মুম্বাই স্লামের এই মেয়েটি র্যাপ মিউজিকে ঢেউ তুলেছে
হিপ পপ সঙ্গীত একটি পুরুষ আধিপত্য ক্ষেত্র। কিন্তু, শুধুমাত্র আত্মবিশ্বাস নিয়ে একজন হিজাব পড়া মেয়ে উপস্থিত হয়।
মুম্বাই স্লামের এই মেয়েটি এখন র্যাপ মিউজিকে ঢেউ মাতিয়েছে। সানিয়া কাইমুদ্দিন মিস্ত্রি (সানিয়া এমকিউ)-এর প্রতিটি র্যাপ গান রাজনীতি, লিঙ্গ, সামাজিক পক্ষপাত, দুর্নীতি এবং দারিদ্রকে ঘিরে। একদিকে তার মা খাবার তৈরি করছে বা অবিরাম বৃষ্টিতে ঘর ভিজে যাচ্ছে, সানিয়া গেয়েই যায়। সানিয়ার বাড়িতে ১৩ বছরের একটি ভাইও আছে। এই ১৬ বছর বয়সী খুব দ্রুত ভারতীয় হিপ হপ সঙ্গীতে তার চিহ্ন তৈরি করে ফেলেছে।
র্যাপ সংগীত যারুরি নাহি ছিল এই মেয়ের সঙ্গীত জীবনের টার্নিং পয়েন্ট। যারুরি নাহি গানটি ভক্তদের র্যাপ সঙ্গীতে নারী কণ্ঠের অপ্রয়োজনীয় সম্ভাবনাও দেখিয়েছে। সারা ভারতে যারুরীর ভক্ত দেখা যায়। র্যাপ মিউজিক বেশিরভাগই পুরুষ অধ্যাসিত। কিন্তু সানিয়া ঐতিহ্যগত পরম্পরা ভেঙে ভারতীয় হিপ-হপ দৃশ্যে একজন মহিলা র্যাপার হয়ে উঠেছেন। তাঁর দ্রুত গান রচনা এবং তা উপস্থাপনের ক্ষমতা মানুষকে আকর্ষণ করেছে। তাঁর আত্মবিশ্বাস, ভঙ্গি এবং বয়সের পূর্বে এই মানের পরিপক্কতা সানিয়াকে জনপ্রিয় করে তুলেছে। যারুরি নাহির সফলতার সঙ্গে এই মেয়েটি ভবিষ্যতের আরও স্বপ্ন দেখতে শুরু করে।
১৩ বছর বয়সে সানিয়া তাঁর ডায়েরিতে গানের টুকরো লেখা শুরু করে। এর সাথে, সে এমন বিষয়গুলি সম্পর্কেও লেখে যা তাকে ব্যক্তিগতভাবে প্রভাবিত করেছিল। তার বয়স যখন পাঁচ বছর তখন তার পরিবার মুম্বাইয়ের গোভান্ডিতে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। প্রথমে কেউ তাদের সেখানে থাকতে দেয়নি। সানিয়া আরও বলে যে শৈশবে তাকে অনেক একাকীত্ব অনুভব করতে হয়েছিল। এই পরিস্থিতি তার মধ্যে শিল্পী ইন্ধন তৈরি করে। এবং এখন যারা তাকে ছেড়েছিল তারা আজ বন্ধু।
স্কুলে পড়ার সময় সানিয়া র্যাপ মিউজিকের প্রতি মুগ্ধ হয়েছিল। কিন্তু তার বন্ধুরা তাকে বলে যে এটা তার জন্য নয়। সেই বন্ধুদের একজন সবসময় একই কথা বলে। তার বন্ধু বলে, সে ঠিকমতো পোশাকও পরতে পারত না।
সানিয়া প্রাথমিক পর্যায়ে গান লেখার সময় সঠিকভাবে শব্দ ব্যবহার করতে জানত না। ২০১৬ সাল থেকে, ইউটিউবে র্যাপ আপলোড করে আসছে
কোভিডের সময় লকডাউন চলাকালীন, গোভান্দিতে অনেক মেয়ে বাবা-মায়ের চাপে বিয়ে করতে বাধ্য হয়। এমন বিয়ে সানিয়ার মনকে নাড়া দেয়। একটি এনজিও গোভান্দিতে বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করলে সানিয়া তাতে গান গায়। এটা তার প্রথম অভিজ্ঞতা। মেয়ে গান গাইছে শুনে তার মাও শ্রোতাদের মধ্যে বসলেন। গান গেয়ে মঞ্চ থেকে বের হলে তার মা এসে তাকে জড়িয়ে ধরেন। এটাই ছিল সানিয়ার গানে প্রথম সাধুবাদ। ২০২২ সালে, সানিয়া হুনারবাস নামে একটি টেলিভিশন শোতেও অংশ নিয়েছিল। সমর্থনের জন্য বাবা উপস্থিত ছিলেন। এই অবসর সানিয়াকে জনপ্রিয় করে তোলে। সানিয়ার স্বপ্ন লেখক হওয়ার আর র্যাপ মিউজিককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। সানিয়াও এমন একটি সময়ের স্বপ্ন দেখে যখন সে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হবে। সানিয়ার বাবা একজন অটো চালক।
সানিয়া শুটিংয়ের জন্য বাইরে গেলে বস্তির বড়রা বিরোধিতা করে। তখন তার মা প্রতিরক্ষা করে বলেন: সে যা করছে তা আমি ভালো করেই জানি। এতে কেউ হস্তক্ষেপ করবে না।
 
  
             
            
                     
            
                     
            
                                             
            
                                             
            
                                             
            
                                             
            
                                             
            
                                             
            
             
            
             
            
             
            
            