সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, মূল্যহীন জীবন এবং সময়ের অপচয়
মার্কিন রাষ্ট্রের একজন বিশিষ্ট সংগীত অধ্যায়নকারী ট্যাড্ গাওয়া (Ted Gioia ) বর্তমান মার্কিন সংষ্কৃতি নিয়ে এক প্রবন্ধে উল্লেখ করেন; আগে এক সময় ছিল যখন শিল্পীরা তাদের শিল্পে এমন সুন্দর নিখার সৃষ্টি করতেন তা থেকে দর্শক শুধু মনরঞ্জন না বরং দৈনিক জীবন যাপনের জন্য সঠিক প্রেরণা, ও শিক্ষা পেতেন। কিন্তু বর্তমান যুগে শিল্পী ও তারকারা শুধু মাত্র সেই সব ধরণের নাটক, কবিতা, গল্প, ড্রামা, সিনেমা, এবং সামাজিক কার্যক্রম উপহার দেন যা কিছু দর্শক ও পাঠক চান, এক কথায় এখন মানুষ আঙুলের এক ক্লিকে সন্তোষজনক বিষয় বস্তু পেয়ে যায় যেমন টি তার রুচি ও স্বার্থ চায়। রাত দিনের পরিবর্তনশীল গতিবিধির কারণে মানুষের চাওয়া পাওয়া সমাজ, সভ্যতার সীমা অতিক্রম করে গেছে, যেমন এক সময়ের সংগীতে অনুপ্রেরণা পাওয়া যেত কিন্তু এখন নারীবিদ্বেষী সংগীত, স্বাধীনতার নামে নগ্নতা, আর সময়ের অপচয় কী ভাবে করা যায় তা দেখা যায়।
যেমন চকচকে,ঝকঝকে সোশ্যাল মিডিয়া এক দিকে মানুষের জীবন যাপন অনেক সহজ করে দিয়েছে অন্য দিকে ঠিক তেমন কঠোর আর অন্ধকার করে তুলছে। এখন নিজের হাতের মুঠোয় গোটা বিশ্ব, নৃত, সিনেমা, ঢাক ঢোল বাজনা, সংগীত, ভাষণ, ওয়াজ, মাফিল, ব্যবসা, বাণিজ্য, যানবহন, প্রতিদিনের খবর ইত্যাদি, শুধু মাত্র এক ক্লিকে গণ মাধ্যম আপনার চোখের সামনে এনে হাজির করবে। দা আইরিশ টাইম অনুযায়ী ২০১০ সাল থেকে সোশ্যাল মিডীয়ার ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং ২০১৬ থেকে তড়িৎ বিদ্যুতের ন্যায় মানুষের সুখের সঙ্গী হয়ে উঠেছ , ইনস্টাগ্রাম আর টিক টক আবিষ্কারের পরে মানুষের মধ্যে সময়ের অপচয় বৃদ্ধি পেয়েছে. টিক টক স্থাপক ঝাং ইয়ং একটি প্রেস কনফারেন্সে বলেন যে তিনি এটি বানিয়েছিলেন শুধু সমাজে যেসব বেকার এবং অস্তির ব্যক্তিরা মানসিক বেদনা, যন্ত্রনা এবং চিন্তাভাবনায় দীর্ঘদিন থেকে ভুগছেন তাদের জন্য, তিনি বলেন কিন্তু আমি কল্পনা করতে পারিনি, বিশ্বে অগণিত বেকার, সময়ের মূল্য না দেওয়া মানুষ বসবাস করছে, তার সর্বোচ অংশ উপমহাদেশে ভারত, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের বাসিন্দা ।
মনোবিজ্ঞান অনুযায়ী মানুষের ব্রেন দুই প্রকারের শক্তি (হরমন) ধরন করে, ডোপামিন এবং ডিটক্স, ডোপামিন মানুষের ব্রেনে অলসতা, আনন্দ, এবং কোনো কাজ থেকে উপার্জিত মজা প্রসার করে, ডিটক্স তার বিপরীতে কাজ করে। সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার অধিক পরিমান করার জন্য ডোপামিন প্রচুর পরিমানে অতিবাহিত হয়, যার জন্য মানুষের শরীর অনেক মজা ও আনন্দ পায়, এমন ভাবে ১৫ সেকেন্ডের এক এক টি ভিডিও আমরা স্ক্রল করতে থাকি আর আনন্দ উপভোগ করতে থাকি। অন্য দিকে অতিবাহিত হয় জীবনের মূল্যবান সম্পদ "সময়"। ধীরে ধীরে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার, টিকটিক ডোপামিনের সাহায্যে প্রতিটি মানুষের জীবনে উন্নতির রাস্তায় বাধা সৃষ্টি করছে, আমরা জানা সত্ত্বেও তা থেকে নিজেদের দমন করতে পারছি না। কিন্তু কখনো সোশ্যাল মিডিয়াতে সময়ের উপচায়ের জন্য টেকনোলজিকে দোষী সাবস্ত করা মোটে উচিত না।
যদি ও প্রযুক্তি প্লাটফর্ম গুলি মেডিসিয়া ঘর, বা আব্দুল্লা বিন আওফ (রাদিয়াল্লাহু আনহু), খালিদ বিন ওলীদ , তারিক বিন জিয়াদ, খাদিজা বিনত খুওইল’ র মতো ধনী বাক্তিত সৃষ্টি করতে চায় না, তারা এমন এক পৃথিবী বানাতে ইচ্ছুক যেখানে বসবাস করবে জীবিত অবস্থার মৃত লাশ, সব ১৫ সেকেন্ড ভিডিও স্ক্রলিং, জুয়া, অশীল রচনা, ভিডিও গেমিং, অনলাইন ডেটিং, ইমেইল চেককিং, ইত্যাদিতে নেশা গ্রহস্থ হবে, আর তারা হবে ঐ নেশার সরবরাহকারী। ডোপামিন দ্বারা অতি সহজে মানুষকে নিজের আয়ত্তে আনার প্রচলন বেড়ে চলেছে, এমনকি এখন সংবাদ পত্রকারিতা দায়িত্ব ভুলে, ব্যবসা বাণিজ্যে পরিনিত হয়েছে, সপক্ষ করার দাবিতে তারা ও প্রতিটি খবরের শেষে "ক্লিক" অপসন দিয়ে খবর সাইট এ আসক্ত রাখছে।
সোশ্যাল মিডিয়া ডোপামিন দ্বারা আমাদের এমন এক চত্রু-বন্দী করে রেখেছে, যেখানে সময় অপচয় অত্যান্ত দরকারী মনে হয়, সোশ্যাল মিডিয়ার স্ক্রলিং স্বল্প সময়ের তৃপ্তির অনুভব ও অনুভূতিকে দীর্ঘ অদ্ভুত সুখের দিকে ঠেলে দেয়, অস্থির সুখের প্রতারণায় মানুষ ফেঁসে যায় নেশার চাকায়, কিন্তু তা থেকে সত্যি রূপে কোনো তৃপ্তি পাওয়া যায় না। বরং দুশ্চিন্তা, দুঃখ কষ্ট জীবনে ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে, এমন ভাবে একজন সুস্থ সবল মানুষ জীবিত লাশে পরিনিত হয়।
মনোরোগ বিশেষজ্ঞ আনা লেম্বকে (Anna Lembke) মতামত অনুযায়ী ডোপামিন অত্যাধিক পরিমানে বৃদ্ধি পেলে ছোট ছোট বিষয় থেকে আনন্দ অনুভূতি গ্রহণ করা বিপদজনক হয়ে ওঠে। আরাম ও আনন্দের সীমা বোধ থাকে না, ঠিক তখন মনোরঞ্জন অনুভব করার জন্যে ব্রেন সীমাহীন মোবাইল স্ক্রলিং, মাদক পান, পর্নোগ্রাফি ইত্যাদি যাবতীয় জিনিস ব্যবহার করে। ব্রেনে সময়ের অপচয়, অনর্থক বস্তুতে মগ্ন হবার সংকেত পাওয়া সত্ত্বেও অদ্ভুত সুখে মেতে থাকে। থিবাউট মিউরিসে ( Thibaut Meurisse) এর বই (Dopamine Detox : A Short Guide to Remove Distractions and Get Your Brain to Do Hard Things) অনুযায়ী ডোপামিন একটি ব্রেন ক্যামিক্যাল যা আমাদের মেজাজ, প্রেরণা এবং ইচ্ছাশক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করে, যেমন ঘন্টার পর পর ঘন্টা মোবাইল স্ক্রলিং, অনলাইন ডেটিং, ফ্লার্টিং, এবং অবাঞ্চিত জিনিসে লেগে থাকে অথবা দীর্ঘ সময় ধরে বই পড়া, শরীর চর্চা করা, এবং দরকারি বস্তুতে লেগে থাকা। সব কিছু ডোপানির প্রতি নির্ভরশীল। এক বাক্য কোনো ফলাফলের কারণে কোনো জিনিস বার বার করার কারণ ডোপামিন। উদহারণ সরূপ; আমাদের ব্রেনে অনেক কর্মী কাজ করেন তাদের প্রধান হলো ডোপামিন, মানব দেহের কোনো কর্মে যখন ডোপামিন মজা পায় তখন অন্য কর্মীদের ওই কর্মের প্রতি উৎসাহিত করতে থাকে, দীর্ঘ সময় ধরে এমন মজা ও মনোরঞ্জন গ্রহণ করার পর ডোপামিন আরো উগ্র পন্থী হয়ে ওঠে, তেমন পরিস্থিতিতে বরংবর ওই কর্মে লিপ্ত থাকে, আর যখন মানব দেহ কেলান্ত হয়ে অলস হয়ে পরে ডোপামিন তখন নিস্তব্ধ হয়ে যায়।
প্রফেসর (Paul Phillips) পল ফিলিপ্স (ইউনিভার্সিটি অফ ক্যারোলিনা ) কিছু ইঁদুরের মাথায় ইলেক্টোরাল দ্বারা ডোপামিনের পরীক্ষা করেন, দীর্ঘ সময় ধরে ইঁদুরগুলি লাফালাফি, ঝাপাঝাপি করে, অত্যাধিক ডোপামিন অতিবাহিতর কারণে পুরুষ ইঁদুর স্ত্রী ইঁদুরের দিকে আকর্ষণ করে, এক সময় তারা খুব কেলান্ত হয়ে পড়ে, তাদের সামনে সুস্বাদু খাবার থাকা সত্ত্বেও সেদিকে কোনো খেয়াল ছিল না কারো, কারো লিভার, ব্লিডিং হচ্ছিলো কিন্তু ডোপামিনের সামনে সব কিছু তুচ্ছ। মানুষের ব্রেন ঠিক ইঁদুরের মতো, দরকার ছারা ডোপামিন অতিবাহিত স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক আর স্বাস্থ হলো সব থেকে বড়ো নিয়ামত, স্বাস্থ না থাকলে কিছু নেয়।
সচরাচর একজন ব্যক্তি দিনে ২৬০০ বার মোবাইল ফোন স্পর্শ করে, হার্ভার্ড উনিভার্সিটির গবেষণা অনুযায়ী এক জন সাধারণ বেক্তি দিনে সাত ঘন্টা ফোন ব্যবহার করে , 70% মানুষজন মোবাইল ফোন ছাড়া এক মিনিট ও থাকতে পারে না। ভোরের ঘুম থেকে রাতের দীর্ঘ সময়ের নিদ্রা পর্যন্ত মোবাইল স্ক্রলিং তাদের প্রধান কর্ম। ওঁতেহেপ নিঃস্বন্দেহে এমন ঘোষণা করা যায় এটি অন্য অন্য নেশার মতো একটি নেশাপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
জীব জন্তুর শরীর সর্বদা ডোপামিন প্যাটার্ন অনুসরণ করে থাকে ডোপামিন এমন নিউরোট্রান্সমিটার যা ব্রেনে উৎপন্ন হয়, ডোপামিন এসথাইল চেনে দুটো টক্সিন গ্রুপ আর একটি আই এন গ্রুপ দিয়ে তৈরি হয় (HO-HO,... NH2), যেকোনো নিউরো ট্রান্সমিটারের কাজ হল ব্রেনের এক দিক থেকে অন্য দিক পর্যন্ত সংকেত পৌঁছানো, যেমন অক্সিটোসিন প্রেম ও বন্ধন এর সময় প্রবাহিত হওয়া হরমোন, সেরোটেনিন মেজাজ কে প্রচালনা করে, দীর্ঘ সময় পর্যন্ত মনোবিজ্ঞানীরা একটি বিশ্বাস করতে যে ডোপামিন শুধুমাত্র মনোরঞ্জন ও আরামদায়ক একটি শক্তি যা মানুষের ব্রেনে উৎপন্ন হয়, কিন্তু বর্তমান মনোবিজ্ঞানীদের গবেষণা অনুযায়ীএন্ডোরফিন আসল কারণ মানুষকে খুশি রাখা এবং উৎফুল্ল রাখার পেছনে, ডোপামিনের প্রধান কর্ম হল মানুষের শরীরে ব্রেনের দ্বারা প্রেরণা ও পুরস্কার সঞ্চয় করা । উদহারণ স্বরূপ ছোট একটি ছেলে প্রতিদিন তার বাবার অপেক্ষা করে, যখন বাবা আসেন তার জন্য চকলেট নিয়ে আসেন। লক্ষ করার বিষয় হচ্ছে ছেলেটি প্রথম প্রথম বাবা বাড়িতে আসলে, তার হাতে চকলেট টি দিলে, সেটি পেয়ে সে তৃপ্তি পেতো, এখন তেমন না, বাবার ফেরার কথা সোনা মাত্র এখন সে আনন্দিত হয় কেননা তার ডোপামিন জানে যে বাবা আসা মানে পুরুষ্কার গ্রহণ করা। উপরে লিখিত উদাহরণর মতো আমাদের ব্রেন মোবাইল স্ক্রলিং, জুয়া, ধুমপান এবং অপ্রয়োজনীয় কর্মে কান্ডে তৃপ্তি পায়, কেননা আমরা আমাদের ব্রেনকে বেশির ভাগ সময় ওই সমস্ত কাজে লিপ্ত রাখি। যার জন্য ডোপানি ব্রেনকে ওই সমস্ত কর্মের পরে পুরুস্কৃত করতে অভ্যাস্ত।
সমাপ্তি
আল্লাহ তালার অসংখ নিয়ামতের মধ্যে একটি বিশেষ নিয়ামত সময়। মানুষের জন্ম থেকে তার সময় গোনা শুরু হয়, পুরো দিনের কাজ কর্মে ঘড়ির কাটা চলতেই থেকে, উঠতে বসতে দেখতে ইত্যাদি, আল্লাহ সুবহানু বাতলা পবিত্র কোরান শরীফে সময়ের বিষয় অনেক বার তাকিদ করেছেন। যেমন সূরা আল-আসর আল্লাহ যমানার প্রতিজ্ঞা করে সময়ের মূল্য বুঝছেন। মানুষের জন্য কিছুই নেই আছে শুদু বরবাদী,ধ্বংস, যত টুকু সময় আপনার হাতে আছে তা সম্পূর্ণ ভাবে কাজে লাগান।
وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ ۚ وَمَا تُقَدِّمُوا لِأَنفُسِكُم مِّنْ خَيْرٍ تَجِدُوهُ عِندَ اللَّهِ ۗ إِنَّ اللَّهَ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ (البقرة-110)
তোমরা নামায প্রতিষ্ঠা কর এবং যাকাত দাও। তোমরা নিজের জন্যে পূর্বে যে সৎকর্ম প্রেরণ করবে, তা আল্লাহর কাছে পাবে। তোমরা যা কিছু কর, নিশ্চয় আল্লাহ তা প্রত্যক্ষ করেন। মহান আল্লাহ উপরোক্ত আয়াতে সৎ কাজের আদেশ দিচ্ছেন এবং ভালো কর্মের প্রতি উৎসাহিত করছেন।
نِعْمَتَانِ مَغْبُونٌ فِيهِمَا كَثِيرٌ مِنَ النَّاسِ، الصِّحَّةُ وَالْفَرَاغُ
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ এমন দু’টি নিয়ামত আছে, যে দু’টোতে অধিকাংশ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। তা হচ্ছে, সুস্থতা আর অবসর। (বুখারী শরীফ )
আবুল্লাহ হোসাইন আর-রাকি (মৃত্যু ১০৪৫ হিজরী) বলেন "যখন তোমাদের কারো নাফ্স পানি পান করার জন্য আবদার করে, তখন তাকে কিছুক্ষন অপেক্ষা করতে দেওয়া, পানী পান করতে ক্ষতি আছে এ জন্য নয় বরং নাফ্স কিছু আবদার করা মাত্র তা পেয়ে যাওয়ার অভ্যাসে আসক্ত না হয়ে যায়"। ইব্ন কয়্যূম আল- জওজি এর কিতাব "আল-রূহ" এর মধ্যে উল্লেখিত ইসলামী মনোবিজ্ঞান অনুযায়ী মানুষের শরীরের প্রধান অংশ "কল্ব" অর্থাৎ মানুষের মন, যেখানে উপস্থাপন করে "নাফ্স", মূলত নাফ্স দুই ভাগে বিভক্ত নাফ্স আম্মারা বিস্সু, আধুনিক ভাষায় ডোপামিন বলা হয়, এবং নাফ্স আল-মুতমাইন্নাহ অর্থাৎ ডেটক্স। নাফ্স আম্মারা মানুষকে খারাপ কর্মে উৎসাহিত করে, বার বার নাফসি প্রতারণা এবং অস্বস দিয়ে ঘিরে রাখে, অন্য দিকে নাফ্স মুতমাইন্না সৎ কাজের উপদেশ দেয়, ধীরে ধীরে জীবন যাপনের মূল উদ্দেশ্যের মধ্যে দিয়ে আমাদের আসল প্রভু আল্লাহ মহান পর্যন্ত পৌঁছে দেয়।
ঈমাম গজ্জালী (রহঃ) কিতাব মিনহাজুল আবেদীন উল্লেখ করেন; একজন মানুষ হিসাবে সর্বপ্রথম জ্ঞান উপার্জন করা অত্যন্ত আবশ্যক তারপরে মারিফাত ইলাহী এবং নাৎসি প্রতারণা ও চালাকি থেকে নিজেকে দূরে রাখা তিনি একটি উদাহরণ দিয়ে আরও ভালো করে বুঝান নফস ইবলিশ শয়তানের থেকেও বেশি নিকৃষ্ট কেননা কোন ব্যক্তির নিজস্ব সম্পত্তি যদি অন্য কোন ব্যক্তি চুরি করে তাহলে তার উপরে শাস্তি এবং দন্ড দেওয়া খুব সহজ ব্যাপার কিন্তু ওই ব্যক্তির ধন-সম্পত্তি যদি এমন একজন কেউ চুরি করে যে ব্যক্তি তার অত্যন্ত আপন মানুষ তাহলে তার পক্ষে তাকে শাস্তি দেওয়া এবং তিরস্কারিত করা সম্ভব হবে না. নাফ্স আমাদের ভিতরে দুশমন যার বিরুদ্ধে লড়াই করে আমরা নিজেদেরকে ভালো কাজের সঙ্গে সংযুক্ত রাখতে পারবো এবং আল্লাহর দেওয়া নির্দেশের উপরে চলতে পারবো অতএব নফসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা সবথেকে বড় জিহাদ.
একজন মুসলিম হিসাবে আমাদের কর্তব্য কোরান ও সুন্নাহর উপরে কঠোর ভাবে আমল করা, তাই সময়ের অপচয় থেকে নিজেদেরকে বাঁচানো, অযথা মোবাইল, টি ভি, ভিডিও গেমিং, এবং অন্য অবৈধ ও অপরিহার্য আসবাব পাত্র থেকে দূরে থাকা।