কোরোনার কারণে শিক্ষার গতি বিচ্যুত
আমি এক গ্রামীণ যুবক; পেশায় হোস্টেল ছাত্র। গত দু'বছর থেকে বার বার একবার বাড়ি, একবার হোস্টেল করে আসছি। লকডাউন টাইট ঠাঁই বাড়ি; লোকডাউন লুজ ব্যাগ বই নিয়ে ক্যাম্পাসে। তবুও তো আমি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে ক্লাস পেয়েছি; কখনও অনলাইন আবার কখনও সোজাসুজি শিক্ষক সম্মুখীনে চৌহদ্দের মধ্যে।
কিন্তু দেশের হাজার হাজার শিক্ষার্থীর দশা কী? - আমিই নিজে বার বার ভাবি। মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিকের মত ক্যারিয়ার পর্যায়ে উপনীত ছাত্র বা কোটার মত শিক্ষার সাগরে প্রসিদ্ধ স্থানে প্রস্তুতির ছাত্রদের নিয়ে চিন্তা নেয়। তাদের নিয়ে তো সবসময় নিউজ হেডলাইন প্রকাশ হচ্ছে। প্রশ্ন ওই গ্রামীন বাচ্চাদের নিয়ে যেখানে তাদের প্রাথমিক শিক্ষার প্রতি কারও প্রভাবশালী পদক্ষেপ নেয়।
শেফালীর ব্যাবস্থা আছে, সে অনলাইন ক্লাস করে, কিন্তু শোয়েবের নেয়। শাহিদ মাদ্রাসায় হাফেজি পড়তো, এখন সে পাগ পাওয়ার স্বপ্নও দেখেনা। ক্লাস ফাইভে পড়া ফাহিমের মা তাকে লুকিয়ে লুকিয়ে রাজমিস্ত্রির কাজে পাঠাচ্ছে, তার বাবার খাদানী কাজ এখন বন্ধ।
কোরোনা ভাইরাস ছুঁয়েছে ভাইরাস। পরস্পরকে চেন করে চীনের উহান শহর পেরিয়ে বিশ্বের চতুর্দিকে। ভারত তো শত নিয়ন্ত্রণের পরেও কোরোনার প্রহার থেকে মুক্ত নয়। ভাইরাস আক্রান্ত এক গোষ্ঠী; অন্যদিকে সাধারণ, শ্রমিক, ছাত্র, প্রত্যেক পরিবার সদস্য প্রভাবিত। তাছাড়া, পরস্পরে এই সহযোগিতা না করলে দেশ সম্বল হবে কি ভাবে?
আচ্ছা, পরস্পরের সহযোগিতা? তাই বলে শিক্ষার সঙ্গে কোনরকম আপস বা সমঝোতা চলবে না। বিশেষ করে যারা প্রাথমিক বিষয়ের শিক্ষার্থী তাদের শিক্ষার গতি বিচ্যুত হয়ে গেলে ভবিষ্যতে দেশ নিরক্ষরতার ভাইরাসে আক্রান্ত হবে, যার জ্ঞান ভ্যাকসিন কোনো দিন আবিষ্কার করা সম্ভব নয়। ফলতঃ তাদের শিক্ষা অব্যাহত রাখতে হবে।
এবার প্রশ্ন হল - ব্যাবস্থা টা কী? সামাজিক সংলাপ দূরে রেখে কী ভাবে তাদের শিক্ষা আরম্ভ করা যায়? সর্বপ্রথম সরকারী সতর্কবাণী অভিভাবকদের শিক্ষা সচেতনতা নিয়ে হওয়া আবশ্যিক। দ্বিতীয়ত, তাদের সচেতনতার কর্ম প্রণয়ন। যেহেতু, মাতাপিতাই প্রাথমিক স্কুল। ভবিষ্যতে এই বাচ্চারাই যখন অ্যাকাডেমিক স্কুলে আসবে, তখন যাতে তারা স্কুল কী জিনিস ভুলে না যায়।