রাম থেকেও বাচ্চারা বইয়ের জন্য আসে। এখন 200 বেশি মেম্বার আছে সেখানে শিক্ষার চাহিদা মেটায়।

Related Posts

Leave A Comment

3 Comments

Voting Poll

Get Newsletter