দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গী
সে চলার সঙ্গী ছাড়া আমি এক পা-ও চলতে পারতাম না, আমি যা-কিছু ভাবতাম যে একাই করবো, কিন্তু
আমি তাকে ছাড়া করতে পারতাম না, সম্ভবই হতো না। একদিন আমি আমার সঙ্গী ছাড়াই আনমোনা
হয়ে খেলতে শুরু করলাম, আমার একটা খেলনা নিয়ে। কিন্তু সেদিন ছিল মেঘাচ্ছন্ন দিন বৃষ্টির দিন।
আমি খেলার প্রতি এতোটাই মেতেমগ্ন ছিলাম যে আমার বন্ধুকে একেবারেই ভুলে গেলাম। তারপর মা
যখন ডাকলেন খাবার খেতে তখনও আমার বন্ধুকে এরিয়ে চললাম, বন্ধুকে না দেখে আমি স্নান
করলাম, খাবার খেলাম, একটু বিছানাতে ঘুমালাম, তারপর ঘুম থেকে উঠে একটু পড়তে বসলাম, একটু
মায়ের সঙ্গের আড্ডা করলাম, তারপর মা বললেন এবার ঘুমাও তখন ঘুমিয়ে পরলাম, কিন্তু তখনও
আমার বন্ধুর দিকে আমি দেখলাম না। তারপর ঘুম ভেঙেই দেখি আমার সবথেকে কাছের বন্ধু, যেখানে
থাকার কথা মা তাকে সরিয়ে ফেলেছেন, আমি স্কুলের জন্য রওনা হবো কিন্তু আমি তো আমার বন্ধু
ছাড়া এক পা-ও চলতে পারি না, কিন্তু এখন চলবো কী করে। মাকে বললাম আমার সমস্যার কথা। মা
তখন আমার সমস্যাটা মিটিয়ে দিয়ে বললেন এবার বেরিয়ে পরো। তোমার সমায় হয়ে গেছে আর দেরি
করা চলবে না। তখন আমি বেরিয়ে পরলাম স্কুলের উদ্দেশে।
স্কুলে পৌঁছলাম সারাদিন আর বন্ধুর কথা মনেই পড়লো না, সারাদিন কেটে গেল পড়াশোনার মধ্য দিয়ে।
কিন্তু যখন বাড়ি এলাম আবার সেই বন্ধুকে ভীষনভাবে মিস করতে লাগলাম। এবার সন্ধ্যা বেলায়
টিউশন। টিউশন যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হলাম, মা নেই ঘরে। আমি আর আমার সেই বন্ধু ঘরে আছি। মা
থাকলে আমার সমস্যাটা মাই দূর করতেন কিন্তু নেই বলে আমাকে বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতেই হলো।
যে বন্ধু ছাড়া আমি কেন, গোটা বিশ্বের মানুষের এই বন্ধুকে দরকার হবে, একদিন আমি যখন
মেঘাচ্ছন্ন দিনে বাড়িতে ছিলাম সেদিন আমার কোনো দরকার হয়নি বন্ধুর। কারণ সেদিন আমি বাইরে
বেরইনি। আমার এই বন্ধু চলার সঙ্গী, জীবনের সঙ্গী জীবনের প্রতিটিমূহূতর সঙ্গী সেটা হলো “ঘড়ী”
যেটার নাম দিয়েছিলাম চলার সঙ্গী